ঝরাপাতার দিনগুলি
4 189আজ থেকে প্রায় বছর তিনেক আগে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার সময়, দশ-এগারো বছর বয়সের একটি বাচ্চা আমাদের বিদ্যালয়ের উপকণ্ঠে এসে হাজির হল। দেহের উচ্চতা পঞ্চম শ্রেণীর গড়পরতা ছাত্র-ছাত্রীর থেকে কিছুটা বেশিই হবে—চুল উস্কোখুস্কো, গায়ের রঙ গাঢ় শ্যামবর্ণ, ঠিক সামনের দাঁতজোড়া অসম্ভব উঁচু বলে সর্বদা ঠোঁটের বাইরেই থাকে, আর অপুষ্টিজনিত কারণে লম্বা লম্বা হাত-পা এর অস্থিসন্ধিগুলো স্পষ্টতই দৃশ্যমান। তার পরনে ছিল রঙ চটে যাওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পোশাক, যেটি তার অধিক উচ্চতার কারণে লম্বায় খাটো পড়েছে, পায়ের হাওয়াই চটির অবস্থাও তথৈবচ। অন্যরা নিদেনপক্ষে একখানি বাজারের ব্যাগ সাথে আনলেও সে সেইসব বাহুল্যের ধার ধারেনি। তার দাঁত দুইখানির আকৃতির জন্য পরবর্তীকালে সে বিদ্যালয়ে বিশেষ পরিচিতি পেলেও প্রথম দিন থেকেই তার চেহারার যে বৈশিষ্ট্যখানি আমাকে সবথেকে বেশি আকর্ষণ করত সেটি হল তার বিস্ফারিত নয়ন জোড়া।
হিকিমের মুখের ভাষা সহজবোধ্য নয়, তবে প্রাথমিক স্কুলের সহপাঠীদের মধ্যে সে সুপরিচিত। তার কারণ অবশ্য দিনকয়েকের মধ্যেই বোঝা গেল।
শৈশবে নতুন বিদ্যালয়ে ভর্তির সময় সকলেরই কিছু না কিছু প্রত্যাশা থাকে। অভিভাবককুলের একরকম—ভালো শৃঙ্খলা, উচ্চমানের পরিকাঠামো, উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা, পরীক্ষায় চমৎকার ফলাফল, উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ইত্যাদি; আর ছাত্র-ছাত্রীদের আরেক রকম—পুরোনো বন্ধু, নতুন বন্ধু, খেলাধূলা, নতুন বই, নতুন ব্যাগ, নতুন পোশাক, নতুন জুতো, নতুন নতুন আনন্দের অবকাশ ইত্যাদি। বাবা-মায়েদের প্রত্যাশা তাদের শরীরী ভাষায় প্রচ্ছন্ন থাকলেও তাদের সন্তানদের আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলো তাদের মুখমণ্ডলে কিন্তু সহজেই প্রতিফলিত হয়। আর আমাদের মত গ্রামের হাইস্কুলগুলোতে যেহেতু নতুন ছেলে-মেয়েরা আশেপাশের প্রাথমিক স্কুলগুলো থেকেই আসে, তাই অপরিচিত পরিবেশজনিত ভীতি তাদের মধ্যে বিশেষ থাকেনা। যাই হোক, ফিরে আসি আগের কথায়। নতুন ছেলেটির দৃষ্টিতে আমি এক্কেবারে প্রথম সাক্ষাতেই কী যেন একটা দেখেছিলাম যেটা এই অতিমারীর সুদীর্ঘ লকডাউনকালে স্কুলের কথা মনে হলেই আমাকে অদ্ভুতভাবে তাড়া করে বেড়ায়।
