• দেবযানী বণিককে বাঁচানো গেল না কেন?


    8    7812

    July 11, 2017

     

    আশির দশকের শুরুতে কলকাতা শহরে তিনটি বধূহত্যার ঘটনা আমাদের মতো নারী আন্দোলনের কর্মীদের ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছিল। দেবযানী বণিক, গৌরী ঘোষ ও রেখারানী সাধুখাঁ—অল্প সময়ের ব্যবধানে এই তিনজনের মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা উপলব্ধি করি পারিবারিক হিংসার প্রাবল্য  রুখতে একটি মঞ্চ গড়ে তোলা দরকার। ছোটো ছোটো নারী সংগঠনগুলোর একটি ফোরাম আমরা গড়ে তুলি যার নাম নারী নির্যাতন প্রতিরোধ মঞ্চ। সে সময়কার খবরের কাগজ ঘাঁটলে দেখা যাবে মঞ্চ, অন্যান্য কয়েকটি নারী সংগঠন ও কয়েকটি বাম রাজনৈতিক দলের মহিলা ফ্রন্টের নেত্রীরা নিয়মিত এই বধূহত্যার ঘটনাগুলোয় প্রতিবাদ-সভা করতেন, মামলা চলাকালীন কোর্টে হাজির থাকতেন এবং দ্রুত তদন্ত ও বিচার নিয়ে সরব হতেন।

    আজ ৩৫ বছর পর পারিবারিক নির্যাতন ও হত্যা/আত্মহত্যার যে ঘটনাগুলোর কথা জানতে পারা যাচ্ছে, সেগুলো মাথায় রেখে ওই তিনটি বধূহত্যার ঘটনা প্রসঙ্গে তুলতে চাইছি দু-একটি জরুরি প্রশ্ন। প্রথম পর্বে দেবযানী বণিক হত্যা মামলাটি ফিরে দেখবো এবং দ্বিতীয় পর্বে লিখবো গৌরী ঘোষ ও রেখারানী সাধুখাঁকে নিয়ে।

    দেবযানী বণিক হত্যামামলা 

    ১৯৮৩ সালের ২৮শে জানুয়ারি ২২ বছরের দেবযানী বণিককে তার স্বামী চন্দন বণিক এবং শ্বশুর চন্দ্রনাথ বণিক পিটিয়ে মেরে ফেলে। কোর্টের রেকর্ড অনুযায়ী পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও ঘটনাস্থলের কাছাকাছি উপস্থিত ছিল। কিন্তু কেউ বাধা দেয় নি। ঘটনাটি ঘটে গড়িয়াহাট মোড়ের খুব কাছে বণিক বাড়িতে।

    দেবযানী বণিক ছিল বর্ধমানের বিশিষ্ট ধনী ব্যবসায়ী ধনপতি দত্ত-এর মেয়ে। ১৯৭৫ সালে (যা ঘোষিত আন্তর্জাতিক নারীবর্ষ) মাত্র ১৪ বছর বয়সে দেবযানীকে বিয়ে দেওয়া হয় কলকাতার চন্দন বণিকের সঙ্গে। দেবযানী তখন ক্লাস নাইনের ছাত্রী। বণিক পরিবারও ছিল বেশ ধনী। তাদের অনেক রকম ব্যবসা ছিল।

    দেবযানীকে যখন মেরে ফেলা হয় তখন সে তিন সন্তানের মা। দেবযানীর দুই ছেলে তখন খুবই ছোট ও মেয়ে মাত্র কয়েক মাসের।

    বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই দেবযানীর ওপর অত্যাচার শুরু হয়। অত্যাচার বাড়তে থাকে দুটি দাবিকে কেন্দ্র করে। প্রথমত, চন্দ্রনাথ বণিক তার এক মেয়ের সাথে ধনপতি দত্ত-এর বড়ছেলের বিয়ের প্রস্তাব দেয়। দ্বিতীয়ত, চন্দ্রনাথ বণিক বর্ধমানে ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে একটা কোল্ডস্টোরেজ তৈরি করার পর ওই ব্যাঙ্ক ঋণের পরিমাণ সুদসমেত জমে দাঁড়ায় ৬৮ লক্ষ টাকা। চন্দ্রনাথ তখন কোল্ডস্টোরেজের ২৫ শতাংশ শেয়ার কেনার জন্য দেবযানীর বাবা ধনপতি দত্তকে দেবযানীর মাধ্যমে চাপ দিতে থাকে। কিন্তু দেবযানীর বাবা দুটি প্রস্তাবই নাকচ করে দেওয়ায় দেবযানীর ওপর মারধর বাড়তে থেকে।

    কোর্টের রেকর্ড একথাও বলছে যে বণিক পরিবারে দেবযানীর জীবন কোনোদিনই সুখের ছিল না। পরিবারের সদস্যরা দেবযানীর সাথে দুর্ব্যবহার করতো, খারাপ চরিত্রের মেয়ে বলে দোষারোপ করতো আর ওর স্বামী ওকে নিয়মিত পেটাত।

    ঘটনার দিন ১৯৮৩-এর ২৮ শে জানুয়ারি সকালবেলা ওর স্বামী  ওকে প্রচণ্ড মারে। পুলিশ ও সরকারি আইনজীবীর মতে এরপর দেবযানীর স্বামী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ওকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। সেদিনই বিকেল চারটে নাগাদ  পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে স্বামী ও শ্বশুর দেবযানীকে পিটিয়ে মেরে ফেলার পর ওরই শাড়ি গলায় জড়িয়ে ফ্যানের সাথে ওর দেহ ঝুলিয়ে দেয়। এরপর পরিবারের সব পুরুষরা  বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।  

    যতদূর মনে আছে, গড়িয়াহাট থানায় নাম না জানিয়ে একজন ফোন করে খবর দেয় বণিক বাড়িতে একটা ডেডবডি লুকিয়ে রাখা আছে। পুলিশ প্রথমবার গিয়ে ফিরে আসে। বাড়ির মহিলারা পুলিশের সাথে কোনোরকম সহযোগিতা করে নি। দ্বিতীয়বার পুলিশ বাড়ি সার্চ করে বিছানায় পাতা গদির তলা থেকে দেবযানীর মৃতদেহ উদ্ধার করে।

    প্রথমে আলিপুর সেসন কোর্টের এডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জজের ঘরে এই মামলাটির [S.T.No 4(5) 1983] বিচার হয়। বিচার শেষে বিচারক দেবযানীর স্বামী চন্দন বণিক, শ্বশুর চন্দ্রনাথ বণিক, ও ওই পরিবারের আরও কয়েকজন নারী ও পুরুষ সদস্যকে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত করেন। স্বামী ও শ্বশুরের জন্য মৃত্যুদন্ড এবং অন্য তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করা হয়।

    মামলাটি এরপর কলকাতা হাইকোর্টে ওঠে এবং চন্দন বণিক ও চন্দ্রনাথ বণিকের মৃত্যুদণ্ড হাই কোর্ট বহাল রাখে। সুপ্রীমকোর্ট অবশ্য শেষ পর্যন্ত চন্দন বণিক ও চন্দ্রনাথ বণিককে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেয়।  প্রসিকিউসন চন্দন বণিক ও চন্দ্রনাথ বণিকের মধ্যে কার অপরাধ বেশি/কম তা ভাগ করেনি। সেই কারণে দুজনেরই মৃত্যদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়াটা সুপ্রীমকোর্ট সমীচীন বলে মনে করে।

