১৮ না ২১ — কোন্দলে কোন দলে?
0 1950আজকের এই ‘বিতর্ক-ব্লগ’-এ পালা করে থাকবে পক্ষ আর বিপক্ষ যুক্তি। বিতর্কের বিষয় — মেয়েদের বিয়ের বয়স। মেয়েদের বিয়ের আইনি বয়স ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ করার সরকারি প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে গত ২২শে অক্টোবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘কোন্দলে কোন দলে?’ বিতর্কে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলাম আমরা। প্রায় ৩০ হাজার মানুষের কাছে এ পর্যন্ত পৌঁছেছে আমাদের পোস্ট। আর ইমেল এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রাজ্যের নানা প্রান্তের নানা বয়সের প্রায় ১,২০০ মানুষ নিজেদের মতামত লিখে পাঠিয়েছেন আমাদের। সেখান থেকেই তুলে ধরছি অত্যন্ত জরুরি কয়েকটি যুক্তি।
তমোঘ্ন চট্টোপাধ্যায়
আমার মতে, বিয়ের বয়স সম্পর্কিত বর্তমান আইনটি লিঙ্গবৈষম্য দোষে দুষ্ট। ছেলে ও মেয়ের বয়স আলাদা হবার যুক্তিগুলি যেমন ছেলের জীবিকা, অভিভাবকত্ব সুলভ গুণ অর্জন ইত্যাদি পরোক্ষভাবে পিতৃতন্ত্রকেই সমর্থন করে। এই বৈষম্য ঘোচাতে হলে ছেলের বয়স না কমিয়ে মেয়ের বয়স বাড়ানোটাই উপযুক্ত সমাধান হবে। দ্বিতীয়ত, মেয়েদের বিয়ের বয়স বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার স্তরবিভাগের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেয়েদের কলেজের শিক্ষা অসম্পূর্ণ রেখেই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। আগামী শিক্ষানীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি স্তরের সমাপ্তির পরে বিয়ের বয়স স্থির করা উচিত। তৃতীয়ত, মেয়েদের বয়স লুকিয়ে বিয়ে দেওয়া আইনের ব্যর্থতা নয়, আইন রক্ষকদের ব্যর্থতা। বর্তমানে সচেতনতা তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। এই ক্ষেত্রে যদি তৃণমূল স্তরের জনপ্রতিনিধিদের দায়বদ্ধতা কড়া আইন প্রণয়ন করে বাড়ানো যায়, তাহলে কিছুটা লাভ হতে পারে। কেননা সমাজে তাঁদের অগোচরে প্রায় কিছুই ঘটেনা। তাছাড়া, গ্রামবাংলার অপুষ্টিতে ভোগা বেশিরভাগ মেয়েদের শরীরের বাড় বিলম্বিত হওয়ায় আঠারো আর ১৫ বছরের মধ্যে ফারাক অনেক সময় খালি চোখে বোঝা যায়না। কিন্তু বিয়ের বয়স ২১ হলে আইনভঙ্গকারীরা নিদেনপক্ষে আঠারো বছরের নিচে মেয়ের বিয়ে দিতে ভীত হলেও হতে পারে।
অন্তরা চৌধুরি যশ
আইন না করে আগে মেয়েদের সিকিওরিটির কথা ভাবুন। ২১ পর্যন্ত মেয়েদের সুরক্ষা কে দেবে? অনেক গরিব বাড়ির মেয়ে আছে যারা পড়াশোনা করে না, তাদের সুরক্ষা কে দেবে? একটা মেয়ে যখন সেফ নয়, তখন তার বিয়ের বয়স না ভেবে কীভাবে সেফ রাখা যায় সেটা একটু দেখুন। আসল কথা রেপ কীভাবে বন্ধ হবে সেটা করুন।
