ওম্যান জিসাস
0 132
অর্পিতার, মাঝে-মাঝে, মনে হয়, অদ্যাবধি জীবনে যা-কিছু, বিশেষত, জীবন-যাপনে, সবটাই টেক্সট্-এর বাইরের৷ সূর্যের সঙ্গে সে, খোলামকুচি, আপাতত, দাম্পত্যহীন৷ প্রকৃতই তারা SDC-‘সেমি-ডিটাচ্ড কাপ্ল’৷ আর, সেটুকু না থাকলে, বিকল্প: আত্মহত্যা৷ আসলে, ওসব না৷ SDC-কারণে, স্ত্রী-হিসেবে অর্পিতা বিকেন্দ্রীকরণে, মহিলা হিসেবে কেন্দ্রীকরণে৷ তখন সে, বছর দশেকের৷ আসলে এগারো-বারো৷ ‘পথে হল দেরি’ দেখার পর, দিন-রাত, সুচিত্রা সেনে৷ বায়োডাটা পর্যন্ত মুখস্থ৷ মাপজোক৷ বলতে গেলে, ফিল্ম রিলিজের বহু পরে দেখা৷ সুচিত্রা, ততদিনে, অভিনয় ছেড়ে, রমা৷ এক সুপার-অ্যাকট্রেস, ফিল্ম ছেড়ে, ভ্যানিশ৷ কেন? মেলাতে পারে নি৷ অন্তত, সে বয়সে সম্ভবও ছিল না৷ এটুকুমাত্র বোঝে, এক দুর্জ্ঞেয় জিদ্, ব্রত, হাওয়ায় ছিন্ন ঘুড়ির মতো ওলটপালট খাচ্ছে৷ সুচিত্রা বা রমা যে নামেই ডাকো, আপোষহীন৷ মেয়ে-হওয়া সত্ত্বেও, কোথাও উত্তমকুমারকে ছাড়িয়ে গেছেন৷ পাওয়ার-সিম্বল৷ ক্ষমতা-বিন্দু৷ অর্পিতার কাছে৷ অনেকের কাছে৷ ভেবে, সে, এসবে, খানিক স্বস্তিতে৷ একজন মহিলার প্রাইড, আত্মশ্লাঘা! দুম্ করে, মাঝপথে, ফিল্ম ছেড়ে দিলেন৷ গ্রেট৷ হারলেন না৷ অপরাজিতা৷ আপেক্ষিক স্বাতন্ত্র্য! উইংস-এর আড়ালে! সুবিধে তো আছে একটা৷ এই আড়াল৷ তাহলে, এই বয়সে সে ভাবতে পারে মেয়েদের পেনিস-এনভি কেন? সুচিত্রা সেনের তো ছিল না৷ শি হেট্স এজ৷ ওনলি এজ৷ ৪২-এ অর্পিতার মনে হয়৷ কোনো-কোনো দিন, স্বপ্নে-দুঃস্বপ্নে, সূর্যকে লাথি মেরে আচমকা বিছানা থেকে মোজেইকে ফেলে দিলে, সে হাউমাউ করে ওঠে৷ এমনিতে, মোটেও হাউমাউ না, প্রকৃতপক্ষে হাউমাউখাও৷ সূর্য আজকাল বুকে সিংহের থাবা রাখলে, বুকে ব্যথা৷ মা-গো …৷ এক ঝটকায় হাত সরায়৷ বলতে পারে না বুকে একটা স্মল-লাম্প৷ ব্রেস্ট ক্যান্সার! সূর্যকে জানাবে কেন? সে তার কে! এ তার একার লড়াই৷ আহ্, আ নন-ইভেন্ট৷ বিষয়টা এক জায়গায় স্থির থাকে না৷ মনে হয় যেন ঘোরে৷ লেফ্ট-ব্রেস্ট৷ এই সেদিনও শিশির-ভেজা ফলের মতো তার বুক৷ উন্মুখ৷ আর এখন, টু ডে? টু-মরোর কথা, না হয়, ছেড়েই দিলাম৷ অর্পিতার উৎসাহ নিভে আসে৷ একদা, দুজনের বেড়ানো৷ ওহ্ ক্যালকাটায় একসঙ্গে ডিনার, বিছানায় অনন্ত