    এই মামলায় অপরাধ প্রমাণ করার জন্য প্রসিকিউসন  প্রধানত নির্ভর করেছে দেবযানীর বাবা ধনপতি দত্ত-এর সাক্ষী ওপর, মা ও বৌদিকে লেখা দেবযানীর তিনটি চিঠির ওপর যেগুলোতে অত্যাচারের কথা ছিল, বণিক পরিবারের দুজন গৃহশ্রমিকের সাক্ষী এবং ডাক্তারের সাক্ষীর ওপর।  

    দেবযানী হত্যার ঘটনায় কলকাতা শহরের বেশ কিছু নারী সংগঠন বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। প্রগতিশীল মহিলা সমিতির সদস্যরা মামলার শুনানির সময় নিয়মিত কোর্টে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাত। প্রতিটি শুনানির দিনে কোর্টচত্বরে বিক্ষুব্ধ মানুষের ভিড় সামলে অভিযুক্তদের কোর্টরুমে তুলতে পুলিশ হিমশিম খেয়ে যেত। কোর্টের যে ঘরে শুনানি চলতো সেখানে তিলধারণের জায়গা থাকতো  না।

    সংবাদপত্র খুব সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল। প্রতিদিন প্রথম পাতায় মামলাটির পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ থাকত। সবচেয়ে সাহসী ভূমিকা নিয়েছিল বণিক পরিবারে কর্মরত দুজন গৃহশ্রমিক। গড়িয়াহাট থানার অফিসার-ইন-চার্জ এই দুজন সাক্ষীর বিশেষ সুরক্ষার ব্যাবস্থা করেছিলেন।

    কোর্টের রায় যেদিন ঘোষণা করা হয় সেদিন নারী নির্যাতন প্রতিরোধ মঞ্চ-এর অনেক সদস্য আলিপুর জেলগেটের সামনে জড়ো হয়ে অনেক স্লোগান দিয়েছিলাম মনে আছে।  বিক্ষোভের ভয়ে পুলিশ বা প্রশাসন অভিযুক্তদের কোর্টে আনার ঝুঁকি নেয় নি। জেলের মধ্যে কোর্ট বসিয়ে অভিযুক্তদের রায় শোনানো হয়।

    দেবযানী বণিক হত্যার ঘটনা সমাজে নানাভাবে ছাপ ফেলেছিল। বণিক বাড়ির বউ  নামে একটি যাত্রা মঞ্চস্থ হয়। বর্ধমানে একটা সুপার মার্কেটের নাম দেওয়া হয়েছে দেবযানী মার্কেট  । তবে যা কিছু হয়েছে সবই দেবযানী মারা যাবার পর।

     দেবযানীদের মরতে হয় কেন?

    দেবযানী কিন্তু বাঁচতে চেয়েছিলো! দেবযানীকে কেন বাঁচানো গেল না? কেনই বা দেবযানীকে ১৪ বছর বয়সে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল? এগুলো নিয়ে আমাদের ভাবা দরকার।

    দেবযানীকে হঠাৎ রাগের বশে খুন করা হয়নি। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তার ওপর অত্যাচার শুরু হয়। কিন্তু মাত্র চোদ্দ বছর বয়সে বিয়ে হয়ে শ্বশুরবাড়ি-আসা কিশোরী দেবযানীর পক্ষে এইরকম এক অর্থলোভী পরিবারের সাথে একা লড়াই করা সম্ভব ছিল না। দেবযানী বার বার তার বাপের বাড়িতে এই লাগাতার অত্যাচারের কথা জানানো সত্ত্বেও তাকে বাপের বাড়িতে ফিরিয়ে আনবার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল বলে আমাদের জানা নেই।

    ১৯৮২ সালে দুর্গাপুজোর কিছুদিন আগে দেবযানী তার বাপের বাড়িতে  এসে তার বাবাকে জানায় যে তিনি যদি চন্দ্রনাথের প্রস্তাবে সায় না দেন, তাহলে দেবযানীকে আর বর্ধমানে আসতে দেওয়া হবে না। বস্তুত সেই ছিল দেবযানীর শেষবারের মত বর্ধমান যাওয়া।

