রুটি, গোলাপ ও আরও কিছু দাবি : ১৯৮৬-২০০৩
0 174
১৯৮৬
১. মুসলিম নারী (বিবাহ বিচ্ছেদ সম্পর্কিত অধিকার রক্ষা) বিল বাতিল কর।
২. আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলুন।
৩. বেকার সমস্যার সমাধান করতে হবে।
৪. আবাসন সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান করতে হবে।
৫. স্বাস্থ্যের অধিকারকে মৌলিক অধিকার বলে স্বীকৃতি দিতে হবে।
৬. পণপ্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলুন।
৭. বধূহত্যা বন্ধ হোক।
৮. পণপ্রথা, বধূহত্যা, খোরপোষ, ধর্ষণসংক্রান্ত সমস্ত মামলার অবিলম্বে নিষ্পত্তি করতে হবে।
৯. জেল নয়, নিরপরাধ বন্দিনীদের সুষ্ঠু পুনর্বাসন দিতে হবে।
১০. দেশজোড়া গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উপর দমনপীড়ন অবিলম্বে বন্ধ হোক।
১১. অন্ধ্রের রিজিওনাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রী সুজাতার উপর নির্যাতনকারী দোষী পুলিশদের শাস্তি চাই।
(নারী নির্যাতন প্রতিরোধ মঞ্চের পক্ষ থেকে প্রকাশিত)
১৯৯০
১. মেহনতী নারীদের নিরাপদ ও সম্মানযোগ্য বাসস্থানের অধিকার
২. চাষের জমি, বাস্তুজমি ও গৃহে পুরুষ ও নারীর যৌথ মালিকানা
৩. বিধবা ও স্বামীপরিত্যক্তাদের গৃহ ও জমির মালিকানা
৪. নিরপরাধ বন্দিনী ও গণিকাদের সুষ্ঠু পুনর্বাসন
(নারী নির্যাতন প্রতিরোধ মঞ্চ, পশ্চিমবঙ্গ মহিলা সমিতি, ফোকাস, ভারতীয় মহিলা ফেডারেশন, যৌথ মহিলা উদ্যোগ এবং বাসস্থান অধিকারের জন্য জাতীয় প্রচারাভিযান, পশ্চিমবঙ্গ আঞ্চলিক কেন্দ্রের পক্ষ থেকে যৌথভাবে প্রকাশিত)
১৯৯২
প্রশাসনের কাছে দাবি
১. মেয়েদের সার্বিক নিরাপত্তা।
২. সমস্ত ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে সঠিক তথ্য প্রকাশ।
৩. ঘটনায় যারা সাক্ষী দেবে তাদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
৪. এই ধরনের লাঞ্ছনা বন্ধের জন্যে জাতীয় কমিশনকে জেলাস্তর থেকে চালু করা।
৫. দোষী ব্যক্তিকে কোনোরকম রাজনৈতিক আশ্রয় না দেওয়া।
৬. অর্চনা গুহর অত্যাচারের মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি।
৭.সমাজবিরোধীর খোলস ছেড়ে পুলিশকে জনসাধারণের নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে।
(অহল্যা, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ মঞ্চের পক্ষ থেকে যৌথভাবে প্রকাশিত)
১৯৯৩
১. সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত সমস্ত নারী-শিশুর প্রকৃত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
২. ধর্মের নামে নারীর প্রতি বৈষম্য দেখানো চলবে না।
৩. আমরা সমস্ত ধর্মের উর্ধে উঠতে চাই—কারণ কোনো ধর্মই নারীকে মানুষের মর্যাদা দেয় না।
৪. সাম্প্রদায়িকতা নির্মূল করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ একক দেওয়ানী বিধি চালু করতে হবে।
৫. সমানাধিকার বিরোধী সমস্ত ব্যক্তিগত আইন রদ করতে হবে।
৬. অবিভক্ত হিন্দু পরিবারে সম্পত্তিতে নারীর সমানাধিকারসহ সমস্ত বৈষম্যমূলক আইন পরিবর্তন করতে হবে।
৭. শিক্ষাকে ধর্মীয় ভাবনা এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
৮. স্কুল-কলেজ থেকে ভর্তির আবেদনে ধর্মীয় পরিচয় তুলে দিতে হবে।
৯. ধর্ম কোনো ব্যক্তির নিজস্ব ব্যাপার—তাকে চার দেওয়ালের মধ্যে আবদ্ধ রাখতে হবে।
১০. ব্যক্তিগত জীবন ছাড়া চাকরী বা জনজীবনের অন্য কোনো ক্ষেত্রে ধর্মের উল্লেখ করা চলবে না।
(অহল্যা, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ মঞ্চের পক্ষ থেকে যৌথভাবে প্রকাশিত। )
১৯৯৪
১. নারীর সার্বিক স্বাস্থ্য নিয়ে নীতি। টিবি, অপুষ্টি, রক্তাল্পতা এবং অন্যান্য রোগ নিয়েও সরকারকে ভাবতে হবে।
২. নিরাপদ এবং সুস্থ গর্ভনিরোধকের ব্যবস্থা করা।
৩. নিরাপদ গর্ভপাতের ব্যবস্থা করা।
৪. নারীর স্বাস্থ্যের ব্যাপারে ধর্মীয় অনুশাসনকে নিষিদ্ধ করা।
৫. বৈষম্যমূলক প্রসূতিকালীন সুবিধের সংশোধন বাতিল করা।
৬. পানীয় জল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নতি।
৭. কন্যাসন্তানের প্রতি বৈষম্যমূলক মনোভাবের বিরুদ্ধে প্রচার।
(অহল্যা, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ মঞ্চ, মহিলা সাংস্কৃতিক চক্র ও জাগরীর পক্ষ থেকে যৌথভাবে প্রকাশিত)
