৮ই মার্চ ও যৌথ আন্দোলনের কিছু ফসল
0 230আমার মনে আছে ১৯৭৫ সালে, সারা বিশ্ব জুড়ে আন্তর্জাতিক নারীবর্ষ পালন করা হচ্ছিল, সেই সময়ে প্রথম এই বিষয়টা আমার অভিজ্ঞতার মধ্যে আসে। তখন চতুর্দিকেই আন্তর্জাতিক নারীবর্ষ নিয়ে আলাপ, আলোচনা, আলোড়ন ইত্যাদি হচ্ছিল। আমি একটা কবিতা লিখেছিলাম সেই সময়। সেটা তখন ‘এক্ষণ’ পত্রিকায় বেরিয়েছিল। সেটার নাম অবশ্য আন্তর্জাতিক নারী দিবস নয়, আন্তর্জাতিক নারীবর্ষ। আমার যেটুকু মনে পড়ছে নারী দিবসের তাৎপর্যের সঙ্গে আমার পরিচয় বোধহয় এই সময়টাতেই। এটা একেবারেই ব্যক্তিগতভাবে, মানে কোনো সংগঠনের মধ্যে দিয়ে ঘটেছিল তা নয়।
আসলে ৮ই মার্চ পালন কিন্তু আমাদের এখানে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, ১৯৫১ সালে মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি (অবিভক্ত বাংলায় চল্লিশের দশকের যুদ্ধ ও মন্বন্তরের সময় মূলত বামপন্থী মহিলাদের উদ্যোগে তৈরি হয়েছিল মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি নামে একটি বৃহত্তর মঞ্চ। দেশভাগের পর পশ্চিমবঙ্গের আত্মরক্ষা সমিতির নাম হয় পশ্চিমবঙ্গ মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি) প্রথমবার ৮ই মার্চ পালন করে । এই দিনটি তাঁরা পালন করেন আন্তর্জাতিক শান্তি দিবসের অংশ হিসাবে, যুদ্ধবিরোধী দিবস হিসাবে। কারণ ঠিক সেই সময়ে আমেরিকা আক্রমণ করেছিল কোরিয়ার উপরে। সেই সময়ে গোটা পৃথিবী জুড়ে এই ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ জানানো হচ্ছিল। মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি এই বিষয়টা নিয়েই ৮ই মার্চ পালন করেছিল কলকাতা শহরে। একটা সমাবেশ করা হয়, যেখানে মহিলারা ছাড়াও লেখক, শিল্পী, বুদ্ধিজীবী অনেকেই উপস্থিত ছিলেন এবং সেখানে একটা রেজোলিউশন নেওয়া হয়। সেই রেজোলিউশনে পাঁচ হাজার মানুষ স্বাক্ষর করেন।
তার থেকেও আরেকটু পিছনে যদি যাই, তাহলে দেখা যাবে, ৮ই মার্চ পালিত হচ্ছে অনেক দিন থেকেই। প্রথম যখন নারী দিবস পালন করার কথা উঠেছিল, তখন অন্যান্য দিনে পালন করা হত। কোনো একটা দিনে, বিশেষ করে কোনো একটা রবিবারে, বিশেষ করে যাঁরা শ্রমিক মহিলা, তাঁদের যে সংগঠনগুলো, তাঁদের মধ্যে এটা পালিত হত। এটা ১৯০৮/০৯ সাল থেকেই পালিত হতে শুরু করে। ১৯১০ সালে যখন দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সমাজবাদী মহিলাদের সম্মেলন হয় মস্কো শহরে, সেই সময়ে ক্লারা জেটকিন বলেছিলেন যে, এবার থেকে আমরা একটা নির্দিষ্ট দিনকে মেয়েদের দিন হিসাবে পালন করব। কারণ, নারী শ্রমিকের যে অবদান, শ্রমের জগতে, সেটাকে আমরা ভুলে যেতে পারি না এবং যাঁরা পুরুষ শ্রমিক, তাঁদেরও সেটাকে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। ১৯১০ সালের এই সম্মেলনের পরেও কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো দিন স্থির হয়নি। তারপর ১৯১৭ সালে রাশিয়াতে ফেব্রুয়ারি বিপ্লব সংঘটিত হয়, সেই ফেব্রুয়ারি হল রাশিয়ার ক্যালেন্ডার অনুযায়ী। আমাদের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সেটা মার্চে হয়। এবং ৮ই মার্চ তারিখে বিপ্লব শুরু হওয়ার সময় যাঁরা রাস্তায় বেরিয়েছিলেন, যে বিপ্লবের ফলে জারকে সরিয়ে দিয়ে প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র তৈরি হয়, সেই বিপ্লবে কিন্তু একটা বড় ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন পেট্রোগ্রাদের মহিলারা। তার ফলে কমিউনিস্ট মহিলাদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ১৯২২ সাল থেকে, এই ৮ই মার্চ দিনটাকে, যেহেতু পেট্রোগ্রাদের মেয়েরা রাস্তায় নেমেই বিপ্লব শুরু করেন বলা যায়, তাঁরা এই দিনটাকে পালন করা শুরু করেন। পরে সোশ্যালিস্ট, বা যারা আদৌ কোনো রাজনীতির সাথে যুক্ত নয়, সমস্ত মেয়েরাই এটাকে পালন করা শুরু করেন।