    খবরের কাগজের রিপোর্ট অনুযায়ী যেদিন তাকে খুন করা হয় সেদিন সকাল আটটায় দেবযানী তার বাবাকে ফোন করে অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে বলে, ‘আপনি যদি কোল্ডস্টোরেজের শেয়ার কেনার প্রস্তাব না মানেন তবে ভাই দেবদাসকে বলবেন সে যেন অবিলম্বে আমাকে বর্ধমানে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।’ সেই সময় চন্দ্রনাথ দেবযানীর কাছ থেকে ফোন কেড়ে নেয়। ফোনে দেবদাস চন্দ্রনাথকে জানায় যে সেদিনই সন্ধের মধ্যে সে কলকাতায় আসছে।

    ওই দিন বিকেল ৪টে নাগাদ দেবযানীকে চন্দ্রনাথ ও চন্দন বণিক পিটিয়ে মেরে ফেলে। তারপর চন্দ্রনাথ ৪টা ৪০ মিনিট নাগাদ বর্ধমানে টেলিফোন করে জানায় কারো কলকাতায় আসার দরকার নেই, পরেরদিন সে নিজেই বর্ধমানে দেবদাসের সাথে তাদের পেট্রোল পাম্পে দেখা করবে। দেবযানী সিনেমায় গেছে, একথাও জানানো হয় তার বাপের বাড়িতে।  

    এভাবে মিথ্যে কথা বলে দেবযানীকে যারা হত্যা করেছে তাদের অপরাধের বিচার কিছুটা হয়েছে কোর্টে।  কিন্তু যে প্রশ্নটা নিয়ে আমরা সচরাচর ভাবি না সেটা হলো দেবযানীর বাবা বর্ধমান শহরের প্রথম সারির ধনী বাক্তিদের মধ্যে একজন হওয়া সত্ত্বেও কেন দেবযানী নিজের মা/বাবার পরিবারে ফিরে যেতে পারলো না? মারা যাওয়ার আগে মা ও বউদিকে অত্যাচারের কথা জানিয়ে দেবযানী একাধিকবার চিঠি লিখেছিল। তবুও কেন তাকে শ্বশুরবাড়িতে মুখ বুজে পড়ে থাকতে হলো?

    এটাও সম্ভব যে দেবযানী নিজে ছেলেমেয়েদের কথা ভেবে হয়তো স্বামীর ঘর ছাড়তে চায় নি; ভেবেছিল যে ছেলেমেয়েরা বড় হলে সব ঠিক হয়ে যাবে। যখন দেবযানী বুঝতে পারে যে এই পরিবার তাকে মেরে ফেলবে তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে! ১৪ বছরে বিয়ে-হয়ে-যাওয়া দেবযানী খুন হয়েছে ২২ বছরে। তিনটি দুধের শিশু তাদের মাকে হারিয়েছে। বাচ্চাগুলো তাদের এই অপূরণীয় ক্ষতি কীভাবে মোকাবিলা করেছিল তা আমাদের জানা নেই। মায়ের মৃত্যু ও মৃত্যু-পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ তাদের শিশুমনের ওপর কী প্রভাব ফেলেছিল তা সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক গবেষণার বিষয়। 

    দেবযানী বণিক ও মিতা দাস

    দেবযানী হত্যার প্রায় তেত্রিশ বছর পর গত বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালে মিতা দাসের মৃত্যু আবার নতুন করে মনে পড়ালো দেবযানীর কথা।                             