ভালোবাসা৷ নিভে আসে৷ এখন রোপ ওয়াক, প্রতিরক্ষাহীন৷ নীচে অনন্ত কূয়া৷ নো সেফটি-ডিভাইস৷ কতকাল দড়ির ওপরে হাঁটবে৷ ক্যান্সারে আরোগ্য নেই৷ কিংবা অনিশ্চিত৷ বড় জোর, পথে হল দেরি হতে পারে! মৃত্যু কখন যে নক্ করে৷ গলা-জিভ-স্কিন শুকনো৷ সিরাম-সোডিয়াম স্তর নদীর মতো নীচের দিকে৷ তার কিডনির কিছু হয়নি যে traceva-র মতো ড্রাগে যেতে হবে৷ সুগার-লেভেল নিয়ন্ত্রণে৷ ‘এক্সক্রিটরি-সিস্টেম’ ঠিকঠাক৷ তবু গলা ড্রাই৷ রোজ রাতে রুটিন৷ সূর্যর হাত বুকে৷ আর সেই ওয়াইপার হাত, যন্ত্রণায় সরিয়ে দেওয়া৷ হিংস্র৷ সূর্য তখন হেমন্তের অরণ্যে পোস্টম্যান৷ পাতি অরণ্য৷ চারপাশে শুষ্ক পাতা৷ কারুর পদপাত শোনে না সে৷ লিকুয়িড মডার্নিটিতে ভাসে৷ বিছানা ছাড়ে৷ বাধ্য হয়৷ ওয়ার্নিং সত্ত্বেও একটা লম্বা সিগারেটে৷ ব্যালকনিতে চলে আসে৷ চিন্তিত৷ অর্পিতা হাতের বাইরে৷ কেন, ট্রেস করতে পারে না৷ সম্পর্ক স্রেফ মাপজোক না৷ এটুকু বোঝে৷ কদিন আগেও এমন ছিল না৷ এখন তারা মোটেও স্পর্শকাতর না৷ সূর্যের দমবন্ধ হয়ে আসে৷ কেন সে until further notice জাতীয় সম্পর্কে যাবে, হে! ‘অ’-কে ভালোবাসে৷ বড় কথা পুরুষ৷ শাসক৷ দি রুলার, পাদিশাহ কাবাকা, সুলতান, জার…
রোল-আইডেন্টিফিকেশন অসম্পূর্ণ৷ সূর্য ‘রোল-আদার’৷ অর্পিতা তুমুল প্রসাদে নিজেকে সুচিত্রা/রমা ভাবে, রীণা ব্রাউন৷ দেখতে, কাছাকাছি৷ সমীপবর্তী৷ শুধু, তার ডান গালে দীর্ঘ নীল জড়ুল৷ জন্মের সময়, এক ড্রপ ব্লু-ব্ল্যাক কালি পড়ে গেছে উঁচু থেকে৷ ফর্সা ত্বকের কারণে, হয়তো বা জড়ুল নীল৷ নাকি দৈব! বা, DNA, RNA-এর জটিল৷ দুই আঁখিপল্লব তবু নায়িকার৷
সূর্যের সঙ্গে অর্পিতার মুখোশ সম্পর্ক! দাম্পত্য তো আর মুখোশ শিল্প না৷ তবু মাঝে-মাঝে মনে হয় ওকে দেরাজে রেখে দুম্ করে দেরাজ বন্ধ করে দেয়৷ অন্তত রাতটুকু৷ তারপর কাকস্বরে সূর্যর কা-কা … ৷ ভোর হয়েছে, খুলে দাও৷ কনজিউমার কালচার৷ অর্পিতাকে, সেই স্বভাবে খেয়ে ফেলতে চায়৷ অথচ তারা SDC৷ সে কী সূর্যকে আদ্যপান্ত সব বলবে? কী আর বলবে? ‘স্যার! বুকে ব্যথা, ড্রাই থ্রোট, অ্যানিমিয়া৷’ হার্ভার্ডের ইকনমিক্স-এর ছাত্র সূর্য৷ সে-ও৷ দুজনেই জানে ইনস্ট্যান্ট গ্লোবাল ট্রান্সফার অব ক্যাপিটালের কথা৷ ভুবনায়ন!
