লকডাউনের মিম ও নারীবিদ্বেষ
1 206মেয়েদের চেহারা, মানসিকতা, বুদ্ধিবৃত্তি সবকিছুকে 'গয়ের' ধরে নিয়ে তা ফেলবার জন্য মেয়েদেরকেই পিকদান হিসেবে ব্যবহার করা এখন স্যোশাল মিডিয়া জগতের একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে খুবই চালু প্রথা। সেটা হচ্ছে মিম -এর জগত।
ছোটবেলায় আমাদের বাঙাল বাড়িতে দেখেছি বুকের ভেতর থেকে উঠে আসা কফকে বলা হতো গয়ের। ‘ভাপ নিয়া গয়ের বাইর কইরা দে’ — সর্দিকাশিতে এটা ছিল ঠাকুমার বাঁধা বুলি। সেই গয়ের ফেলবার জন্য বয়স্ক মানুষরা পিকদান ব্যবহার করতেন।
মেয়েদের চেহারা, মানসিকতা, বুদ্ধিবৃত্তি সবকিছুকে 'গয়ের' ধরে নিয়ে তা ফেলবার জন্য মেয়েদেরকেই পিকদান হিসেবে ব্যবহার করা এখন স্যোশাল মিডিয়া জগতের একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে খুবই চালু প্রথা। সেটা হচ্ছে মিম( meme)-এর জগত। মিম, সবাই জানে, কোনো ছবি, ভিডিও বা লেখা, যাকে একটু বাঁকিয়ে-চুরিয়ে, সাধারণত ঠাট্টা-বিদ্রূপের উদ্দেশ্য নিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা দ্রুত ছড়িয়ে দিতে থাকে। এটিকে কার্টুনের ছোট ভাই বলা যায়, তবে কার্টুনের থেকে বহুগুণ বেশি জনপ্রিয়। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রনায়ক, ফিল্ম স্টার, বিখ্যাত গায়ক, লেখক, ক্রীড়াবিদ কেউই মিমের এক্তিয়ার বহির্ভূত নয়। আবার মনগড়া চেহারা বা ফিগার, পশু-পাখি বা অজৈব বস্তু দিয়েও এন্তার মিম তৈরি হয়েছে।
ঠাট্টা-বিদ্রূপই এর মূল উদ্দেশ্য হলেও, খুব ঝকঝকে বুদ্ধিদীপ্ত মিম তৈরি হয় না একথা বলা যাবে না। বরং উল্টোটা। হয় এবং সেগুলো স্যোশাল মিডিয়া পাড়ায় দ্রুত দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। একটা উদাহরণ দিই। এখন সামাজিক দূরত্বের কথা এত বেশি বলা হচ্ছে। কিন্তু যুগ যুগ ধরে তো ট্রাকের পেছনে সেই লেখাই চলে আসছে — 'কিপ ডিসট্যান্স' বা দূরত্ব বজায় রাখুন — এই লেখা ট্রাকের পেছনে বা পাশে আমাদের যতই চোখে পড়ুক, আমরা কি কখনো পাত্তা দিয়েছি ?