রূপালী গঙ্গোপাধ্যায়
ঠিক যে যে কারণে মেয়েদের বিয়ের বয়স অন্তত আঠারো-য় বাঁধতে হয়েছিল, প্রায় সেই সব কারণেই এখন বিয়ের ন্যূনতম বয়সটা একটু বাড়ানো উচিত। প্রথমত আমাদের সমাজে ছেলেদের পরিণতি যেমন উপার্জনে, মেয়েদের পরিণতি তেমনি বিয়েতে। তাই একটি মেয়ে খুব আদরের হলেও পরিবারের কাছে তার বিয়ে দেওয়ার একটা চাপ থাকেই। কিন্তু বিয়ে হওয়া এমন একটা পরিণতি যার পর মেয়েটি (সংসার ছাড়া) আর কিছু করতে পারল কি না সেটা আর গুরুত্বপূর্ণ থাকে না। আঠারো বছর মানে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করতে করতে শরীরে-মনে একটা মেয়ে কতটুকুই বা গড়ে ওঠে যাতে তাকে এমন একটা পরিণতির দিকে ঠেলে দেওয়া যায়? পড়াশোনা-চাকরি করা দূরস্থান, কিছু শিখে নিজের পায়ে দাঁড়াবার ব্যবস্থা করে রাখার পক্ষেও আঠারো বছর যথেষ্ট নয়।
দ্বিতীয়ত, বিয়ে হওয়ার সঙ্গে মেয়েদের একটা নিরাপত্তার ধারণা জড়িয়ে থাকে যেটা ভুল; তারা সবচেয়ে বেশি অত্যাচারিত হয় শ্বশুরবাড়িতেই। বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যে যে মেয়েগুলো শ্বশুরবাড়িতে প্রাণ দেয়, তাদের বেশিরভাগই কুড়ির নিচে। অর্থাৎ বয়সে-বিদ্যায়-বুদ্ধিতে পিছিয়ে থাকা মেয়েদের পক্ষে শ্বশুরবাড়ি আদৌ নিরাপদ নয়।
তৃতীয়ত, আঠারো হলেই বিয়ে করে নেওয়া যাবে ভেবে যে কিশোরী ষোলো থেকেই পড়াশোনার পাট তুলে দিয়ে রূপচর্চা আর ঘরকন্নায় মন দিচ্ছে, তাকে আটকাবার জন্যও বিয়ের সম্ভাবনাটা পেছোনো দরকার। আর আঠারো-য় বিয়ে হয়ে ঊনিশ বছরে শিশু কোলে ক্লিষ্ট কিশোরীর মুখ দেখেও কি মনে হয় না যে ওকে আর দুটো বছর সময় দেওয়া হোক?
রিয়া রিয়া
আচ্ছা ধরুন কোনো এক গরিব মেয়ের বাবা নেই, আছে শুধু মা। আপনারাই বলুন, একজন গরিব অসহায় মা তার মেয়ের আরো একস্ট্রা ৩ বছর কীভাবে, আর সবথেকে বড় কথা হল কীভাবে মেয়েটাকে প্রতিটা মুহুর্তে রক্ষা করবে একা? যদি একুশ বছরে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার আইন চালু হয়, তাহলে ১৮ থেকে ২১ পর্যন্ত মেয়েটির ভরণপোষণ এবং সুরক্ষার দায়িত্ব সরকারের নেওয়া উচিত।
রেনিজা খাতুন
এটা নির্ভর করে কোন বাবার কটা মেয়ে তার ওপর। যে গরিব বাবার ৪/৫টা মেয়ে সে ১৮ বা ২১ নয়, ১৬/১৭ থেকেই বিয়ে দিতে চান, নাহলে তাঁর পক্ষে সামলানো মুশকিল। যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ তাদের জন্য ১৮ হওয়াটাই ভাল।
সুতপা সেন
আমি একুশ বছরের দিকেই থাকব। মিনিমাম অ্যাকাডেমিক পড়াশোনাটা থাকা খুব প্রয়োজন, যেটা আঠারো বছরে বিয়ে হয়ে গেলে অনিশ্চিত হয়ে যায় — পরে যেকোনো প্রতিকূল অবস্থায় পড়লে আর স্বাবলম্বী হবার কোনো রাস্তা থাকে না। তাছাড়া আঠারো বছরের একটা মেয়ে হঠাৎ শ্বশুরবাড়ির মতো বিরুদ্ধ পরিবেশে গিয়ে অভিজ্ঞতার অপ্রতুলতা অথবা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বোধবুদ্ধির অভাবে শুধু নিষ্পেষিত হতে থাকে।