প্রথামাফিক প্রথম পরিচয়সূত্রে জানলাম ছেলেটির নাম হিকিম—হিকিম সরেন। হিকিমের মুখের ভাষা সহজবোধ্য নয়, তবে প্রাথমিক স্কুলের সহপাঠীদের মধ্যে সে সুপরিচিত। তার কারণ অবশ্য দিনকয়েকের মধ্যেই বোঝা গেল। অল্পদিনের মধ্যেই পঞ্চম শ্রেণীর বেশ কিছু ছাত্র হিকিমের বিরুদ্ধে আচরণগত নানান সমস্যা যেমন—মারধোর করা, আঁচড়ে-কামড়ে দেওয়া, ব্যাগ ফেলে দেওয়া, বই-খাতা ছিঁড়ে দেওয়া ইত্যাদির অভিযোগ জানাতে শুরু করল। পঞ্চম শ্রেণীতে আমার নিয়মিত ক্লাস না থাকায় শিক্ষক-শিক্ষিকার অনুপস্থিতিতে কালেভদ্রে হাজির হতাম। তখনই দেখেছি হিকিমের মধ্যে শিক্ষকের সাথে যোগসূত্র স্থাপনের কী আকুলতা। পাঠ্যপুস্তকটি সে-ই সবার আগে এগিয়ে দিত, শরীরী ভাষায় পরিস্ফুট হত কথা শোনার ও বলার পরম আগ্রহ। সহপাঠীদের সমবেত দাবি মেনে শ্রেণীশিক্ষক শাস্তিস্বরূপ যদিও বা কখনো তাকে একাকী পিছনের বেঞ্চে স্থান দিয়েছেন, আমি তাকে ফিরিয়ে আনতাম একেবারে সামনের সারিতে। তখন তার সেই চোখদুটিতে একাধারে অভিযোগকারী সহপাঠীদের উপরে বিজয়ের তৃপ্তি আর শিক্ষকের প্রতি অনুরাগের দীপ্তি যেন শ্রেণীকক্ষের অন্ধকারকে বিদ্যুতের মত ভেদ করে উদ্ভাসিত হত। সেইসাথে শিক্ষক পদের যাবতীয় গাম্ভীর্য ঝেড়ে ফেলে তারই মধ্যে খুঁজে পেতাম তিরিশ বছর আগের ফেলে আসা একটি মধ্যমেধার শৈশব যা তারই মতন শিক্ষকের সামান্য মনোযোগের অপেক্ষায় থাকত আর কখনো বা তা পেলে সেদিন নিজেকে ধন্য বলে মনে করত। হিকিম সাধারণত বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত হত না। তবে সপ্তাহের যে দিনটিতে মিড-ডে-মিলে ডিম ধার্য করা হত, সেদিন হিকিমের মধ্যে একধরনের নির্মল কর্মচঞ্চলতা দেখা যেত। খাদ্যের প্রতি খাদকের সেই আদিম আকর্ষণ দেখে নিজেদের আধুনিক সহজলভ্যতা এবং স্থবিরতার জন্য লজ্জিত হতাম।
‘তুই যে কাল মোদের ঘর যাবি বলেছিলি, গেলিনি কেনে?’
একদিন প্রধান শিক্ষকের কক্ষে বসে তার সাথে কোনও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করছি। এমন সময় বেশ কিছু ছেলে এসে হিকিমের ব্যাপারে কামড়ে দেবার গুরুতর অভিযোগ করল। তাদের সমর্থনে স্থানীয় অভিভাবক কয়েকজন জুটতেও বিশেষ সময় লাগল না। প্রধান শিক্ষক সেই সব ছাত্রদের মাধ্যমে হিকিমকে জরুরী তলব করে পাঠালেন। হিকিম এলে তাকে ধমক-ধামক দিয়ে পরের দিন অভিভাবক/অভিভাবিকাসহ বিদ্যালয়ে আসতে বললেন। পরের দিন হিকিম একাকী বিদ্যালয়ে এলে তাকে আবার ধরা হল। সে জানালো তার বাবা-মা উভয়েই ভোরে অনেক দূরে মাঠের কাজে বেরিয়ে যায়, ফিরতে ফিরতে বিকেল গড়িয়ে যায়। তাই তারা তার সাথে স্কুলে আসতে পারেননি। সব শুনে প্রধান শিক্ষক তাকে সাধারণ ভীতিপ্রদর্শনহেতু বললেন যে তিনি নিজেই তার বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মার সাথে দেখা করে আসবেন। পরেরদিন প্রার্থনা শেষ হবার পর যখন অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীরা শ্রেণীকক্ষের দিকে দৌড় লাগাচ্ছে, তখন দেখি হিকিম প্রধান শিক্ষকের কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
স্যার তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,
-‘কী রে! কিছু বলবি?’
