আমাদের সামাজিক শিক্ষা কি গার্হস্থ্য হিংসাকে প্রশ্রয় দেয়?
2 257
বউ-পোড়ানো ও মুম্বাই হাইকোর্ট-এর একটি রায়
সম্প্রতি অগ্নিদগ্ধ এক বধূমৃত্যুর ক্ষেত্রে মুম্বাই হাইকোর্ট-এর একটি রায়ের প্রতি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এই রায়ে অভিযুক্ত স্বামীর শাস্তি কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের পরিবর্তে দশ বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারকের মতে স্বামী শুধু বউকে পোড়াতে চেয়েছিলো, মারতে চায় নি। তাই তার শাস্তি কম!
ঘটনা কী ঘটেছিল দেখা যাক। ২০০৪ সালের ২৮শে নভেম্বর মহারাষ্ট্রের শোলাপুর জেলায় এক ব্যক্তি মত্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া-বিবাদ চলাকালীন তার গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পর স্বামী আগুনে জল ঢালে, তারপর স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে স্ত্রী মারা যায়। মৃত্যুকালীন জবানবন্দীতে স্বামী যে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল, এই কথা স্ত্রী জানিয়ে যায়। মৃত্যুকালীন জবানবন্দীর ভিত্তিতে থানায় এফ.আই.আর দায়ের হয়। বিচারপর্বের শেষে ২০১১ সালের ১৩ এপ্রিল দায়রা আদালতের বিচারক ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেন।
এরপর মুম্বাই হাইকোর্টে সাজাপ্রাপ্ত স্বামী দায়রা আদালতের রায় পুনর্বিচারের জন্য আবেদন করে এবং মুম্বাই হাইকোর্ট পুনর্বিচার করে অভিযুক্ত স্বামীর শাস্তি কমিয়ে দশ বছরের কারাদন্ডের রায় দেন। এই রায়টি বেরোয় ৩০ মার্চ ২০১৭। বিচারকের যুক্তি হল, খুব বেশি হলে বিচারপ্রার্থী স্ত্রীর গায়ে আগুন দিতে চেয়েছিল, তাকে মারতে চায় নি। কিন্তু পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যায় এবং মৃত্যু ঘটে (‘all that the appellant thought of was to inflict burns and not to kill her but unfortunately the situation slipped out of control and it went into fatal extent’)।
স্বাভাবিকভাবেই বিচারের বিবৃতি থেকে আশঙ্কা জাগে, স্ত্রীর গায়ে আগুন দেওয়ার মত ঘটনা হত্যার উদ্দেশ্যেই ঘটানো হয়েছে—এ বিষয়ে যদি বিচারব্যবস্থা নিশ্চিত না হয়, তাহলে দেশজুড়ে প্রতিদিন ঘটে চলা বধূনির্যাতনের ঘটনাগুলি আদৌ সুবিচার পাবে কি? আমরা দেখেছি, যারা নিয়মিত বউ পেটায় তারা সবসময় মেরে ফেলব বলে মারে না। মারতে মারতে মেরে ফেলে বা এমন আঘাত করে যে মরে যায়। পেটে এমন লাথি মারল যে গর্ভপাত হয়ে মরেই গেল, এমন গলা টিপে ধরল যে দমবন্ধ হয়ে মরে গেল, ভোজালি দিয়ে ঘাড়ে এমন কোপ মারল যে মরে গেল, রাগের মাথায় কেরোসিন তেলে ভিজিয়ে গায়ে এমন আগুন লাগিয়ে দিল যে মরে গেল! এমন অত্যাচার করে যে বউটির প্রতিদিনই মারা যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। রোজ তো আর কেউ মারা যায় না। কোনো একদিন মারা যায়। সুতরাং বউ পোড়ানোর মত ভয়ংকর ঘটনাকে অনিচ্ছাকৃত হত্যা হিসেবে দেখা হলে গার্হস্থ হিংসাকে এক প্রকার স্বীকৃতি দেওয়া হয়, দোষী অল্পেতে ছাড়া পেয়ে যায় এবং মেয়েরা অত্যাচারীর সংসার ছেড়ে বেরোতে পারে না।