দেবপ্রসাদ বিশ্বাস
সমাজের কোন অংশে এর প্রভাব পড়বে সেটা ভাবা উচিত। কলকাতার মত শহরকেন্দ্রিক এলিট শিক্ষিত পরিবারের মেয়েদের এই ১৮/২১-এর বেড়াজালে আটকে থাকার কোনো প্রয়োজন পড়ে না। এমনকী বিয়ের কোনো নির্দিষ্ট বয়সের আইন না থাকলেও তাদের এইসব নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত হওয়ার কোনো অবকাশ থাকে না। কিন্তু যখন আমরা এইরকম শহরকেন্দ্রিক এলিট সমাজব্যবস্থার বাইরে গিয়ে দেখব, সেখানে হরহামেশাই এখনও পর্যন্ত ১৬-১৭ বছর বয়সের মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে বিনা দ্বিধায়। এই লকডাউন পিরিয়ডে এর হার আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা যেটা প্রথম দেখতে পারি, এতদিন যে আইন ছিল ১৮ বছর, তার প্রভাব কতটুকু পড়েছে? সমাজের এই নির্দিষ্ট অংশের মানুষেরা কেন অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিতে আগ্রহী হয়? অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থার ভূমিকা কতটা দায়ী? বিয়ে নিয়ে তাদের সচেতনতা বা মতামত কী? এইসব বিষয়গুলো তলিয়ে না ভেবে, তাদের সমস্যাগুলোর সমাধান না খোঁজার চেষ্টা করে, শুধুমাত্র আইন করে তার কোনো ফল আশা করা যায় না। সবকিছুর পিছনে পুরুষতান্ত্রিক কাঠামোকে দায়ী করলে অতি সরলীকরণ হয়ে যাবে, যাদের সমস্যা তাদের কাছে গিয়ে তাদের কথা না শুনলে সমস্যা সমস্যাই থেকে যাবে।
সুজাতা বসু রায় চৌধুরী
মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হওয়ার অর্থ মেয়েরা শিক্ষার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ে ও পরিবারও বড় হতে থাকে। আমাদের দেশে খাদ্যের অধিকার আইন পাশ হয়েছে। দেশে অনাহার বা অর্ধাহারে দিন কাটানোর মানুষের সংখ্যা ক্রমশ কমে আসছে। বিভিন্ন টীকাকরণ কর্মসূচি ও সরকারিভাবে বিনা খরচে চিকিৎসা ব্যবস্থার সুযোগ প্রায় সমস্ত মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে। শিক্ষার অধিকার আইনের বলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মাধ্যমিকের পর বিভিন্ন বৃত্তিমূলক শিক্ষাও চালু হয়েছে। যেকোনো মানুষের জন্যই মোটামুটি পড়াশোনা করে আত্মনির্ভর হওয়ার জন্য অন্তত একুশ বছর সময় লেগেই যায়। আর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা না থাকলে ব্যক্তিস্বাধীনতা মূল্যহীন হয়ে দাঁড়ায়। মেয়েদেরকেও আলাদা করে ‘মেয়ে’ হিসেবে না ভেবে স্বাধীন মানুষ হিসেবে ভাবতে হবে। ছেলেদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স যদি একুশ হয় তাহলে মেয়েদের বেলায় সেটি আঠারো থাকবে কেন?
