খবরে জেন্ডার - ৫
0 80‘নবোদয়ম’ পত্রিকা আজ ক্ষমতায়নের অস্ত্র তামিলনাড়ুর গ্রামীণ মহিলাদের কাছে
আজ থেকে ১৬ বছর আগে অন্ধ্রপ্রদেশের বিভিন্ন মহিলা সঙ্ঘ থেকে নির্বাচিত ২৩ জন মহিলাকে নিয়ে তিরুপতিতে একটি তিনদিনের কর্মশালার আয়োজন করা হয়। সেই কর্মশালায় চিত্তুর জেলার এক গ্রাম থেকে এসেছিলেন মঞ্জুলা। কর্মশালায় যোগ দেওয়ার আগে মঞ্জুলা কল্পনাও করতে পারেননি যে এটা তাঁর ‘জীবন চিরকালের মত বদলে দেবে’।
এই কর্মশালায় নিজেদের মণ্ডলের কোন ঘটনা কীভাবে সহজ কথ্য ভাষায় রিপোর্টিং করতে হয় সে বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা দেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকেই সূচনা হয় ‘নবোদয়ম’ – দলিত মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত মাসিক পত্রিকা। আট পাতার ত্রৈমাসিক হিসাবে যাত্রা শুরু করে আজ ‘নবোদয়ম’-এর প্রতি মাসে কুড়ি পাতার সংস্করণ প্রকাশিত হয়, এবং পৌঁছে যায় গোটা রাজ্যের আনুমানিক চার লক্ষ পাঠকের কাছে।
পত্রিকার সম্পাদক মঞ্জুলার ভাষায়, ‘আমরা শুধুমাত্র আমাদের গ্রাম এবং আশেপাশের অঞ্চলের খবরই প্রকাশ করি; তা সে মেয়েদের ক্ষমতায়ন, পারিবারিক হিংসা বা বাল্যবিবাহের মত বড় এবং জরুরি খবরও হতে পারে, আবার সুদ বেড়ে যাওয়ার আগেই কীভাবে ব্যাংকের লোন শোধ করতে হয়, সে ব্যাপারেও কোন লেখা হতে পারে।’
মঞ্জুলার বক্তব্য অনুযায়ী ‘নবোদয়ম’ মূলত চারটি লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে।
১. গ্রামের গরীব মহিলাদের আওয়াজ তোলার মঞ্চ তৈরি করা।
২. গ্রামীণ মহিলাদের খবর সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া।
৩. তথ্যের বণ্টনের মাধ্যমে গ্রামীণ গরীব মানুষের কাছে পৌঁছে তাঁদের প্রভাবিত ও জাগরুক করা।
৪. সাংবাদিকতার মাধ্যমে গ্রামের গরীব, নিপীড়িত, নিরক্ষর মেয়েদের ক্ষমতায়ন।
সাফাইকর্মীদের নিয়ে ভিডিও বানানোর জন্য দিব্যা ভারতীকে হুমকি
প্রখ্যাত তথ্যচিত্র নির্মাতা তামিলনাড়ুর দিব্যা ভারতীকে আন্না বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফাইকর্মীদের নিয়ে একটি ভিডিও আপলোড করার জন্য ফোনে খুনের হুমকি দেওয়া হল। সম্প্রতি দিব্যা ভারতীর নাম খবরের শিরোনামে এসেছিল, ২০০৯ সালে এক দলিত ছাত্রের মৃত্যুর প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার জন্য গ্রেফতার হওয়ার ফলে। তারপর আবার এই ঘটনা।
গত ২১ জুলাই দিব্যা ভারতী আন্না বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফাইকর্মীদের ওপর একটি ভিডিও আপলোড করেন, যেখানে সাফাইকর্মীরা অভিযোগ করেন, তাঁদের ন্যুনতম সুরক্ষা ছাড়াই নর্দমায় নামতে হয়। কোনরকম মাস্ক বা অন্যান্য সুরক্ষাদ্রব্য, যা দেওয়া বাধ্যতামূলক, কিছুই পাননি তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন চিত্রা সেলভি তাঁর ব্যক্তিগত কাজও তাঁদের দিয়ে করান, সাফাইকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতনভুক হওয়া সত্ত্বেও। শুধু তাই নয়, চিত্রা সেলভির প্ররোচনায় তাঁর স্বামী তাঁদের যৌন হেনস্থাও করেন।
এই ভিডিও আপলোড হওয়ার পর একের পর ফোন আসতে থাকে দিব্যা ভারতীর কাছে। ফোনে তাঁকে পাল্লার সম্প্রদায়কে অপমান করার জন্য হুমকি দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ডিন চিত্রা সেলভি এই সম্প্রদায়ভুক্ত। এঁদের মধ্যে অধিকাংশ হুমকিদাতাই নাকি ভিডিওটি দেখেননি, দিব্যা তাঁদের প্রশ্ন করে জানতে পারেন।
দিব্যা দিন্দিগুলের পুলিশ কমিশনারের সাথে পাঁচবার দেখা করা সত্ত্বেও এখনও কোনও সদর্থক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। কালেক্টরের বক্তব্য অনুযায়ী, হাজারের উপর ফোন থেকে হুমকি আসায় কোনও পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব নয়। দিব্যার বক্তব্য, যতই ফোনে খুনের হুমকি আসুক, তিনি এই ভিডিও ডিলিট করবেন না, এবং হেনস্থাকারীদের বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই চালিয়ে যাবেন।
কাশ্মীরের রূপান্তরকামী মানুষের অধিকাররক্ষার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সমাজকর্মীরা