মহারাষ্ট্রের এই বউ-পোড়ানোর ঘটনাটি ও তার বিচার বিশ্লেষণের সূত্র ধরে পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতায় আশির দশকে দুই গৃহবধূর অগ্নিদগ্ধ পরিণতির কথা মনে করাতে চাইছি। গত পর্বে দেবযানী বণিক হত্যামামলা নিয়ে লিখেছিলাম। এই পর্বে দেবযানী বণিক হত্যার অব্যবহিত পরেই কলকাতা শহরে ঘটা আরও দুটি বধূহত্যার ঘটনার কথা আপনাদের সামনে তুলে ধরব।
গৌরি ঘোষ এবং রেখারানী সাধুখাঁ। দুজনেরই বাড়ি ছিল দক্ষিণ কলকাতার চেতলা অঞ্চলে। দুজনকেই তাদের শ্বশুরবাড়ির লোকেরা গায়ে আগুন লাগিয়ে হত্যা করেন। আগেই বলেছি এই দুটি ঘটনা সেই সময়ে ঘটে, যখন কলকাতা শহরে দেবযানী বণিকের হত্যার ঘটনায় শোরগোল পড়ে গেছে। প্রতিদিন সংবাদপত্রে সেই ঘটনা নিয়ে লেখালিখিও চলছে। তা সত্ত্বেও ধারাবাহিকভাবে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার গৌরি ও রেখারানীকে বাঁচানো যায়নি। আর্থসামাজিক অবস্থান পৃথক হওয়া সত্ত্বেও দুজনের পরিণতি একই হয়ে দাঁড়ায়।
গৌরি ঘোষের হত্যা ও এক সাক্ষীর লড়াই
গৌরী ঘোষের শ্বশুরবাড়ি চেতলা ব্রীজের খুব কাছে ছিল। গৌরী পেশাদার গ্রুপ থিয়েটারের সাথে যুক্ত ছিল, মোটামুটি ভালই রোজগার করত। শ্বশুরবাড়িতে তার উপর নিয়মিত অত্যাচার হত। গৌরী বুঝতে পেরেছিল তাকে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেরে ফেলবে। বাপের বাড়িতে আশ্রয়ের জন্যও গিয়েছিল কিন্তু ঠাঁই মেলেনি।
একদিন (দিনটা মনে নেই) শেষ রাতের দিকে গৌরীর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা গৌরীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। গৌরীর এক দেওর ওর প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল। সম্ভবত গৌরীর চিৎকারে ওর ঘুম ভেঙে যায় এবং গৌরীকে ঐ অবস্থায় দেখে ওর দেওর ওকে বাঁচাতে গেলে সেও আগুনে পুড়ে যায়। তখন গৌরীর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা গৌরীকে একটা ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে শিকল তুলে দেয় আর ওর দেওরকে নিয়ে হাসপাতালে চলে যায়।
এরপর গৌরী সেই ঘরের পেছনের দরজার খিল খুলে বাইরে বেরিয়ে চেতলা ব্রীজের উপর উঠে আসে। একজন প্রাতঃভ্রমণকারী গৌরীর 'বাঁচাও,বাঁচাও' চিৎকার শুনে তাকিয়ে দেখেন একজন জ্বলন্ত মহিলা এগিয়ে আসছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে একটা ট্যাক্সি ডেকে গৌরীকে নিয়ে হাসপাতালের দিকে রওনা হন।