    বিয়ের মাত্র ছ'মাসের মধ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী মিতা দাসের মৃত্যু হয়। মিতার মৃত্যুর পর তার বাপের বাড়ির লোকজন তার শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে মিতাকে হত্যার অভিযোগ আনে। এই মুহূর্তে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। মিতাকে হত্যা করা হয়েছিল কিনা, তার বিচার আদালতে হবে। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মিতার বাপের বাড়ির লোকজন জানিয়েছেন, যে মিতা মারা যাওয়ার আগে একাধিকবার তার ওপর হয়ে-চলা অত্যাচারের কথা তাঁদেরকে জানিয়েছিল। মিতাকে যে তার স্বামী প্রায়শই মদ খেয়ে মারধোর করে, মিতার পরিবার সেই খবর জানতেন। কিন্তু কেউই মিতাকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেননি। ফলে মিতাও হয়তো ভেবে নিয়েছিলেন, এই অত্যাচারই তাঁর ভবিতব্য। মিতার বৌদির কথায়, ‘আমি মাঝেমধ্যে বলতাম, আমরা তোর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে কথা বলব৷ ও বলত, দেখি না, যদি ঠিক হয়ে যায়৷’ কিন্তু ঠিক আর হয় নি।

    দেবযানী ও মিতা জতুগৃহ ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারে নি কেন? দুজনের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা দু’রকম ছিল—দেবযানী বড়লোকের মেয়ে ও মিতার বাপের বাড়ির অবস্থা সচ্ছল নয়। দেবযানী সাবালক হওয়ার আগেই তার বিয়ে হয়ে যায় ১৯৭৫ সালে আর মিতা নিজের চেষ্টায় কষ্ট করে পড়ার খরচ জোগাড় করে এম.এ. পাশ করে ২০১৬ সালে। তারপর তার বিয়ে হয়। এই ফারাকগুলো সত্ত্বেও একটা বড় মিল—দু’জনের কেউই মনে করেনি শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার সহ্য না করে বেরিয়ে আসা উচিত; তাদের বাপের বাড়ির লোকজনও  অন্যায় অত্যাচারের কবল থেকে তাদের বের করে আনার, নিজেদের বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়ার/পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি হয়তো দেন নি। এই দ্বিধা কেন ও কিসের? আসুন আমরা সবাই মিলে উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি।

    কৃতজ্ঞতা: আনন্দবাজার পত্রিকা লাইব্রেরি ও দেবযানী বণিকের বর্ধমানবাসী পরিবার।

     
     



    Tags
     



    Comments (8)
    • ঐ অপরাধী বণিক পরিবারের লোকজনের বর্তমান সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে কিছু জানা যায়না ?? ঐ খুনী চন্দন বণিক কি জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে ?? বাচ্চা গুলির কি হ’ল ??

    • মীরাদি লেখাটা খুব ভালো হয়েছে। তুমি অনেক কিছু মনে করে লিখেছোদেবযানী বণিক সম্পর্কে । এই ধরনের লেখা খুব দ্রকার।

    • মীরা দি, খুবই প্রয়োজনীয় লেখা। ধন্যবাদ। কিন্তু খেদের বিষয় হল, বাড়ির ভিতরকার নির্যাতন সমাজের এত গভীরে প্রোথিত যে এটা কোনমতেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। উলটে বিয়ের মধ্যে নির্যাতনের একটা সামাজিক মান্যতাও দেখা যায়। এই অত্যাচার বন্ধের ব্যাপারে মানবাধিকার আন্দোলনও তেমন ভূমিকা নেয় না, যেটা খুবই দুঃখের।

    • Onek dhonyobaad ei lekhatir jonyo. Aamra jara bortomaan projonmer naaribaadi bole nijeder porichoy di, taader jonyo bharoter naribadi andoloner ei shomosto itihashguli jana khubi gurutwopurno.
      Ei lekhar poriprekhhite ekta kotha aami bolte paari, onekta nijer obhigyota thekei bolte paari, “abuse” niye amader gobhirbhaabe chinta kora dorkaar. Abuse often works in a circular fashion, where it is actually impossible to step out of it, even identify it as abuse, when one is inside the circle. ei abuse er britto dingiye beriye ashte prochondo koshto korte hoy, jar jonnyo monostatwik shohayokra bishesh bhabe help korte paren ebong koren. Kintu ei lorai eka lora khubi tough. Ei duti case er khetre amader shobaike collective responsibility nite hobe, because it is an overall failure to acknowledge the kind of abuse that is actually a part of marriage as an institution itself. Amader naaribaadi andoloner onyotomo objective howa uchit better mental health infrastructure to deal with the day-to-day oppressions of patriarchy.
      Krantikari selaam.

