29-03-2024 10:35:51 am
Link: http://ebongalap.org/khobore-gender-6
গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ : গৃহবন্দী হাদিয়ার মুক্তির দাবিতে #FreeHadiya ক্যাম্পেন
গত ৩১ আগস্ট দিল্লীর যন্তরমন্তরে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, নারী আন্দোলন ও এলজিবিটি অধিকার রক্ষা আন্দোলন এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলি একজোট হয়েছিল হাদিয়ার মুক্তির দাবিতে। নাগরিকের গণতান্ত্রিক রক্ষার পক্ষে সমস্বরে দাবি উঠেছিল রাস্তায় এবং সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে #FreeHadiya প্রচারের মাধ্যমে। প্রতিবাদ কর্মসূচীর শেষে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির কাছে আয়োজক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে হাদিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ডেপুটেশন জমা দেওয়া হয়।
গত মাসে সুপ্রীম কোর্টের তিন তালাক, গোপনীয়তার অধিকার সংক্রান্ত মামলার রায় দেশজুড়ে যথেষ্ট ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করলেও ভারতীয় বিচারব্যবস্থার নিগড়ে এখনও যে পারিবারিক সামন্তবাদী ধ্যানধারণার অবশেষ রয়ে গেছে, তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল এইসকল রায় ঘোষণার এক সপ্তাহ আগেই। গত ১৬ আগস্ট সুপ্রীম কোর্ট ২৪ বছরের হাদিয়ার বিবাহসংক্রান্ত মামলার রায় ঘোষণার সময় পূর্ববর্তী কেরালা হাই কোর্টের রায়কে সমর্থন করে এনআইএ-কে (ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিভ এজেন্সি) হাদিয়ার ধর্মান্তকরণের ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয়। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই দেশজুড়ে গণতান্ত্রিক মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের একজন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের অধিকার সুনিশ্চিত করার বদলে সুপ্রীম কোর্টের এই রায় হিন্দুত্ববাদী শক্তিগুলির ‘লাভ জিহাদ’ নামে যে প্রচার, তার প্রতিই সমর্থন জানিয়েছে। শুধু তাই নয়, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করার অধিকার তার বাবার—এই জাতীয় সামন্ততান্ত্রিক রায় ভারতীয় বিচারব্যবস্থাকে কয়েকশো বছর পিছিয়ে নিয়ে গেছে, শুধুমাত্র তিন তালাকের রায় দিয়ে সেই মুখরক্ষা সম্ভব নয়।
গত বছর হাদিয়ার বাবা কেরালা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার পর থেকেই হাদিয়ার উপর বিচারব্যবস্থার প্রহসন শুরু হয়। গত বছর ১৭ আগস্ট হাইকোর্ট পুলিশকে হাদিয়ার উপর নজরদারির নির্দেশ দেয়। ২২ আগস্ট হাইকোর্ট হাদিয়াকে তার বাবা-মার কাছে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। হাদিয়া সেই পরামর্শে সম্মত না হওয়ায় হাইকোর্ট তাকে মহিলা হস্টেলে পাঠিয়ে দেয়। এইভাবে হাদিয়ার একের পর এক গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করা হতে থাকে।
ঘটনায় উল্লেখযোগ্য মোড় আসে ১৯শে ডিসেম্বর ২০১৬ এ, যখন হাদিয়া শাফিন জাহানকে বিয়ে করেন। এর দুদিন পরই কোর্ট হাদিয়ার মতামত ছাড়া হস্টেলে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
এইভাবে গত এক বছর ধরে হাদিয়া গৃহবন্দী হয়ে রয়েছেন। ফোন, ইন্টারনেট, পরিচিত বন্ধুবান্ধবের সাথে দেখা—সবই বন্ধ। শুধু তাই নয়, বাড়ির সামনে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ, যাদের নজরদারি এড়িয়ে হাদিয়ার পক্ষে কোথাও যাওয়া বা কারোর সাথে দেখা করা অসম্ভব।
বিচারব্যবস্থার দায়িত্ব মানুষের মৌলিক অধিকার সুনিশ্চিত করার বদলে বিচারব্যবস্থা যেভাবে একজন নাগরিকের সমস্ত স্বাধীনতা একের পর এক হরণ করে চলেছে, তাতে দেশের গণতন্ত্র ক্রমশ বিপদসীমার দিকে এগোচ্ছে।
দেশের প্রথম মহিলা নাগা পাইলট রোবয়নাই প্যুমাই
নাগা জনজাতি থেকে প্রথম মহিলা অসামরিক পাইলট হলেন রোবয়নাই প্যুমাই। মণিপুরের সেনাপতি জেলার মেয়ে রোবয়নাই অস্ট্রেলিয়ার বেসিয়ার এভিয়েশন কলেজ থেকে বিমানচালনার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই পুরুষশাসিত নাগা সমাজের ক্ষেত্রে এ এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা।
গত বছর নাগরিক প্রশাসনের পদে ৩৩ শতাংশ মহিলা সংরক্ষণের প্রতিবাদে বড় আন্দোলন হয়েছিল। মানুষ তাতে প্রাণও হারান। যদিও মহিলা সংরক্ষণের পক্ষে নাগাল্যান্ড মাদার্স অ্যাসোসিয়েশন মামলা দায়ের করেছে, যা এখনও সুপ্রীম কোর্টের বিচারাধীন। এরই মধ্যে রোবয়নাই প্যুমাইয়ের ঘটনা নাগা প্রজাতির নারী আন্দোলনের কর্মীদের কাছে এক আনন্দের খবর।
Link: http://ebongalap.org/khobore-gender-6