গৌরী হাসপাতালে যাওয়ার পথে ওই ভদ্রলোককে বলে, ‘আমি যতক্ষণে হাসপাতালে পৌঁছাব ততক্ষণ আমি বেঁচে থাকব কিনা জানি না, তাই আমার শ্বশুরবাড়ির লোক কীভাবে আমাকে আগুন লাগিয়ে মারতে চেয়েছে তা আপনাকে আমি বলে যাচ্ছি, আপনি সেটা পুলিশকে জানাবেন, হাসপাতালে জানাবেন।’ ঘটনা তাই ঘটে, হাসপাতালে পৌঁছে গৌরী আর কিছু বলতে পারেনি, সে জ্ঞান হারায়, কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়। ঐ ভদ্রলোকের বয়ানের উপর ভিত্তি করে পুলিশ এফআইআর লেখে। পুলিশ ঐ ভদ্রলোকের বয়ান বিশ্বাস করে কারণ নিউ আলিপুর থানায় গৌরীর করা একাধিক ডায়েরির সাথে ওনার কাছে দেওয়া গৌরীর বয়ান পুলিশের সঙ্গতিপূর্ণ মনে হয়। আমার যতদূর মনে আছে গৌরীর দেওরও কোর্টে সাক্ষী দিয়েছিল। এই মামলায় সম্ভবত বিচারক সব অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছিলেন।মামলা চলাকালীন ওই প্রাতঃভ্রমণকারী ভদ্রলোককে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। সাক্ষী না দেওয়ার জন্য তাঁকে ভয় দেখানো হয়, এমনকী প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁকে কোনোভাবে টলানো যায়নি। রবীন্দ্রনাথের সেই অসামান্য উক্তি 'মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ' এই ধরনের মানুষের মধ্যে দিয়ে মূর্ত হয়ে ওঠে। মীনাক্ষী সেন-এর ‘পুনর্জন্ম’ গল্পটি গৌরী এবং ওই ভদ্রলোককে নিয়ে লেখা।
রেখারানী সাধুখাঁর হত্যা ও অভিযুক্তের বেকসুর খালাসরেখারানী ডায়মন্ডহাবার ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে। বাবা ছিলেন গরীব কৃষক। রেখারানীর বিয়ে হয় চেতলা এলাকার শংকর বসু রোডে। রেখারানীর শ্বশুরবাড়ির পিছনে ৯,চেতলা বস্তি।
একদিন ভোরবেলা বস্তির মহিলারা দেখেন রেখারানীদের বাড়ির দোতলা থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। মহিলারা কি ঘটেছে জানার জন্য রেখারানীদের বাড়ি যায়। ওখানে গিয়ে তারা দেখে, একতলার ঘরে বসে পরিবারের সবাই চা খাচ্ছে, সেখানে রেখারানী নেই। তখন মহিলারা দোতলায় যান। দোতলার যে ঘর থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছিল সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় রেখারানী চিৎ হয়ে শুয়ে আছে।
বস্তির মহিলারা সঙ্গে সঙ্গে প্রগতিশীল মহিলা সমিতির সদস্যদের খবর দেন। এখানে বলা দরকার ঐ বস্তির মহিলাদের সাথে প্রগতিশীল মহিলা সমিতির নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। বেশ কিছু মহিলা প্রগতিশীল মহিলা সমিতির সদস্যও হয়েছিলেন।
আগেই বলেছি, এর কিছুদিন আগেই ঘটে গেছে দেবযানী বণিক হত্যার ঘটনা। প্রগতিশীল মহিলা সমিতির সদস্যরা নিউ আলিপুর থানায় খবর দেয়। পুলিশ বধূহত্যার মামলা শুরু করে এবং রেখারানীর শ্বশুরবাড়ির লোকদের গ্রেপ্তার করে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে প্রগতিশীল মহিলা সমিতি এবং অন্যান্য নারী সংগঠনের মহিলারা চেতলা এলাকায় মিছিল করেন।