১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যখন শেষ হল, সেই সময়ে উইমেন’স ইন্টারন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফেডারেশন (WIDF) নামে একটি সংগঠন তৈরি হয়। বিভিন্ন দেশের মেয়েরা তার মধ্যে ছিলেন। প্রধানত কমিউনিস্ট মেয়েরা এর মধ্যে উদ্যোগী ছিলেন, কিন্তু আরও অনেক মহিলা, অনেক সংগঠন এর সাথে যুক্ত হন। এঁদের একটা টিম ১৯৪৮ সালে ভারতবর্ষে আসে। WIDF-এর পক্ষ থেকে দু’জন এসেছিলেন ভারতবর্ষে। তখন তাঁদের আসার ফলে অল ইন্ডিয়া উইমেন’স কনফারেন্স (১৯২৮ সালে তৈরি হওয়া মেয়েদের একটি সর্বভারতীয় সংগঠন ছিল AIWC, যার নেতৃত্বে ছিলেন প্রধানত কংগ্রেস দলের সাথে যুক্ত মেয়েরা) উইমেন’স ইন্টারন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফেডারেশনের সদস্য হয়। মহিলা আত্মরক্ষা সমিতির অনেক সদস্যও কিন্তু AIWC-র সদস্য ছিলেন। AIWC-এর পরে পরেই মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি, উইমেন’স ইন্টারন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফেডারেশনের সদস্যপদ নেয়। AIWC ও পশ্চিমবঙ্গ মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি অনেক সময়ে একসাথেও কাজ করেছে, এই দুই সংগঠনের মধ্যে যে খুব বিবাদ বা বিরোধ ছিল তা নয়, কিন্তু আত্মরক্ষা সমিতির কমিউনিস্ট সদস্যরা AIWC-এর মধ্যে থেকে শ্রমিক মেয়েদের সংগঠিত করার কাজ করতে পারেন নি। যাই হোক, ১৯৫১ সালে মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি যে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করেছিল, আমি ইতিহাস ঘেঁটে যা পেয়েছি সেই তথ্য অনুযায়ী, সেটাই হয়তো ভারতে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন। তবে এর আগে AIWC পালন করেছিল কিনা, সে বিষয়ে আমার জানা নেই।
১৯৫১ সালে মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করে বিশ্বশান্তির স্লোগানকে সামনে রেখে। এরপর ১৯৭০ সালে, ১৯১০ সালের সম্মেলনের হীরক জয়ন্তী পালন করা হয়। তখন আর মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি নেই। তখনও সর্বভারতীয় গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি তৈরি না হলেও, পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি তৈরি হয়ে গেছে। সেই সংগঠনের পক্ষ থেকে এই হীরক জয়ন্তী পালন করা হয়।
১৯৮২ সালে সমস্ত বামপন্থী মহিলা সংগঠনগুলো আবারও ৮ই মার্চ দিনটিকে যুদ্ধবিরোধী দিন হিসাবে পালন করে। মনে রাখতে হবে, ১৯১৭ সালে প্রথম যখন সোভিয়েত মহিলারা ফ্যাক্টরি ছেড়ে বেরিয়েছিল আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য, তখন তাঁদের দুটি দাবি ছিল, ব্রেড এবং পিস। কাজেই পিস বা শান্তির ধারণা ৮ই মার্চের সাথে শুরু থেকেই যুক্ত হয়ে আছে, এবং এই দাবিটা যাঁরা শ্রমিক মহিলা তাঁরাই প্রথম তুলেছিলেন। ১৯৮২ সালে কলকাতার ভারতসভা হলে সমস্ত বামপন্থী মহিলা সংগঠনগুলি মিলে একটা যৌথ কনভেনশনের আয়োজন করে। এবং সেই দিনটাকে তাঁরা যুদ্ধবিরোধী দিন হিসাবে পালন করেন।
এরপর ১৯৮৪ সালে যখন রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে চলা কথাবার্তা আচমকাই আমেরিকা বন্ধ করে দেয়, তা নিয়ে সারা বিশ্বে খুব আলোড়ন হয়। তখন পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের পক্ষে দিল্লীতে যতগুলি বিরোধী রাজনৈতিক দল ছিল, তাঁরা সবাই মিলে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ দিবস হিসাবে ৮ই মার্চকে পালন করে। সেই কর্মসূচীতে দিল্লীতে প্রায় তিন হাজার মানুষের সমাবেশ হয়েছিল।