১৯৯৫
১. নারী নির্যাতনকারী সমস্ত পুলিশকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
২. হেফাজতে নারী নিগ্রহ বন্ধ হোক।
৩. অবিলম্বে বিচারপতি দিলীপ বসুর রায় কার্যকর করতে হবে।
ক) হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনায় মৃতের পরিবারকে এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
খ) ধর্ষণের ক্ষেত্রে ধর্ষিতাকে ৫০,০০০ টাকা দিতে হবে।
গ) গুরুতর আহতদের ক্ষেত্রে ২৫,০০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
ঘ) মহিলাদের জন্য পৃথক মহিলা পরিচালিত কারাগারের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. বেআইনিভাবে মেয়েদের থানায় আটক করা চলবে না।
৫. সন্তানের ‘স্বাভাবিক’ অভিভাবক হিসাবে মাকেও স্বীকৃতি দিতে হবে।
৬. স্কুল-কলেজ-রেশন কার্ড-ভোটার লিস্টে অভিভাবক হিসাবে মায়ের নামও দিতে হবে।
৭. জমির পাট্টায় পরিবারের মেয়েদেরও সমান অধিকার দিতে হবে।
৮. কর্মরতা মেয়েদের এবং আশ্রয়হীন মায়েদের সন্তানসহ থাকার জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
৯. গ্রামাঞ্চলের ছাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে স্কুল ও হোস্টেলের ব্যবস্থা করতে হবে।
১০. ক্ষতিকারক গর্ভনিরোধককে অবাধ ছাড়পত্র দেওয়া বন্ধ হোক।
১১. কন্যাভ্রূণ হত্যার ব্যবস্থা বন্ধ হোক।
১২. জাতীয় ও রাজ্য নারী কমিশনের সুপারিশ প্রকাশ করে কার্যকর করা হোক।
১৩. ধর্মনিরপেক্ষভাবে, নারীপুরুষের সমানাধিকারের ভিত্তিতে একক পারিবারিক আইন অবিলম্বে প্রণয়ন করতে হবে।
(১৯৯৬ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস মঞ্চের পক্ষ থেকে প্রকাশিত)
১৯৯৬
১. নাগরিক হিসাবে মেয়েদের পূর্ণ স্বীকৃতি দিতে হবে এবং বংশবৃদ্ধিতে মেয়েদের ভুমিকার কারণে হওয়া যাবতীয় বৈষম্যের অবসান করতে হবে।
২. মেয়েদের সমস্ত সাংবিধানিক ও আইনি অধিকারের দ্রুত ও কার্যকরী রূপায়ন চাই।
৩. বৈষম্য ও যৌন হিংসার সকল অভিযোগের দ্রুত ও সদর্থক নিষ্পত্তি করতে হবে এবং সকল অপরাধীদের কড়া ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
৪. পুলিশ, আমলা ও বিচারবিভাগকে মহিলাদের সকল সমস্যা ও অভিযোগকে যথেষ্ট গুরুত্ব ও সংবেদনশীলতার সাথে বিবেচনা করতে হবে এবং জাতীয় ও রাজ্য মহিলা কমিশনগুলির ও মানবাধিকার কমিশনগুলির তদন্তে উঠে আসা তথ্যকে আরও গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে।
৫. বিভিন্ন মহিলা কমিশন, তাদের গণতান্ত্রিক সংবিধান এবং সমস্ত কমিশনের সংবিধানে আরও বেশি ক্ষমতা অর্পণ করতে হবে।
৬. National Policy on Women যাতে সমস্ত স্তরে দেশজুড়ে আলোচিত হতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. পঞ্চায়েত স্তর থেকে শুরু করে প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরের মহিলা সংক্রান্ত সমস্ত রিপোর্ট, সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য এবং সমস্ত সরকারী নীতি ও সিদ্ধান্ত জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।
৮. সমস্ত মেয়েদের বিনামূল্যে, উপযুক্ত পরিকাঠামোয় বাধ্যতামূলকভাবে প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
৯. সমস্ত মেয়েদের আইনি শিক্ষা দিতে হবে।
১০. সরকারের Structural Adjustment Policy-র পুনর্বিবেচনা এবং সামাজিকভাবে মানুষের সঙ্গে উন্নয়নবিষয়ক কথোপকথন শুরু করতে হবে।
১১. স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসহ সামাজিক সুরক্ষা খাতে ব্যয় কমানোর উদ্যোগ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
১২. রাজ্য সরকারগুলিকে বন্যসম্পদ সংরক্ষণ ও পরিবেশের ভারসাম্যরক্ষার প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে।
১৩. ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে এবং এই গোষ্ঠীগুলি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থনে, ঐতিহ্যের নামে মেয়েদের উপর বিভিন্ন যে সামাজিক ও আইনি বিধিনিষেধ আরোপের চেষ্টা করছে, তাকে প্রতিহত করতে হবে।
১৪. সামরিকিকরণের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে এবং অস্ত্রের বহুল ব্যবহারের উপর রাশ টানতে হবে।