আর একটি মিমের উল্লেখ করি। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর আপামর দেশবাসীকে ‘মিত্রোঁ’ সম্বোধন করবার অভ্যাস আছে। দু-একবার লকডাউন বাড়াবার ঘোষণার পর যেই না আবার শোনা গেল উনি জাতিকে সম্বোধন করে রাত ৮টায় ভাষণ দেবেন, অমনি তৈরি হয়ে গেল একটি চমৎকার মিম—শুধুমাত্র একটি হাত। তাতে কাঁটা দিয়ে খাড়া হয়ে উঠেছে রোমরাজি। ভয়ে, আতঙ্কে — আবার উনি কী ‘মন কী বাতে’ বলবেন, লক ডাউন ফের বাড়াবেন কি না এই আশঙ্কায়। এই মিমটি দেখে নির্মল হাস্যরস তো জাগবেই, একঘেয়েমির অবসাদও খানিকটা ঘুচবে।
এমনি সময়ে তো বটেই, করোনাকালের মতো নিদারুণ সময়েও লোকে এগুলো দেখেই হ্যা-হ্যা করে হেসে ওঠে, ঐ হাস্যরসটুকুর মধ্যে নিজের মানসিক মুক্তি খোঁজে। অবসাদ থেকে বেরিয়ে আসবার চেষ্টা করে। আবার গায়ে ছুরির মতো বেঁধে এমন মিমেরও কমতি নেই। রাষ্ট্র ব্যান করে দিয়েছে এমন উদাহরণও আছে। যেমন ‘শার্টলেস পুতিন’ সিরিজের মিমগুলি। এই মিমগুলিতে রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ঈগলের পিঠে, ভালুকের পিঠে, হাতে বন্দুক নিয়ে নানা ছবিতে খালি গায়ে শুধু ট্রাউজার্স পরা দেখানো হয়েছে। এলজিবিটিকিউ অধিকারকে অবদমনের জন্য তাঁকে গে ক্লাউন হিসেবেও দেখানো হয়েছে। আমাদের দেশে হলে রক্তারক্তি হয়ে যেত হয়ত, আমাদের রাজ্যে মিম শেয়ার করে অম্বিকেশ মহাপাত্রের কী হাল হয়েছিল তা আমরা জানি। তবে গায়ে লেগেছে বলেই এই ‘শার্টলেস পুতিন’ সিরিজের মিমগুলি সব কটাই ক্রেমলিন নিষিদ্ধ করেছে।
শুধু লিঙ্গ, গাত্রবর্ণ, স্থূলত্ব, ‘অসুন্দর’ চেহারা এবং ‘কাল্পনিক’ বুদ্ধিহীনতার কারণে মিমের জগতে অশালীনভাবে নিশানা করা হয়েছে শুধু মেয়েদের। লোকে তাতে প্রাণ খুলে হাসে, টুইটার বা ইনস্টাগ্রামে এইধরণের মিমের নীচে গাদা গাদা কুৎসিত মন্তব্য লিখে যায়। অফুরন্ত লাইক পড়ে, শেয়ার হয়।
এ তো গেল একরকম ব্যঙ্গবিদ্রূপের কশাঘাত। কিন্তু কোনও কারণ ছাড়াই শুধু লিঙ্গ, গাত্রবর্ণ, স্থূলত্ব, ‘অসুন্দর’ চেহারা এবং ‘কাল্পনিক’ বুদ্ধিহীনতার কারণে মিমের জগতে অশালীনভাবে নিশানা করা হয়েছে শুধু মেয়েদের। লোকে তাতে প্রাণ খুলে হাসে, টুইটার বা ইনস্টাগ্রামে এইধরণের মিমের নীচে গাদা গাদা কুৎসিত মন্তব্য লিখে যায়। অফুরন্ত লাইক পড়ে, শেয়ার হয়। করোনাকালে এই প্রবণতা বেড়েছে। যেহেতু বাড়ির বাইরে যাওয়া একেবারেই বারণ, অঢেল সময় এবং একঘেয়েমি থেকে মুক্তির জন্য মিমের সমাদর বেড়ে যায়। তবে লকডাউনের বাজারে সবচেয়ে বড় হাসির খোরাক যেন মেয়েরা — যদিও করোনায় তারা মরছে বেশি(২য় দফার সেরো পরীক্ষা, দিল্লি) — যারা চাকুরিরতা, তারা ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এর ঠেলায় বিপর্যস্ত এবং গৃহবধূরা অন্যদের মেজাজ মর্জি সামলাতে নিজেদের ক্ষণিক বিশ্রামটুকু খুইয়ে জেরবার।
এছাড়াও ঊর্ধগামী গৃহহিংসা, যৌন অত্যাচার, মেয়ে পাচার এবং নাবালিকা বিয়ে। কিন্তু তাতে মিম-বানিয়েদের কিছু যায় আসে না। এইসব ঘটনা-দুর্ঘটনার কোনো ছায়া তাদের সৃষ্টিতে কখনও পড়ে না। তারা বরং মিমে দক্ষিণ দিল্লির এক বোকা আবদেরে বড়লোক মেয়ের চরিত্র আমদানি করে। লকডাউনেও সে স্টারবাকস কফিশপে যাবেই যাবে। পুলিশ আপ্রাণ চেষ্টা করেও তাকে বোঝাতে পারছে না যে, কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস লকডাউনের আওতায় পড়ে না ঠিকই, কিন্তু স্টারবাকসের সেরা কফি তার মধ্যে একটি নয়। আদরের দুলালীটি তবু গাড়িতে গ্যাঁট হয়ে বসে ফোনে বেজায় চেঁচামেচি করছে। হয়ত পরিচিত প্রভাবশালীদের কাছে কর্তব্যরত পুলিশের নামে নালিশ করছে। মিমটি যেন দেখাতে চাইছে মেয়েরা কীরকম বোকা জেদি আর অবুঝ টাইপের হয়!