আশির দশকের গোড়াতেই ‘সচেতনা’-র মত নারীবাদী সংগঠনগুলি তৈরি হয়ে গেছিল, যেগুলি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নয়। তার পাশাপাশি আশির দশকের গোড়া থেকেই কিন্তু বিভিন্ন মহিলা সংগঠনগুলোর মধ্যে, তাদের মধ্যে রাজনৈতিক যোগসূত্র থাকুক বা না থাকুক, একটা যৌথ কাজের ধারা তৈরি হয়েছিল। কারণ সেই সময় মথুরা ধর্ষণ মামলার মত ঘটনা ঘটে যাওয়ার ফলে তাঁদের সামলে কতগুলি নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল। ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে তাঁরা কতগুলি ইস্যু ঠিক করেছিলেন, এবং অন্যান্য বিরোধ যাই হোক না কেন, সেই ইস্যুগুলি নিয়ে একসাথে লড়া মনস্থির করেছিলেন। এর মধ্যে ছিল গার্হস্থ্য হিংসা, যার একটা বড় উদাহরণ ছিল আমাদের রাজ্যে দেবযানী বণিকের ঘটনা। যেটা নিয়ে ‘সচেতনা’ও অনেক কাজ করেছে। কিন্তু তাছাড়াও যৌন হিংসা, ধর্ষণ ইত্যাদির বিরুদ্ধে আইনের ক্ষেত্রে, ১৯৮৩ থেকে ’৮৬-এর মধ্যে দেখা গেছে, ঐক্যবদ্ধ নারী আন্দোলন। তার ফলে কিন্তু আমাদের ধর্ষণ সংক্রান্ত আইন এবং গার্হস্থ্য হিংসা সংক্রান্ত আইনগুলোতে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে, বেশ কিছু নতুন ধারা যুক্ত হয়েছে। পণবিরোধী আইনে কিছু সংযোজনী এসেছে। এইটা একেবারেই যৌথ আন্দোলনের ফসল। এটা আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ৮ই মার্চ সকলে মিলে একসাথে পালন করার তাৎপর্য আমার কাছে এইখানেই, যে সংগঠনগুলির মধ্যে যতই তফাৎ থাকুক না কেন, কতগুলো কমন ইস্যুতে মেয়েরা একত্র হয়ে লড়াই করেছে। পরে শাহবানু, রূপ কানোয়ারের সময় আমরা এটা দেখেছি, মস্ত বড় একটা পণবিরোধী মঞ্চ সর্বভারতীয় স্তরে তৈরি হয়েছিল। দুঃখের বিষয় এই, যে পরবর্তীকালে সেই যৌথ উদ্যোগের জায়গাটি নষ্ট হয়ে যায়।
১৯৮৩/৮৪ সালে, সম্ভবত ১৯৮৪ সালের ৮ই মার্চ, ছোট সংগঠন হওয়া সত্ত্বেও ‘সচেতনা’ একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী উদ্যোগ নিয়েছিল, যাতে অনেকেই যোগ দিয়েছিলেন। সেই সময় আমি পণপ্রথার বিরুদ্ধে একটা ছোট্ট নাটক লিখেছিলাম, ‘বাঁদর খেলা’। নাটকটি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’বার মঞ্চস্থ হয় ওইদিন, একবার লাইব্রেরির সামনে ও আরেকবার আর্টস ডিপার্টমেন্টের সামনে। তারপর গোলপার্কে নাটকটার তৃতীয় অভিনয় হয়। নাটকের সাথে পণবিরোধী বক্তব্য পেশ করা হয়, সাথে ছিল পোস্টার ইত্যাদি।
১৯৮৫ সালে ‘সচেতনা’র পক্ষ থেকে ত্রিকোণ পার্কে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে মেলার আয়োজন করা হয়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মেয়েরা নিজেদের হাতে তৈরি জিনিস নিয়ে এসেছিল মেলায়, তার সাথে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আমার মনে আছে, সেই বছর মুর্শিদাবাদ থেকে মুসলিম মেয়েদের গানের দল এসেছিল মেলায়। মুর্শিদাবাদের জিয়ন্তি আর ধলা নামে দুই গ্রামের মুসলিম মেয়েরা দীর্ঘদিন ধরেই বিয়ের গান গেয়ে আসছেন। এই গান বহু ক্ষেত্রেই গ্রামের পুরুষদের মতের বিরুদ্ধে গিয়েই তাঁরা গান। সেই গানের দলের মেয়েরা ‘সচেতনা’র মঞ্চে এসে বিভিন্ন গান গেয়েছিলেন। তার মধ্যে তাঁদের পরম্পরাগত গান ছাড়াও পুলিশের ঘুষ নেওয়া, পণপ্রথা, পূর্ববর্তী কংগ্রেসি সরকারের আমলের খাদ্যসংকট—এই সব বিষয়েও তাঁরা গান বেঁধেছিলেন এবং গেয়েছিলেন।
১৯৯৮ সালে রাজ্য মহিলা কমিশনে আসার পর আমি কমিশনের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের উদ্যোগ নিই। ১৯৯৮ সালে মৌলালী যুবকেন্দ্রের পাশের একটি হলে মেলার এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তখন রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন যে স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীগুলো ছিল, সেইসব গোষ্ঠীর মহিলাদের আমরা তাদের হাতে তৈরি জিনিস নিয়ে আসতে বলেছিলাম, সাথে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