(আন্তর্জাতিক নারী দিবস মঞ্চের পক্ষ থেকে প্রকাশিত)
১৯৯৯
১. বৈষম্যমূলক হিন্দু নাবালক-অভিভাবকত্ব আইনের ছয় (এ) ধারা বাতিল করতে হবে।
২. সমস্ত ধর্মের মেয়েদের নাবালক সন্তানের স্বাভাবিক অভিভাবক হওয়ার অধিকার দিতে হবে।
৩. আইন সংশোধন করে সন্তানের ১২ বছর পর্যন্ত মায়ের হেফাজত বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৪. সন্তান সম্পর্কে সমস্ত সিদ্ধান্ত মা ও বাবা যৌথভাবে নেওয়ার আইনি ব্যবস্থা করতে হবে।
(নারী নির্যাতন প্রতিরোধ মঞ্চের পক্ষ থেকে প্রকাশিত)
২০০০
১. ন্যূনতম মজুরি ও সমান কাজে সমান মজুরি আইন কার্যকর করা।
২. শ্রমজীবী মেয়েরা সহ সমস্ত মানুষের সারা বছর রোজগারের ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা।
৩. সমস্ত জমি ও বাড়ির পাট্টা যৌথ নামে করা।
৪. শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সরকারী ব্যয় বাস্তব অর্থে বৃদ্ধি।
৫. সরকারী ব্যয়ের সিংহভাগ পরিষেবার কাজে খরচ করা।
৬. বিচার বিভাগের দীর্ঘসূত্রিতা দূর করে বিচারের সময় বেঁধে দেওয়া।
৭. পোস্টমর্টেম ও এফ.আই.আরের কপি দ্রুত দেওয়ার ব্যবস্থা করা।
৮. প্রকল্পের টাকা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সঠিকভাবে পুরোপুরি খরচ করা।
৯. ঘরে বাইরে, পথে ঘাটে মেয়েদের সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা।
১০. ঐতিহ্যের নামে মেয়েদের উপর কোনো বিধিনিষেধ চাপানো চলবে না।
(মৈত্রীর পক্ষ থেকে প্রকাশিত)
২০০২
১. সরকারী হোমের মানোন্নয়ন।
২. মেয়েদের জন্য চাই পুষ্টি, সম্মান, ভালোবাসা ও নিরাপদ আশ্রয়।
৩. সব আবাসিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসা।
৪. সব আবাসিকদের জন্য প্রকৃত প্রশিক্ষণ এবং বিনোদন।
৫. সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও হোম কর্তৃপক্ষের হোমের মানোন্নয়নের নির্দেশ অবিলম্বে মানতে হবে।
(মৈত্রীর পক্ষ থেকে প্রকাশিত)
২০০৩
১. কোনও অজুহাতেই পৃথিবী জুড়ে যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে বিশ্বশান্তি নষ্ট করা চলবে না।
২. নগ্ন সাম্প্রদায়িকতা ও রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতার বলি হচ্ছে হাজার হাজার মহিলা ও শিশু। মধ্যযুগীয় বর্বরতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাস্ত করুন।
৩. ধানতলার ঘটনা জাতির লজ্জা। দোষীদের চিহ্নিত করে দুর্নীতিপ্রবণ পঞ্চায়েত সদস্য ও অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত মহিলা, শিশু, নিহত বাস চালকের পরিবারের ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি, এমন ঘটনা যাতে আর কখনও না ঘটে তার জন্য বাস্তবোচিত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. উচ্ছেদ নয়, আগে আশ্রয় চাই। কোনও রকম উন্নয়ন বা সংস্কারের নামে গরিব মানুষকে ভিটে থেকে পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ করা যাবে না।
৫. সীমান্তে মহিলাদের উপর সেনা-নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে।
৬. ফতোয়া জারি করে মহিলাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া চলবে না।
(মৈত্রীর পক্ষ থেকে প্রকাশিত)
ছবি : The History of Doing, Radha Kumar
Tagsadolescence age of consent age of marriage caa child marriage corona and nursing covid19 Covid impacts on education domestic violence early marriage education during lockdown foremothers gender discrimination gender identity gender in school honour killing human rights intercommunity marriage interfaith marriage lockdown lockdown and economy lockdown and school education lockdown in india lockdown in school lockdown in schools love jihad marriage and legitimacy memoir of a nurse misogyny nrc nurse in bengal nursing nursing and gender discrimination nursing in bengal nursing in india online class online classes during lockdown online education right to choose partner school education during lockdown social taboo toxic masculinity transgender Women womens rights
Leave a Reply