করোনাকে উপজীব্য করে বানানো মিমগুলো দেখলে সত্যিই তাই মনে হবে। যেন মেয়েরা হচ্ছে শরীরসর্বস্ব, বুদ্ধিবর্জিত একগুঁয়ে প্রাণী — যাদের বিন্দুমাত্র বিবেচনা বা ঔচিত্যবোধ নেই। হোমমেকার বা গৃহবধূরা মিমে সবসময়ই ঝগড়াটে হিংসুটে এবং বোকা। ফলে স্বামীটি সবসময়ই পীড়িত নাহলে ভয়ে স্ত্রৈণ।
বাস্তবে কিন্তু বাড়ির বাঁধা স্পেসে কোথায় মেয়েটি নিজের কম্পিউটারটি নিয়ে বসবে সেইটাই সে ঠিক করতে পারে না।
চাকুরিরতাদের কী অবস্থা? — ওয়ার্ক ফ্রম হোম এখন নিউ নরম্যাল। এই নতুন স্বাভাবিকতায় তৈরি মিমগুলিতে কিন্তু প্রথমেই চাকুরে মেয়েদের আক্রমণ করা হল। কাজের জায়গায় তারা প্রচন্ড সেজেগুজে যায়, আর অফিস না থাকলে বাড়িতে কী নোংরা হাল হয় তার সেটাও দেখানো হল। তার কুঁদুলে স্বভাব নিয়ে সে স্বামীর বসের সঙ্গেও বিশ্রি ঝগড়া করছে এই বোকামিও ছড়িয়ে পড়ল। ঝগড়া চলাকালীন স্বামীটির কোনো হেলদোল নেই। সে তখন সুবোধ বালক। তারপর এল ছেলেমেয়ে স্বামী সবার মুখে সেলোটেপ বেঁধে মেঝেতে জোর করে শুইয়ে রেখে লেডি হিটলারের বাড়ি থেকে অফিসের কাজ করা।
বাস্তবে কিন্তু বাড়ির বাঁধা স্পেসে কোথায় মেয়েটি নিজের কম্পিউটারটি নিয়ে বসবে সেইটাই সে ঠিক করতে পারে না। আজ এখানে কাল সেখানে করে ম্যানেজ করলেও বাচ্চাদের কলকাকলি, বড়দের হুকুম, অধৈর্য্য চিৎকার সব মিলিয়ে যে হট্টমেলা তার মধ্যেই তাকে বাধ্য হয়ে কাজ করতে হচ্ছে। এটাই 'ঘর ঘর কি কহানী'।
লিঙ্গভিত্তিক ঠাট্টাতামাশা মেয়েদের নীচ দেখাবার এবং সেই বিশ্বাস দৃঢ় করে তুলবার একটি হাতিয়ার। পিতৃতন্ত্র খুব সুচতুর ভাবে সেটিকে ব্যবহার করে।
প্রশ্ন উঠতে বাধ্য এই চোরা লিঙ্গবৈষম্য কি সত্যিই হাস্যরসের জন্ম দিতে পারে ? আরে, ও তো নিছক ঠাট্টা! বা একটু ফাজলামোও কি করা যাবে না এই ভয়ংকর সময়ে? — এই বুলিগুলোর আড়ালে যে প্রবণতা লুকিয়ে থাকে তা বাড়তে বাড়তে একসময়ে যৌনহিংসায় রূপান্তরিত হতে পারে। ঠাট্টা-ফাজলামোর অন্তরালে মেয়েদের এইভাবে নীচ ও নোংরা দেখানোর প্রবণতা কি হালকা চালে আমাদের মগজে লিঙ্গবৈষম্যকে আরো চারিয়ে দিচ্ছে না? লিঙ্গভিত্তিক ঠাট্টাতামাশা মেয়েদের নীচ দেখাবার এবং সেই বিশ্বাস দৃঢ় করে তুলবার একটি হাতিয়ার। পিতৃতন্ত্র খুব সুচতুর ভাবে সেটিকে ব্যবহার করে। মিম যেহেতু একই সংস্কৃতিতে লগ্ন বিশেষ চিন্তা, শৈলী বা প্রতীকের হাস্যরসায়িত অনুকরণ, প্রায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের গতিতেই এটি একজন থেকে অন্যজনে ছড়িয়ে পড়ে। হালে এক গবেষণায় দেখা গেছে অনলাইন হিউমারের সবচেয়ে জনপ্রিয় খোরাক হচ্ছে দুটি — যৌনতা আর লিঙ্গ। মিম-বানিয়েরা যেহেতু বেশির ভাগই পুরুষ, কোন বলির পাঁঠার ওপর তাদের খাঁড়া নেমে আসে তা দুবার ভাবতে হয় না।