হিকিম উত্তর দিল,
-‘তুই যে কাল মোদের ঘর যাবি বলেছিলি, গেলিনি কেনে?’
উত্তর শুনে তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলেন। সে যে তাঁর ভয়ে ভীত না থেকে তাঁর অপেক্ষায় অধীর হয়ে থাকবে, সেটা তিনি কল্পনাও করেননি। নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি বললেন, ‘যা, ক্লাসে গিয়ে বস, মারামারি করিস না।’
তখন কি পারব রাস্তার ধারে, জমির কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা হিকিমকে ছাড়িয়ে মোটর সাইকেলে করে বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে?
সুদীর্ঘ এক বছরকাল কেটে গেছে, শুধু দিনের হিসাবে নয়, যেন প্রতি মুহূর্তের হিসাবে তিলে তিলে। প্রশাসনিক কাজে প্রতিমাসে এক-দু’বার স্কুলে যেতে হলে হঠাৎ করেই হিকিমের সাথে দেখা হয়েছে পথের ধারে, মাঠের কিনারায়। দেহমনের গতিকে পরাস্ত করে মোটরসাইকেলটি আমাকে পৌঁছে দিয়েছে স্কুলে, দাঁড়াতে দেয়নি হিকিমের পাশে—পথের ধারে, মাঠের কিনারায়। ইতিমধ্যে বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে অশান্ত হয়ে উঠেছে সমগ্র জঙ্গলমহল। হিকিমদের সমাজের উপর প্রতিনিধিত্ব করবেন কারা—যাঁরা দু-টাকা দরে চাল জোগান দিয়েই কর্তব্য সম্পন্ন করে আত্মপ্রসাদ অনুভব করেন তাঁরা? নাকি যাঁরা ঘটা করে একদিন তাদের বাড়িতে ভাত খেয়ে তাদের হঠাৎ সংবাদের শিরোনামে নিয়ে এসে পরের দিন আকুল পাথারে ফেলে দেন তাঁরা?—এই দ্বন্দ্ব বেহিসাবী আদিবাসী মানুষগুলিকে নিয়ে ছেলেখেলা করতে থাকে। রাতারাতি ঘরছাড়া হয়ে যায় পুরুষমানুষগুলো, মেয়েদের উপরে ঘর আর সন্তান-সন্ততির দায়িত্ব অর্পণ করে। তারপর প্রকৃতির রোষ একদিন সেই ঘরের মাথার উপরের ছাতটুকুও কেড়ে নেয়। শ্রেণীকক্ষে মাষ্টারমশাই হিকিমকে সহপাঠীদের সমবেত অভিযোগের প্রতিকূল পরিবেশ থেকে সরিয়ে এনে তার জায়গা করে দিয়েছিলেন সামনের সারিতে, কিন্তু এখন সে কার কাছে অভিযোগ করবে! প্রধান শিক্ষকের কাছে একদা কৈফিয়ত চাওয়া হিকিম এখন কার কাছে প্রতিকার দাবি করবে তাই যেন ভেবে পায়না। প্রতিপক্ষ তার ধারণার জগতের বাইরে।
সম্প্রতি জুন মাসের প্রথম দিকে নির্ধারিত মিড-ডে-মিলের সামগ্রী বিতরণ করতে আবার বিদ্যালয়ে গেলাম। যদিও সরকারি নিয়মে অতিমারীর সময় লকডাউন চলাকালীন শিক্ষার্থীদের হাতে সেই সামগ্রী তুলে দেওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ, তবুও প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলগুলোতে সেই নিয়ম অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে গেলে হিকিমের মত অনেক পরিবার বাদ পড়বে। তাই মাঝেমধ্যে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের 'শ্যাম রাখি না কূল রাখি'-র মত অবস্থায় পড়তে হয়। এই পরাবাস্তবতার যুগে যখন অভিভাবক-অভিভাবিকাগণ নিজেদের সন্তানদের শ্রেণীর নাম ভুলে গেছেন, ছাত্র-ছাত্রীরা স্বাভাবিক কারণেই নিজেদের ক্রমিক সংখ্যা স্মরণ করতে পারে না, তখন হিকিম সেই রেশনের লাইনে এসে দাঁড়ায়, সভ্য পোশাকের অভাবে অথবা একদিনের জন্য হলেও স্কুল খোলার আনন্দে বিদ্যালয়ের পোশাক পরেই, আর শঙ্কিতকন্ঠে নিজেকে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র বলে ঘোষণা করে। তার অন্তর্ভেদী দৃষ্টি যা আমার বিবেকের দর্পণস্বরূপ, আমাকে বাধ্য করে অবচেতন মনে তারই মত পশ্চাত্গণনা শুরু করতে—আর ক’টা মাত্র মাস, নবম শ্রেণী থেকে মিড-ডে-মিল বন্ধ, আর হয়ত অনেক হিকিমের স্কুল আসারও ইতি। তার আগে কি স্কুল খুলবে? হিকিম কে কি আবার সামনের সারিতে বসানোর একটা সুযোগ পাব? নাকি ঝরে যাওয়া দু:স্বপ্নময় দিনগুলোর মত হিকিমরাও অকালেই ঝরে পড়বে! একদিন অতিমারী চলে যাবে, ইস্কুল আবার খুলবে, কিন্তু যদি অনেক দেরি হয়ে যায়! তখন কি পারব রাস্তার ধারে, জমির কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা হিকিমকে ছাড়িয়ে মোটর সাইকেলে করে বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে?
Tagsadolescence age of consent age of marriage caa child marriage corona and nursing covid19 Covid impacts on education domestic violence early marriage education during lockdown foremothers gender discrimination gender identity gender in school honour killing human rights intercommunity marriage interfaith marriage lockdown lockdown and economy lockdown and school education lockdown in india lockdown in school lockdown in schools love jihad marriage and legitimacy memoir of a nurse misogyny nrc nurse in bengal nursing nursing and gender discrimination nursing in bengal nursing in india online class online classes during lockdown online education right to choose partner school education during lockdown social taboo toxic masculinity transgender Women womens rights
Comments (4)
-
-
লেখাটি পড়ে অবচেতনে থাকা অনেক অনেক প্রশ্ন যেগুলির সামনে দাঁড়াতে ভয় পাই, আবার সামনে এসে দাঁড়ায়। অপুষ্ট শৈশব ও কৈশোরের সন্ধিক্ষনে দাঁড়িয়ে থাকা অনেক হিকিম নিঃশব্দে এসে দাঁড়ায়। তাদের চুলে তেল নেই। গায়ে পোশাকের উজ্জ্বলতা নেই। মনে মধুর সুখ স্মৃতি নেই। তারা যে নেই রাজ্যের বাসিন্দা। তাদের কাছে পেটের খিদে যে অনেক বড় মনের খিদের চেয়ে ।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একটিবেলা যে গরম ভাত আর সয়াবিন তুলে দিতো তাদের মুখে, মাসে একটিবার মাত্র চাল ডাল আলুতে তার কতটুকু মেটে ! আর শিক্ষা ! সেতো দ্বিতীয় সারির রাশিমালা। রাজার মিছিলে হাঁটা জনতা শিক্ষিত হলে মিছিল যে অপুষ্ট হয়ে যাবে।