সায়নী সাহা
আমার মনে হয় ১৮ রাখাই দরকার। কারণ মেয়েদের বিয়ের বয়স এখন ১৮ হলেও কিন্তু দেখা যাচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে তারা নিজেদের পছন্দের মানুষের সাথে আঠারো বছর হওয়ার আগেই বিয়ে করে নিচ্ছে, ফলে এটা অপরাধ হিসেবে ধরা হচ্ছে এবং তাদের আইনত শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। এতে ছেলে ও মেয়ে উভয়েরই কেরিয়ার ও শিক্ষা নষ্ট হচ্ছে। আবার যদি ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ করা হয় তবে সেক্ষেত্রে তাদের জীবন নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে আমার মতে।
সুনীল সরকার
১৮ বছরে ভোটাধিকার থাকলে বিয়ে করতে পারবে না কেন? যদি নাগরিকত্ব আঠারোতে হয় তাহলে বিয়েও করতে দেওয়া উচিত।
রেহেসান মন্ডল
মা ও বাবা তখনই বিয়ের কথা বলে যখন তার ছেলেমেয়ে খারাপ রাস্তায় যায়। তা না গেলে কখনই বলে না। আর স্টাডিতে ভালো হলে সেবিষয়ে কথাই হবে না। মেয়েরা আঠারো বছরের আগে কতজন পালিয়ে যাচ্ছে বা লুকিয়ে বিয়ে করছে। আর একুশ হলে তো বলাই যাবে না! আমার মনে হয় বিয়ের বয়সটা ছেলে বা মেয়ে যখন ইচ্ছে হবে করবে।
অন্তরা বিশ্বাস
একজন মেয়েও একজন মানুষ। আজকাল আমরা বলে থাকি ছেলে মেয়ে উভয়ে সমান। বাস্তবে কি তাই? তাহলে একটা মেয়ের বিয়ের বয়স আঠারো বছরই রয়ে গেছে কেন? একটা মেয়েও তো তার নিজের স্বপ্নে, নিজের ইচ্ছায় পড়াশোনা নিয়ে কেরিয়ার গড়তেই পারে। তাই না? যদিও মেয়েরা আজকাল অনেক সচেতন, কিন্তু একটু মফস্বল বা গ্রামের দিকে গেলে বর্ধিষ্ণু পরিবার থেকে শুরু অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল পরিবারগুলোর মধ্যে ‘মেয়েরা একটা বোঝা’ এই চিন্তাধারাটা কাজ করে। তাই আঠারো বছর পেরোতে না পেরোতেই তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়। আর তাড়াতাড়ি বিয়ে করে দ্রুত সন্তান ধারণ এবং তাকে মানুষ করাই মেয়েদের জীবনের ধর্ম হিসাবে তুলে ধরা হয়। কিন্তু কেন? মেয়েদের কি কোনো মন নেই? স্বপ্ন নেই? ইচ্ছে নেই? যুক্তি দিয়ে জীবনে চলার যোগ্যতা নেই? একটা প্রাচীন ধারণা আরও উৎসেচকের মতো কাজ করে যে অল্প বয়সে মেয়েদের রূপ, সৌন্দর্য্য, যৌবন যেন উপচে পড়ে। যা তার স্বামীকে কামে বশ করে রাখে। একটাই প্রশ্ন — একটা মেয়ের জীবনে রূপ, যৌবন, কামই কি শেষ কথা? নিশ্চয়ই নয়। একটা মেয়ের মধ্যে বুদ্ধি, ব্যক্তিত্ব, যুক্তিসঙ্গত বিবেচনাবোধ, তুখোড় চিন্তাধারা থাকে। যেটা আমাদের সমাজের অনেক পুরুষ মানুষের ইগোকে আহত করে। তাই বলে একটা মেয়ে জীবনে বিকশিত হতে পারবে না? তাই আমি মনে করি মানবিক অধিকারে একটা মেয়ের বিয়ের বয়স ২১ করাই সমীচীন।
সমর এস
ওটা ১৬ করে দিন। কারণ আজকাল বেশিরভাগ মেয়ে ১৪-১৫-র পর আর নিজেকে সামলে রাখতে পারে না। তাই অনেকেই খারাপ ছেলেদের সংস্পর্শে চলে আসে। অসামাজিকতার থেকে বিয়ে করে নেওয়া সম্মানের।
পিউ বিশ্বাস গুহরায়
বিয়ে না করাই ভালো। কী হবে বিয়ে করে, সেই তো একঘেয়ে জীবন! তার থেকে একা থাকা ভালো। তাতে অন্তত দিনের শেষে শান্তি আছে।
পায়েল সাহা
যে মেয়ের যখন বিয়ে করতে ইচ্ছে হবে সে সেই বয়সেই বিয়ে করবে, সেটা ১৮ হোক বা ২৮। মেয়েরা নিজের জন্য কিছু করবে তারপর বিয়ে। সে নিজে সিদ্ধান্ত নেবে তার কখন বিয়ে করা উচিত।