হালকা চালে গভীর নারীবিদ্বেষ তুমুল ছড়িয়ে দেওয়ায় মিম হচ্ছে একনম্বর। মহামারী অতিমারী, অর্থনৈতিক টালমাটাল, সবসময়ই সে নিজের কাজে একাগ্র, গভীর মনোযোগী। ভারতের মতো দেশে যেখানে এখনো পিতৃতন্ত্রের অপ্রতিহত প্রতাপ, সেখানে মেয়েদের-আক্রমণ-করা মিমের প্রসার এবং এর কুপ্রভাব সম্বন্ধে কোনো সচেতনতা থাকবে না সেটাই স্বাভাবিক। ভেবে দেখলে এই অসচেতনতাই সর্বনাশের মূল, কারণ মিমের উপভোক্তা জানেই না এইগুলি তার মানসিকতাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, কোন সুরে বেঁধে দিচ্ছে। তার কাছে এ তো শুধু নির্দোষ ঠাট্টা বা খানিক হেসে নেওয়া।
মিমের উপভোক্তা জানেই না এইগুলি তার মানসিকতাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, কোন সুরে বেঁধে দিচ্ছে। তার কাছে এ তো শুধু নির্দোষ ঠাট্টা বা খানিক হেসে নেওয়া।
দু-একটি মিমের উদাহরণ এখানে খুব লাগসই হবে। মিমগুলির প্রধান চরিত্রে নারী। তার স্বল্প বসন এবং তা নিয়ে সে যথেষ্ট সচেতন। তার স্বল্পবাসই এখানে তার নিজের এবং অন্যের হাসির ফোয়ারা ছোটায় কারণ বেশভূষাতেই সবার দৃষ্টি আটকে থাকায় সে যে মাস্ক না পরেই বাইরে ঘুরে এল, সেটা এমনকী পুলিশও নজর করেনি। মেয়েরা যে তুচ্ছ কারণেও কী প্রবল ধোঁকাবাজ এবং সেকাজে তারা নিজের শরীরকেও ব্যবহার করতে কুন্ঠিত নয়, এই মিমগুলির প্রতিপাদ্য যেন তাই। অথচ কাজে গাফিলতি এবং চিত্তচাঞ্চল্যের জন্য পুরুষ-পুলিশকে একেবারেই দায়ী করা হল না।
জনপ্রিয় ফিল্ম সিলসিলার দুই অভিনেত্রী রেখা ও জয়ার একটি দৃশ্য ব্যবহার করে মিম তৈরি হল। তার ট্যাগলাইনে বলা হল — ‘টিফিন কৌন লেকে যায়েগা’ —টিফিন নিয়ে যাবে কে! স্পষ্টতই অমিতাভ বচ্চনের করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এই মিমের উপজীব্য।
আবার রাজনৈতিক মিমে তাকালে দেখি সেখানেও মহিলা অর্থমন্ত্রীর কাঁধে অর্থনৈতিক সর্বনাশের এবং বদবুদ্ধির দায় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার সঙ্গে থাকা দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক প্রধান একজন পুরুষ, ফলে তিনি নিমিত্তমাত্র।
অবসাদ কাটাতে যদি মিমের জন্ম হয়ে থাকে, তাহলে মিম দেখে করোনাকালে মেয়েদের ওপর চেপে বসা আরো অবসাদের ভার কাটবে কী করে তা নিয়ে কবে ভাববো আমরা? ভার্চুয়াল জগতে যে দূরত্ব থাকে তার সুযোগ নিয়ে মেয়েদের এই হেনস্থা আমাদের ঘরের লোকেরা বা খুব চেনা ব্যক্তিও করতে পারে। একটি ফেক নাম-ঠিকানাই যথেষ্ট। সাইবার ক্রাইম বিভাগ এদেশে বেশ নড়বড়ে। মিম নিয়ে নালিশ ঠুকতে গেলে অবধারিত শুনতে হবে, এতে আপনার কী ম্যাডাম? আপনার নামধাম তুলে অপমান করেছে কি? যেন নির্দিষ্টতা না থাকলে এ ধরণের অপরাধ করে পার পাওয়াই যায়। অথবা সমগ্র নারীজাতি বলে একটি ধারণার অস্তিত্ব সম্বন্ধে আমাদের আইনরক্ষকরা একেবারেই অজ্ঞ।