নিজেদের উদ্যোগে বস্তির মহিলারা কোর্টে সাক্ষী দেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে বয়ান দেন।
বিক্ষোভের ভয়ে শংকর বসু রোডে রেখারানীর শ্বশুরের মুদির দোকান অনেকদিন বন্ধ ছিল।
প্রগতিশীল মহিলা সমিতির সদস্যরা জানিয়েছেন রেখারানীকে নিয়মিত মারধোর করত ওর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা যাতে তার বাবা জমি বিক্রি করে টাকা এনে দেয়। শেষে রেখারানীকে মেরে ফেলা হয় যাতে ওর স্বামী আবার বিয়ে করতে পারে।
কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে রেখারানীর বাবা এই মামলা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাননি ফলে কারা অপরাধী তা প্রমানিত হ্য়নি, কারোর শাস্তিও হয়নি।
কেন বাঁচানো গেল না গৌরি ও রেখারানীকে?গৌরী ঘোষ হত্যা মামলার রায় ঘোষণার কিছুদিন পর নিউ আলিপুর থানার অফিসার ইন-চার্জের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম অন্য কোনো কাজে। অফিসার কথা প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলেন, ‘গৌরী ঘোষ মামলার রায়ে আপনারা হ্যাপী তো?' আমরা উত্তর দিতে পারছিলাম না। শাস্তির ঘোষণা শুনে আমরা তো হ্যাপী হতে পারছি না কারণ গৌরীকে তো বাঁচানো গেলো না। তাছাড়া শাস্তির ঘোষণা শুনে তো আমরা খুশি হই না, আমরা আশ্বস্ত হই, এই ভেবে যে অভিযোগ আদালতে প্রমানিত হয়েছে।
উত্তর দিলাম, ‘গৌরীকে তো বাঁচানো গেল না!’
উনিও বিষন্ন হয়ে পড়লেন, তারপর বললেন, ‘জানেন, গৌরী মারা যাবার আগের আগের দিন আমার কাছে থানায় এসেছিল। ও বলেছিল ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। আমার একটা থাকার ব্যবস্থা করে দিন। আমি ওকে বাপের বাড়ি চলে যেতে বলেছিলাম। কোনো মহিলাকে তো থানায় শেল্টার দিতে পারি না। আমি বুঝতে পারিনি এত তাড়াতাড়ি গৌরীর আশঙ্কা সত্যি প্রমানিত হবে।’
গৌরী কলকাতায় গ্রুপ থিয়েটারে কাজ করত। থিয়েটার করে উপার্জনও করত। রেখারানীর সেভাবে কোনও জীবিকার খবর পাওয়া যায় না। আন্দাজ করা যায়, শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রেও হয়তো গৌরী কয়েক কদম এগিয়ে ছিল রেখারানীর থেকে। অথচ, দিনের পর দিন গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হওয়া সত্ত্বেও দুজনের কেউই নিজেদের শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারেনি। গৌরী মারা যাওয়ার আগে একাধিকবার থানায় ডায়রি করে থাকলেও রেখারানী সম্ভবত সেই সুযোগ পায়নি। তাহলে এই অমিলগুলো থাকা সত্ত্বেও কোথায় গৌরী ও রেখারানীর মৃত্যু মিলে যায় দেবযানীর সাথে? কেন পঁয়ত্রিশ বছর পরেও মিতা, পায়েল, নাজিয়াদের মৃত্যুর ঘটনার মধ্যে দিয়ে গৌরীদের স্মৃতি ফিরে ফিরে আসে? কেন শিক্ষাগত যোগ্যতা বা আর্থিক স্বাবলম্বন মেয়েদের শ্বশুরবাড়ির অত্যাচারের পরিবেশ ছেড়ে বেরিয়ে আসতে সাহস যোগায় না?
এইসকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার অথরিটি আমার নেই। আমি হয়তো জানিও না এর উত্তর কি হতে পারে। তবে বারংবার অত্যাচারের শিকার হওয়া সত্ত্বেও মেয়েরা যে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে না, বা আসতে পারে না, তার কারণ আমাদের সামাজিক কাঠামোর মধ্যেই লুকিয়ে আছে। অত্যাচারের কথা জানা সত্ত্বেও মেয়েটির নিজের বাবা-মার তাকে জায়গা না দেওয়া, সামাজিকভাবে বিভিন্ন তিরস্কারের মুখোমুখি হওয়া তাকেও ভাবতে বাধ্য করে, যে তাকে তার শ্বশুরবাড়িতেই থাকতে হবে। শ্বশুরবাড়িতেই মানিয়ে নিতে হবে। নিজের বাবা-মা যদি মেনে নাও নেয়, তাহলেও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে অন্য কোথাও নতুন করে জীবন শুরু করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। আশির দশকে আজকের মত মেয়েদের হোমের প্রতুলতা ছিল না। যদি থাকত, তাহলেও গৌরী শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে সেখানে থাকতে পারত কিনা সন্দেহ। ফলত, এইধরনের হোমের সংখ্যা আগামী দিনে যতই বাড়ুক, বা স্কুলে ছাত্রীদের ভর্তির হার যতই ঊর্ধ্বমুখী হোক, সামাজিকভাবে যদি গার্হস্থ্য হিংসার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার শিক্ষা মেয়েদের ছোট থেকে না দেওয়া যায়, তাহলে গৌরী, রাধারানীদের মৃত্যুর প্রতিবাদে শহরের বুকে মিছিলে মানুষের ঢল নামবে, কিন্তু ফিরিয়ে আনা যাবে না।
Tagsadolescence age of consent age of marriage caa child marriage corona and nursing covid19 Covid impacts on education domestic violence early marriage education during lockdown foremothers gender discrimination gender identity gender in school honour killing human rights intercommunity marriage interfaith marriage lockdown lockdown and economy lockdown and school education lockdown in india lockdown in school lockdown in schools love jihad marriage and legitimacy memoir of a nurse misogyny nrc nurse in bengal nursing nursing and gender discrimination nursing in bengal nursing in india online class online classes during lockdown online education right to choose partner school education during lockdown social taboo toxic masculinity transgender Women womens rights
Comments (2)
-
-
গার্হস্থ হিংসার মূলে রয়েছে লিঙ্গ প্রভেদ। সন্তান বড় করা থেকে বিয়ের প্রথা, সংসারের দায়িত্ব থেকে ধর্ম, সবের মধ্যেই রাখা আছে লিঙ্গ প্রভেদের সংস্কার এবং নিয়মাবলি। পুরুষকে শক্তিশালী হতে হবে, পরিবার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। স্ত্রীকে তো বটেই। সেই নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে স্ত্রী (এবং অন্যান্যদের) “শাসন” করার অধিকার সমাজ এখনও পুরুষেরই ওপর ন্যস্ত করে। অতএব রুটি গোল না হলে স্ত্রীকে লাথি মারার অধিকার স্বামীর আছে সেটা তো স্বাভাবিক ব্যাপার। এক্ষেত্রে একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে – স্ত্রী মারা গেছে। যে পরিবার আর একটু উচ্চবিত্তের তারা লাথি হয়ত মারবে না, কিন্তু গালাগাল দেবে। গোল রুটি বেলতে পারে না বলে স্ত্রীকে হেয় করবে। সমাজে সংস্কার, বিশ্বাস, এবং প্রথার খোলনলচে না পাল্টালে পারিবারিক নির্যাতন বন্ধ করা যায় না।
Leave a Reply
-
দাঁত চেপা,চোয়াল শক্ত হয়ে আসা,এসব বহু চেনা।অনেক হল।এই লেখা ভাবাচ্ছে,লেখাপড়া,চাকরী,নাটক,রোজগার,সব হবার পরও—-এত বড় গলদটা থেকেই যাচ্ছে কোন্ শক্তিতে??
আর কতগুলো বলিদান? সময় আর কবে নিদান দেবে???