হরি হে সব লুঠ হয়ে যাচ্ছে, ছড়াচ্ছে দ্রুত৷ বিষাক্ত ডালপালা৷ ক্যান্সার৷ তার নিজের রাশি কি? কর্কট: one of the 12 signs of the ZODIAC, the crab. It appears when the sun has reached its highest northern limit and begins to go backward to the south. Like a crab, however, it makes its return sideways. সত্যিই তো সময়টা একুশে জুন থেকে বাইশে জুলাই৷ তারও তো জন্ম একুশে জুন৷ সে এখন কী করবে! বিশেষত, লেফট ব্রেস্ট! স্পাইডারম্যানের ডান-মুঠোয় ওই স্তন৷ থাবার দাগ৷ নখর৷ তবে, কেন, খামোকা মেয়েদের পেনিস-এনভি! জেন্ডার ট্রাব্ল! মৃত্যুর পরেও মাইকেল জ্যাকসন জীবিত? সেলুলয়েডে! দেখলে, অর্পিতা সেক্স হারায়…
Risks depend on decisions. ব্যথা নিরাকরণে সে কি সিদ্ধান্ত নেবে? সূর্যকে জানাবে? নাকি, সরাসরি বাল্যবন্ধু অঙ্কোলজিস্ট গৌতমের কাছে যাবে৷ এসবের জন্য দায়ী কে? সূর্য? কেন নয়? সে তো এতদিন সুস্থই ছিল৷ একাদিক্রমে ৪১ বছর৷ ব্যথা-যন্ত্রণা বলতে কিছু না৷ ৩১ বছর বয়সে বিয়ে হয়৷ পরিচয়ের বছর দুয়েক বাদে৷ আর, এখন নাকি, লিকুয়িড সময়৷ লোকে তিন মাসের আগেই ‘আই লাভ য়্যু’ বলে৷ তাদের সাকুল্যে দু’বছর লাগে৷ তখন, সূর্য ২৯৷ ওয়্যার দে, দেন, লাভার্স? প্রথম-প্রথম হাঙরের ঢেউ৷ আর আজ ১১ বছরের মাথায় সাঁতার শিখতে না-পারা৷ মাথার ওপরে জল৷ বলা ভালো, শেষ দু’বছরে, ভালোবাসা ছাই করে, তারা আর দম্পতি না, সেক্স পার্টনার্স মাত্র৷ অথচ শুরু-শুরুতে, ভায়োলেন্স-কাউন্টার ভায়োলেন্স, পেনিস-এনভি৷ ভালোবাসা ছিল বড় কাছে-এ-এ৷ অর্পিতা নিঃসন্তান৷ নয়তো সন্তানকে ঘিরে এক কালচারাল ফ্যান্টাসিতে থাকতে পারত৷ বাম স্তন৷ ব্যথা৷ হাত রাখলে টের পায়, লাম্প৷ আয়নার সামনে দাঁড়ায়৷ দরজা-জানলা বন্ধের পর আলো জ্বেলে দ্যাখে, বোঁটার চারপাশ রং হারাচ্ছে৷ ঈষৎ হলদে৷ তবু, এখন, নিপল্ থেকে কোনো নিঃসরণ না৷ হবেই বা কেন৷ সে তো আর মা না৷ হতে পারে নি৷ সূর্যের কোনো অভিযোগ নেই৷ বরং, ভালো৷ হাত-পা খোলা৷ সূর্যর প্রতিক্রিয়াহীনতায় কোথায় যেন আলুথালু অর্পিতা৷ এখন, অবশ্য, ওসবে মন নেই৷ বুকে যন্ত্রণা৷ আর তাতেই সব ঢাকা পড়ে গেছে৷