আমিও একটি প্রত্যন্তের স্কুলের শিক্ষক। স্মৃতির ধূসর কোষে যে মুখগুলো আরও ধূসর হয়ে গিয়েছিলো আপনার লেখাটি পড়ে সেই ছেলেগুলো চোখের সামনে এসে দাঁড়ায়। বড় ভালো লিখেছেন তমোঘ্ন। -
লেখাটি পড়ে অবচেতনে থাকা অনেক অনেক প্রশ্ন যেগুলির সামনে দাঁড়াতে ভয় পাই, আবার সামনে এসে দাঁড়ায়। অপুষ্ট শৈশব ও কৈশোরের সন্ধিক্ষনে দাঁড়িয়ে থাকা অনেক হিকিম নিঃশব্দে এসে দাঁড়ায়। তাদের চুলে তেল নেই। গায়ে পোশাকের উজ্জ্বলতা নেই। মনে মধুর সুখ স্মৃতি নেই। তারা যে নেই রাজ্যের বাসিন্দা। তাদের কাছে পেটের খিদে যে অনেক বড় মনের খিদের চেয়ে ।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একটিবেলা যে গরম ভাত আর সয়াবিন তুলে দিতো তাদের মুখে, মাসে একটিবার মাত্র চাল ডাল আলুতে তার কতটুকু মেটে ! আর শিক্ষা ! সেতো দ্বিতীয় সারির রাশিমালা। রাজার মিছিলে হাঁটা জনতা শিক্ষিত হলে মিছিল যে অপুষ্ট হয়ে যাবে।
আমিও একটি প্রত্যন্তের স্কুলের শিক্ষক। স্মৃতির ধূসর কোষে যে মুখগুলো আরও ধূসর হয়ে গিয়েছিলো আপনার লেখাটি পড়ে সেই ছেলেগুলো চোখের সামনে এসে দাঁড়ায়। বড় ভালো লিখেছেন তমোঘ্ন।
-
লেখাটি পড়ে অবচেতনে থাকা অনেক অনেক প্রশ্ন যেগুলির সামনে দাঁড়াতে ভয় পাই, আবার সামনে এসে দাঁড়ায়। অপুষ্ট শৈশব ও কৈশোরের সন্ধিক্ষনে দাঁড়িয়ে থাকা অনেক হিকিম নিঃশব্দে এসে দাঁড়ায়। তাদের চুলে তেল নেই। গায়ে পোশাকের উজ্জ্বলতা নেই। মনে মধুর সুখ স্মৃতি নেই। তারা যে নেই রাজ্যের বাসিন্দা। তাদের কাছে পেটের খিদে যে অনেক বড় মনের খিদের চেয়ে ।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একটিবেলা যে গরম ভাত আর সয়াবিন তুলে দিতো তাদের মুখে, মাসে একটিবার মাত্র চাল ডাল আলুতে তার কতটুকু মেটে ! আর শিক্ষা ! সেতো দ্বিতীয় সারির রাশিমালা। রাজার মিছিলে হাঁটা জনতা শিক্ষিত হলে মিছিল যে অপুষ্ট হয়ে যাবে।
আমিও একটি প্রত্যন্তের স্কুলের শিক্ষক। স্মৃতির ধূসর কোষে যে মুখগুলো আরও ধূসর হয়ে গিয়েছিলো আপনার লেখাটি পড়ে সেই ছেলেগুলো চোখের সামনে এসে দাঁড়ায়। বড় ভালো লিখেছেন তমোঘ্ন।
Leave a Reply
-
খুব ভাল লাগল লেখাটি। হিকিমদেরকে পেছনের সারিতে পাঠিয়ে দেওয়ার মতো সহজ কাজ সকলেই করে এসেছে যুগ যুগ ধরে। এর বিপরীতাচরণ শুধু কঠিনই নয়, আবশ্যকও বটে। 👌