    • শিক্ষার সাহস যোগানোর কথা নয়। কারণ সব স্তরের শিক্ষাই এটাই শেখায় যে বিয়ে রক্ষা কর। যদি বিয়ে রক্ষা করাটা ঠিক কাজ হয় তাহলে এটা মানতেই হবে যে ভালো কাজ যে কোনো মূল্যেই করা উচিত। সেটা প্রাণের মূল্য দিয়ে হলেও তাই। কারণ ভালো কাজের জন্য তো কত লোক শহীদও হয়। শিক্ষার কোন স্তরেই এটা প্রশ্ন তোলা হয় না যে বিয়েটা রাখা দরকার কেন? অথবা বিয়েটা করা দরকারই বা কেন? বা উলটো শিক্ষাটা কোথাও, শিক্ষার কোনো স্তরে দেওয়া হয় না যে ‘বিয়েতে থাকতে না চাইলে বিয়ে ভাঙ্গো।’ সুতরাং বিয়ে ভাঙ্গার শিক্ষা কেউ আলাদা করে পায় না।

    • স্বাতী, আমাদের মেয়েদের আসল শিক্ষা আমরা দিতে পারি না। মেয়েরা সন্তানের জন্য বাঁচে, পরিবারের জন্য বাঁচে- তাদের নিজের জন্য বাঁচতে শেখাই না। নিজের জীবনটা কতটা দামী, কতটা মূল্যবান তা তারা বোঝে না। মঞ্জুলাকে পরিবারের সদস্যরা বলেছিলেন সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে, কিন্তু মঞ্জুলা নিজের পরিবারকে socially ostracized করতে চায় নি, তাই সে বিয়ে থেকে বেরোতে চায় নি।
      ডিগ্রী হাতে থাকলে রোজগার করতে সুবিধা হয়, শুধু ডিগ্রী বাঁচার ইচ্ছে বা সাহস কোনটাই দিতে পারে না, সে যত মূল্যবান ডিগ্রীই হোক। আলোচনা চলুক।

    • Ekhane manasik r economic condition ta vison bhabe matter Kore,,debjani mentali strong chilo Na,,,arthik subidha thakleo sei somoy swamir ghor chara Vishal kotha,,,sob Chere berie aste pare ni.try koreche jdi think hoye jay,,, next mita das mentali strong kina bola have Na,,BT economical strong thakle,,,,mane Jodi selfdepent thakto tahole hoyto ekbar charar kotha vabto,,,adjust Na kre,,,

    • মিতা দাসের ঘটনায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা যতটা সোচ্চার হয়েছিল, নারী সংগঠনগুলিকে অতটা সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। হয়তো সে জন্য মিতার বিচারপর্বটিও প্রায় আড়ালে থেকে যাচ্ছে। কেন নারী সংগঠনগুলি ধর্ষণ নিয়ে যত সোচ্চার, পণ-নির্যাতন নিয়ে ততটা নয়, সে প্রশ্নটা মনে জাগে। যেমন প্রশ্ন ওঠে, দেবযানী নয় ছিল মাত্র বছর চোদ্দের বালিকা। কিন্তু যাদবপুরের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মিতা, বা আইআইটি-র ডক্টরেট মঞ্জুলা দেবক কেন বেরিয়ে আসতে পারে না? শিক্ষা কেন সাহস জোগায় না?

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>

     



    তথ্য নীতি | Privacy policy

 
Website © and ® by Ebong Alap / এবং আলাপ, 2013-24 | PRIVACY POLICY
Web design & development: Pixel Poetics