মাঝে-মাঝে ভাবে, অঙ্কোলজিস্টদের কাছে যাবে কেন! কী লাভ! ওখানে তো স্রেফ নামতা: ১. সার্জারি (কেটে বাদ দাও—দুরাত্মাকে ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট), ২. রেডিয়েশন, ৩. কেমো, ৪. হর্মোন-থেরাপি আর ৫. টার্গেটেড-থেরাপি…৷ অর্পিতা আপাতত ভাবতে পারে না তার বাম স্তন বাদ গেছে৷ সূর্য, অদ্ভূত আঁধারে তার লেফট ব্রেস্ট খুঁজে পাবে না৷ আলোতেও পাবে না৷ হিপ্, হিপ্, হুররে …৷ রি-বিল্ড করা যায় অবশ্য৷ ‘ম্যামোগ্রাফিক-স্ক্রিনিং’, কে জানে, শেষাবধি, ভালো না মন্দ! সুনিশ্চিত না বিজ্ঞানীরা৷ ২০১৫: ব্রেস্ট ক্যান্সারে, গোটা দুনিয়ায়, উফ্, মারা গেছে ৫ লক্ষ ৩৩ হাজার ৬০০৷ সরকারি হিসেব৷ তার বাইরে যে কত, কে জানে৷ ২০১৭-র পরিসংখ্যান, এই মুহূর্তে মুঠোয় নেই৷ নিশ্চয় বাড়বে৷ ইন্টারনেট খোলে৷ ব্রেস্ট ক্যান্সারে TAXOMIFEN লাগে৷ নানান নামে বাজারে ড্রাগ৷ যেমন NORLADEX, GENOX, TAMIFEN…৷ ভারতীয় বাজারে এর সংকট৷ মোদির GST সব ছারখার করে দিল৷ যোগানহীন বাজার৷ মার্কেট আছে, মার্কেটে নেই৷ বাজার এক ইঁদুরের গর্ত৷ সব রসাতলে৷ তবে অর্পিতাদের ঘাবড়ানোর কথা না৷ চার হাতের রোজগার৷ কালো বাজারে সব মেলে৷ সূর্যের বছর দেড়েক পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেয় অর্পিতা৷ তাও প্রভুর ইচ্ছে৷ ‘জেনারেল উইল’ না৷ পুরুষের ইচ্ছা৷ Both raw and cooked.
আজ সারাদিনে দুটো মাত্র ক্লাস৷ এরকমই থাকে৷ আজ আর যাবে না৷ সূর্যকে জানায় না৷ মুঠো ফোনে কাকে যেন ডাকে৷ ম্যানেজ করতে না পারলে, অন্তত ছাত্রছাত্রীদের জানিয়ে রাখবে৷ না যাওয়াটা তার প্রেরোগেটিভ৷ কিছুটা রয়্যাল৷ স্কুলে-কলেজে এমনটা না৷ আসলে আজ বড় ক্লান্ত৷ নির্মমভাবে ডিপ্রেসড৷ উঠতে ইচ্ছে করছে না৷ আর্লি লাঞ্চ সেরে সূর্য চলে গেলে, সে, সূর্যহীন, বাল্যবন্ধু অঙ্কোলজিস্ট গৌতমে৷ আগেই সূর্যকে না জানিয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে রেখেছিল৷ আর পরপর দুদিন দেখানোয়, বায়োপ্সি ছাড়াই রোগ বোঝা যায়৷ কী করবে এখন! মরে যাবে! গৌতমের মুখে হাসি:
—ঘাবড়াস না৷ প্রিলিমিনারি স্টেজ৷ আপাতত ওষুধ আর কয়েকটা কেমো৷ গোল্ড কোটেড লিপোসামস…৷ দিব্যি কাজের৷ সেরে যাবে৷ এতে বিদেশে বিশেষত মার্কিন মুলুকে সার্ভাইভাল রেট বেশি৷ আজকাল এখানেও৷ নো সার্জারি৷ এখন তো জিন-থেরাপি শুরু হয়েছে৷ In gene therapy, the patient by genetically altered to enable his/her cells to fight cancer. কলকাতায় এখনও শুরু হয়নি৷ তাছাড়া তোর এসব লাগবে না৷ ভেরি আর্লি স্টেজ৷ অন্তত বাইরে থেকে মনে হচ্ছে৷ হাঁ, ভালো কথা, সূর্য আসেনি যে বড়! জানে নিশ্চয়! হাজব্যান্ড পাশে না থাকলে, থাকবেটা কে!’