বহু বছরের টালমাটাল রাজনৈতিক অস্থিরতার নীচে এতদিন চাপা পড়ে ছিল জম্মু ও কাশ্মীরের এলজিবিটি সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকার, জীবিকা ও নিরাপত্তার প্রশ্ন, যা অবশেষে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর মূলধারার আলোচনায় উঠে এল। এলজিবিটি কর্মী ও কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক আইজাজ আহমেদ বুন্দের দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার ভিত্তিতে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সরকারকে তার অবস্থান জানানোর নির্দেশ দিয়েছে। রূপান্তরকামী মানুষদের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে সংরক্ষণের প্রশ্নে সরকারের ভূমিকা কী, জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বুন্দ তাঁর এই লড়াইয়ে পাশে পেয়েছেন কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ফারা আশরাফ এবং স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্র এনাস শাফি খানকে।
২০১৫ সালে প্রথমবার গ্রামীণ ভারতের প্রথম আদমসুমারিতে রাজ্যে রূপান্তরকামীদের সংখ্যা ছিল ৪৭৭, যদিও নির্বাচন কমিশনের কাছে রূপান্তরকামী হিসাবে ২০১৪ সালে নাম নথিভুক্ত করেছিলেন মাত্র ৯৭ জন। যদিও রূপান্তরকামীদের অধিকারের দাবিতে আন্দোলনরত সমাজকর্মীরা এই তথ্য সমর্থন করেন না। বুন্দের মতে, সমাজের সকল স্তরেই রূপান্তরকামী মানুষের অস্তিত্বকেই নাকচ করা হয়। প্রথাগতভাবে রাজ্যের রূপান্তরকামী মানুষেরা বহু বছর ধরে ঘটকালি পেশার সাথে যুক্ত হলেও বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাঁদের টিকে থাকার লড়াই ক্রমশ কঠিন হতে থাকে। কোনরকম সামাজিক সুরক্ষা না থাকায় এবং পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকার না পাওয়ার ফলে তাঁদের শেষ জীবনে পরমুখাপেক্ষী হওয়া ছাড়া কোনও উপায় থাকে না। ২০১৩ সালে ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ সায়েন্টিফিক রিসার্চ পত্রিকায় প্রকাশিত Other Sex: A Study on Problems of Transgender Women of District Srinagar শীর্ষক প্রবন্ধে প্রায় একশো রূপান্তরকামী মানুষের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই করুণ চিত্র তুলে ধরেন গবেষক বুন্দ।
২০১৭ সালের এই রায় আইজাজ আহমেদ বুন্দের দীর্ঘ সাত বছরের লড়াইয়ের ফসল। ২০১১ সালে তিনি প্রথম রাজ্যের সমাজকল্যাণ দপ্তরের কাছে রূপান্তরকামী মানুষের প্রাপ্য অধিকারের জন্য ওয়েলফেয়ার বোর্ড তৈরির আবেদন জানান কিন্তু প্রাথমিক কিছু আলোচনার পর তা ফাইলের নীচে চাপা পড়ে যায়। এরপর ২০১৩ সালে বুন্দ রাজ্যের মানবাধিকার কমিশনের কাছে আবেদন জানান কিন্তু সেখান থেকেও কোনও সদুত্তর আসে না। অবশেষে ২০১৭ সালে বুন্দ হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা মনস্থির করেন। দুঃখের বিষয়, কোনও উকিল এই কেস লড়তে রাজি না হওয়ায় বুন্দ, ফারা আশরাফ ও শাফি খান নিজেরাই মামলা দায়ের করতে বাধ্য হন।
এখন তাঁরা আশায় বুক বাঁধছেন ১৫ সেপ্টেম্বরের আগামি শুনানির জন্য।
Tagsadolescence age of consent age of marriage caa child marriage corona and nursing covid19 Covid impacts on education domestic violence early marriage education during lockdown foremothers gender discrimination gender identity gender in school honour killing human rights intercommunity marriage interfaith marriage lockdown lockdown and economy lockdown and school education lockdown in india lockdown in school lockdown in schools love jihad marriage and legitimacy memoir of a nurse misogyny nrc nurse in bengal nursing nursing and gender discrimination nursing in bengal nursing in india online class online classes during lockdown online education right to choose partner school education during lockdown social taboo toxic masculinity transgender Women womens rights
Leave a Reply