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়বার টীকা আবিষ্কার হয়ে গেল বলে। কিন্তু লিঙ্গবৈষম্যের সঙ্গেও লড়াই করবার মতো জবরদস্ত একটি টীকা এর মধ্যেই আবিষ্কার হয়ে গেলে ভাল হত। অতিমারীর থেকে এই বৈষম্য কোনো অংশেই কম ভয়াবহ নয়।
Tagsadolescence age of consent age of marriage caa child marriage corona and nursing covid19 Covid impacts on education domestic violence early marriage education during lockdown foremothers gender discrimination gender identity gender in school honour killing human rights intercommunity marriage interfaith marriage lockdown lockdown and economy lockdown and school education lockdown in india lockdown in school lockdown in schools love jihad marriage and legitimacy memoir of a nurse misogyny nrc nurse in bengal nursing nursing and gender discrimination nursing in bengal nursing in india online class online classes during lockdown online education right to choose partner school education during lockdown social taboo toxic masculinity transgender Women womens rights
খুব জরুরী লেখা। “মহিলা অর্থমন্ত্রীর কাঁধে অর্থনৈতিক সর্বনাশের এবং বদবুদ্ধির দায় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার সঙ্গে থাকা দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক প্রধান একজন পুরুষ, ফলে তিনি নিমিত্তমাত্র।” — নিজেই এধরণের মিম শেয়ার করেছি, বিষয়টা এত তলিয়ে দেখিনি। হালের কঙ্গনা রনৌতের বেলাও অজান্তে নারীবিদ্বেষে পা বাড়িয়েছি। আর বলি তারকার আত্মহত্যার বেলাও দেশজুড়ে এক জঘণ্য স্রোত বয়ে গেছে আত্মঘাতীর বান্ধবীকে নিয়ে। (এ জোয়ান তাগড়া রাজপুত, তার আবার মানসিক রোগ হয় কী করে! হতেই পারে না! এটাই ছিল ন্যারেটিভ। ঘটনাটিকে বিহার নির্বাচনের ইস্যু হিসেবে না ধরা মহলের মতামত এটাই) অবশ্য আমরাও চোখের সামনে দেখতে পেলাম প্রচারমাধ্যম কতটা নীচে নামতে পারে। বাংলাও পিছিয়ে নেই, পথেঘাঠে ‘হাড্ডাহাড্ডি’ শিরোনামে দায়িত্বজ্ঞানহীন বিতর্কানুষ্ঠানের চল হয়েছে।
তাগড়া জোয়ানের দেশ যতই মিমবিদ্ধ করুক মহিলাদের, ভেঙ্গে পড়া অর্থনীতিতে হাবুডুবু খাওয়া এই দেশোদ্ধারে সেই মহিলা শ্রমকেই বাজারে ঠেলে দিচ্ছে। করোনাকালে পড়াশোনায় ইতি টেনে বিয়ে দেওয়া হয়ে যাচ্ছে বিরাট সংখ্যক মেয়েদের। অকাল মাতৃত্ব, অপুষ্টি — শোষণের শেষ নেই।