উত্তর দেয় না অর্পিতা৷ চারপাশে হা-হা রব৷ পুরুষ৷ ফ্রাঙ্কেনস্টাইনও তো পুরুষ৷ স্পাইডারম্যান! তার শুধু পেনিস-এনভি৷ সে কেন নারী! কোন্ নারী! They scandalize identity. বিশেষত, তাদের৷
অর্পিতা রিপ-ভ্যান-উইঙ্কল, ঘুম থেকে, সহসা, জেগে যেন বলে, ‘গৌতম! Black Sun’ পড়েছিস! বিষাদ-যাত্রা! জুলিয়েন ক্রিস্তেভার৷ সূর্যগ্রহণ?’ ডাক্তার মাথা নাড়ে৷ সময় নেই৷ তাছাড়া পুরুষের সময় থাকে না৷
—সূর্যকে জানিয়েছিস? জানানোটা তোর প্রাইমারি ডিউটি৷
‘ডিউটি’ শব্দে চমকায়৷ শব্দটা ভেতরে গিয়ে কেমন যেন এক নয়েজ সৃষ্টি করে৷ নক্ করে৷ কেন তার একার দায়িত্ব কেন? ১১ বছর হয়ে গেল, কিছু খোঁজ রাখে না৷ স্পাইডার৷ স্টিকি৷ উফ্, কী যন্ত্রণা৷ ব্লাউজের নীচে, ব্রা-র নীচে, অনুপম লেফট ব্রেস্ট-এ৷ যতগুলি চোখই থাকুক না কেন, মাকড়সারা তেমন চোখে দেখে না৷ একটা যেন বাম-নিপলের নিকট বাউন্ডারিতে বাসা বেঁধেছে৷
—দ্যাখ্, দেরি করিস না৷ কালই আয়৷ আমাদের হাসপাতাল মুম্বইয়ের যশলোকের চাইতে কম না৷ ডঃ আদবানি, মুম্বই থেকে, হামেশাই আমাদের এখানে আসেন৷
‘যেতে হবে, কিন্তু কেন যাব’—ভাবতে-ভাবতে বাড়ি এসে স্নানে৷ শাওয়ারে জলবিন্দুও যেন তার নিপ্ল সহ্য করতে পারছে না৷ শিরশির করছে৷ কোনোরকমে চুল মুছে ফ্রিজ থেকে স্যান্ডউইচ খেয়ে, শুয়ে পড়ে৷ দুর্বল৷
পরদিন, ডাক্তারের নির্দেশ-সত্ত্বেও যায় না৷ রাতে বড়-বড় চোখ, জাম্পিং-স্পাইডার সূর্য কাছে এলে তার তিক্ত স্বর৷ ‘অন্য বেডে যাও৷ আজ ব্রত৷’ সূর্য হতবাক৷ কবে থেকে ঈশ্বর প্রেম, নাস্তিক বালিকার! কিছু-কিছু স্পাইডারের আটটি চোখ৷ তবে দৃষ্টি ক্ষীণ৷ সূর্য, শেষে, স্পাইডার হওয়ায়, চোখে তেমন দেখে না৷ এক লাফে অন্য ঘরে৷
আজও ‘অ’ ক্লাসে যায় না৷ বলা ভালো, যেতে পারে না৷ দুজন রিসার্চ-স্কলার ফিরে যাবে৷ নাম্বার আছে৷ তবু, কল করে না৷ ইচ্ছে হয় না৷ স্রেফ বাটার ব্রেড খেয়ে বসে থাকে৷ চা পর্যন্ত খায় না৷ শোয় না, ঘুমোয় না৷ সাড়ে-পাঁচটা নাগাদ সূর্য ফেরে৷ ‘আসছি’ বলে ফের বেরিয়ে যায়৷ হয়তো কোনো ছাত্রী ওয়েট করছে৷ রাত আটটা নাগাদ ফেরে৷ চা বানায় অর্পিতা৷ ব্যথা কম৷ সূর্য বলে, ‘কেমন আছ? জ্বর নাকি!’ ‘ভালো’৷ মুখোমুখি৷ মাঝখানে পোর্সিলিন৷ ডিপার্টমেন্টের খবর নেয়৷ সূর্য এগারোটা নাগাদ শুয়ে পড়লে, ঋতু বাজোরিয়ার গবেষণার একটা চ্যাপ্টার MELTDOWN OF THE FINANCIAL MARKETS’-এ চোখ বোলায়৷ ফের বন্ধ করে৷ অফকোর্স, উইদ্ সাম নেসেসারি কারেকশনস অ্যান্ড অ্যাডিশনস৷ রাত প্রায় দেড়টা৷ সন্তর্পণে, এক সমুদ্র দূরত্ব রেখে, আলগোছে, সূর্যের পাশে শোয়৷ ভয়৷ এই বুঝি, স্পাইডারম্যানের ডানহাত তার বাম ব্রেস্ট-এ৷ স্টিকি৷
ঝমঝমিয়ে ঘুম নামে৷ স্বপ্ন৷ স্বপ্নে অবধারিত জিসাস ক্রায়েস্ট৷ ক্রুশ-বহনে, প্রায় অক্ষম৷ কেননা, বিদ্ধ৷ কতগুলি পেরেক তার শরীরে৷ গুনতে চেষ্টা করে৷ এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকে৷ মূর্তিটা মনে হয় নড়ছে৷ গলে যাচ্ছে৷ বরফের? আইস-ক্র্যাফট? O Lord! ঠিক গলে যাচ্ছে না৷ চেহারা পাল্টে যাচ্ছে৷ মেটামরফোসিস! কাফকা? জিসাস, ক্রমে, পুরুষ থেকে নারী৷ ঈশ্বরী৷ ক্রুশবিদ্ধ৷ দুই হাত ডানা৷ উসু কাঠ৷ মূর্তির বামস্তনে একটা দীর্ঘ ধাতব পেরেক৷ রক্ত গড়িয়ে পড়ছে বাম নিপ্ল থেকে৷ টর্সেলো দ্বীপ৷ চতুর্দিক আলোহীন৷ ওম্যান জিসাস৷ গালে নীল জড়ুল৷
Tagsadolescence age of consent age of marriage caa child marriage corona and nursing covid19 Covid impacts on education domestic violence early marriage education during lockdown foremothers gender discrimination gender identity gender in school honour killing human rights intercommunity marriage interfaith marriage lockdown lockdown and economy lockdown and school education lockdown in india lockdown in school lockdown in schools love jihad marriage and legitimacy memoir of a nurse misogyny nrc nurse in bengal nursing nursing and gender discrimination nursing in bengal nursing in india online class online classes during lockdown online education right to choose partner school education during lockdown social taboo toxic masculinity transgender Women womens rights
Leave a Reply