রনিতা মন্ডল
যদি সংখ্যার দিক থেকে বিচার করা হয় তবে আমি ২১কে সমর্থন করবো। আঠারো বছর মানে একটি মেয়ে তখন দ্বাদশ শ্রেণির পড়াশোনার গণ্ডি পার করেছে সবে। অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বাবলম্বী হওয়ার রাস্তা তখনও তৈরি হয়নি বা জোর করে নিজের মতামত প্রকাশের অধিকারটুকুও তখন সে অর্থে দৃঢ় হয় না মননে। আঠারো থেকে একুশ হওয়ার এই সময়টা মানসিকভাবে নিজের মতামত প্রকাশ থেকে শুরু করে সে কী চাইছে বা কী করতে পারে ভবিষ্যতে, সে সম্বন্ধে সচেতনতা অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়। গ্রাম্য জীবনে তো বটেই, আমাদের মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের মধ্যেও আঠারো বছর বয়সের মেয়ের বিয়ে হলে পরের বছর বা তার দুবছর পরেই বংশধরের মুখ দেখার জন্য বাড়ির লোক উন্মুখ হয়ে থাকে। অর্থাৎ কুড়ি বছর বয়সেই মেয়েটিকে প্রসব করতে হয় এবং সেখানেই থেমে থাকে না, নিম্ন মধ্যবিত্ত থেকে গ্রাম্যসমাজ সব জায়গাতেই দু-তিনটি ছেলে মেয়ে না হলে গৃহস্থবাড়ি ঠিক ভরপুর হয় না! অর্থাৎ বংশবৃদ্ধির জোয়াল কাঁধে তুলে নিয়ে তার শরীরের সবটুকু অংশ নিংড়ে দিতে হয় মেয়েটিকে। আর তারপরেই শরীরে বাসা বাঁধে অপুষ্টি, নানারকম গুপ্ত স্ত্রীরোগ।
তবে, সরকারিভাবে বাধ্যতামূলক করা উচিত দুটির বেশি সন্তান জন্ম না দেওয়া। সকল মেয়েদের অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বাবলম্বী করার বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্ট আরো বেশি করে করা উচিত সরকারের। তা না হলে বিয়ের বয়স আঠারো বা একুশ যাই-ই হোক, সারাজীবন ধরে ওই বাচ্চা মানুষ থেকে রান্নাঘরের দরজা অব্দি সীমাবদ্ধ থেকে যায় তাদের জীবনযাত্রা। এটা পাল্টানো উচিত এবং তবেই সমাজ ঘুরে দাঁড়াবে একটি সুন্দর উন্নয়নমূলক সমাজ ব্যবস্থার দিকে।
(মতামত নিজস্ব)
পাঠক, আপনি কী ভাবছেন? ১৮ না ২১ এই নিয়ে তর্কে আপনি কোন দিকে এবং কেন? এই ব্লগে উঠে আসা কোনো যুক্তি নিয়ে কি প্রতিযুক্তি আছে আপনার? আপনার মন্তব্য ব্লগের কমেণ্ট বক্সে লিখে পাঠিয়ে দিন আমাদের। বিতর্ক চলতে থাকুক।
Tagsadolescence age of consent age of marriage caa child marriage corona and nursing covid19 Covid impacts on education domestic violence early marriage education during lockdown foremothers gender discrimination gender identity gender in school honour killing human rights intercommunity marriage interfaith marriage lockdown lockdown and economy lockdown and school education lockdown in india lockdown in school lockdown in schools love jihad marriage and legitimacy memoir of a nurse misogyny nrc nurse in bengal nursing nursing and gender discrimination nursing in bengal nursing in india online class online classes during lockdown online education right to choose partner school education during lockdown social taboo toxic masculinity transgender Women womens rights
Leave a Reply