যশোধরাদি (বাগচী) রাজ্য মহিলা কমিশনের সভানেত্রী হওয়ার পর ২০০২ সাল থেকে আবার সমস্ত মহিলা সংগঠনকে নিয়ে একসাথে নারী দিবস পালনের রীতি ফিরে এসেছিল। সেই সময় মহিলা কমিশন নিজের উদ্যোগে নারী দিবস উপলক্ষ ৭ই মার্চ অথবা ৯ই মার্চ অনুষ্ঠান করত, সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হত। আমার বাঁদরখেলা নাটকটিও এই সময়ে আবারো মঞ্চস্থ করা হয়। সেই দিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের যে সকল মহিলারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে লড়াই করে সফল হয়েছেন বা লড়াইয়ের নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তাঁদের সম্বর্ধনা দেওয়া হত। এবং ৮ই মার্চে সমস্ত সংগঠনগুলিকে নিয়ে কনভেশন, র্যালি বা সমাবেশের আয়োজন করা হত। ২০০৭/২০০৮ এর পর এই যৌথ উদ্যোগ ক্রমশ স্তিমিত হয়ে পড়ে।
সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির (AIDWA) প্রেসিডেন্ট হিসাবে গত ছ’ বছর মূলত আমি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। যেহেতু AIDWA-এর শাখাগুলি বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করছে, তাই বিভিন্ন রাজ্যের অবস্থানুযায়ী সেখানে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। সাম্প্রতিককালে আমরা যে ইস্যুগুলির উপর জোর দিচ্ছি সেগুলির মধ্যে অন্যতম হল মেয়েদের কাজের অধিকারের দাবি। এখন যে মেয়েরা কাজ করছে না তা নয়, কিন্তু তাঁরা যে কাজগুলো করতে বাধ্য হচ্ছেন তাতে তাঁরা ন্যায্য মজুরিও পাচ্ছেন না, এবং বিভিন্ন বিপজ্জনক অবস্থা ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে। মেয়েরা এমন অনেক কাজ করতেও বাধ্য হচ্ছেন যা ILO দ্বারা স্বীকৃতও নয়। এমনকি গার্হস্থ্য শ্রমের ক্ষেত্রেও কোনো মজুরি বা স্বীকৃতি নেই। আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের শুরুর সময়ে যে কাজের দাবি ছিল, সেই দাবিকেই আমরা এখনকার সময়ে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। এর পাশাপাশি পার্লামেন্ট ও বিভিন্ন সংসদীয় কাঠামোতে মহিলা সংরক্ষণের দাবিটিও তুলে ধরা হচ্ছে, কারণ বিভিন্ন বিল তৈরি হলেও একের পর এক সরকারই পর্যায়ক্রমে আমাদের ফাঁকি দিয়ে চলেছে। আমাদের তৃতীয় প্রধান ইস্যু হল, মেয়েদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তাদের উপর বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা বা ফতোয়া জারি করার যে সংস্কৃতি ক্রমশ মাথাচাড়া দিচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান। এই দাবিটিকেও আমরা ৮ই মার্চের সাথে যুক্ত করেছি।
ছবি : The History of Doing, Radha Kumar
Tagsadolescence age of consent age of marriage caa child marriage corona and nursing covid19 Covid impacts on education domestic violence early marriage education during lockdown foremothers gender discrimination gender identity gender in school honour killing human rights intercommunity marriage interfaith marriage lockdown lockdown and economy lockdown and school education lockdown in india lockdown in school lockdown in schools love jihad marriage and legitimacy memoir of a nurse misogyny nrc nurse in bengal nursing nursing and gender discrimination nursing in bengal nursing in india online class online classes during lockdown online education right to choose partner school education during lockdown social taboo toxic masculinity transgender Women womens rights
Leave a Reply