• জীবনানন্দের বউ


    12    2573

    April 30, 2017

     

    jibanananda-wife

    জীবনানন্দের মরণোত্তর প্রকাশনাগুলি, যেগুলির প্রকাশ লেখকের বাঞ্ছিত ছিল কিনা তা নিয়েও কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন, তার মধ্যে সব থেকে বেশি আলোড়ন ফেলা উপন্যাস হল মাল্যবান। মাল্যবানের বউ উৎপলা যেন উঠে এসেছে গ্রিক মিথোলজির পাতা থেকে, শীতল-রুক্ষ-হৃদয়হীনা। এদিকে মৃত্যুর চার বছর আগে জীবনানন্দ তাঁর চিরাচরিত অর্থকষ্ট থেকে ক্ষণিকের মুক্তি খুঁজতে বন্ধু সঞ্জয় ভট্টাচার্যকে চিঠিতে লিখেছিলেন :

    “বেশি ঠেকে পড়েছি সেজন্যে বিরক্ত করতে হল আপনাকে। এখুনি চার পাঁচশো টাকার দরকার, দয়া করে ব্যবস্থা করুন।

    এই সঙ্গে পাঁচটি কবিতা পাঠাচ্ছি। … আমার একটা উপন্যাস (আমার নিজের নামে নয় — ছদ্মনামে) পূর্বাশা-য় ছাপাতে পারেন; দরকার বোধ করলে পাঠিয়ে দিতে পারি।”

    সন-তারিখের খতিয়ান মেলালে এই চিঠিতে উল্লিখিত উপন্যাসটি যে মাল্যবান তাতে কোনো সন্দেহ নেই। যেমন সন্দেহ নেই যেকোনো বড়ো লেখাই বস্তুত আত্মজৈবনিক। এদিকে একথাও আজ আর গোপন নেই যে জীবনানন্দের দাম্পত্যজীবন ছিল অসফল। যেমন তিনি অসফল হয়েছিলেন জীবনের আরও কয়েকটি ক্ষেত্রে। বরং বলা যায় দাম্পত্য-সম্পর্কে কাঙ্ক্ষিত উষ্ণতা আনতে কবি ও কবিজায়া উভয়েই ব্যর্থ হয়েছেন।আবার মাল্যবান-এর তুল্য নিষ্ঠুরতা জীবনানন্দ কি কোনোদিন এনেছেন তাঁর কোনো লেখায়? রবীন্দ্রনাথের রূপনারাণের কূলে জেগে ওঠার অ্যান্টিথিসিসের মতো মাল্যবান কলেজ স্ট্রিটের ভাড়াবাড়ির একতলার ঘরে রাত একটার পরও যখন জেগে ছিল, উপরের ঘরে বউ আর মেয়েকে দেখবার সাধ হয় তার। অস্তিত্ববাদী অপ্রেমের এই গল্পে বটমলি বিগল্যান্ড ব্রাদার্সের কেরানি মাল্যবান দোতলার ঘরে এসে উৎপলা-র (মাল্যবানের পলা) যে অভ্যর্থনা পায় তার মতো ভয়াবহ  নিশিযাপনের কথা দুঃস্বপ্নেও ভাবে না কোনো প্রাপ্তবয়স্ক। ঘুমন্ত বউ-মেয়েকে দেখে যখন মাল্যবানের জিভে সুস্বাদ ফিরে এসেছে, রাত্রিকে তার মনে হচ্ছে স্নিগ্ধ শারীরিক, তখনই কর্কশ হয় পলা: “ … আ গেল যা!বসলে! রাতদুপুরে ন্যাকড়া করতে এল গায়েন। হাতপা পেটে সেঁধিয়ে কম্বল জড়িয়ে একোন ঢঙের বলির-কুমড়ো সেজে বসেছে, দেখ! ওমা! ওমা — ওমা। বেরোও! বেরোও বলছি!”

    এরপর গোলা বাঙালির আর বুঝতে একটুও বাকি থাকে না যে বউয়ের সামনে যুগপৎ বেড়ালের মুখে ধরা ইঁদুর আর স্বয়ং বেড়ালের দশা জীবনানন্দেরও ছিল! আর তার সব দায় গিয়ে পড়েছে কবির তথাকথিত অসংবেদনশীল স্ত্রীর ওপর। অসংবেদনশীল কেননা কবির কাব্যভুবন থেকে বহু দূরে ছিল তার বাস। তাঁর আত্মজীবনীতেও (মানুষ জীবনানন্দ) কবিজায়া সেকথা লুকোবার চেষ্টা করেননি। কিন্তু মৃত্যুর পর যে ঢেউ উঠল জীবনানন্দকে নিয়ে, তাতে সব কিছু থিতিয়ে গেলেও গণস্মৃতিতে চিরকালের জন্য মুদ্রিত হয়ে গেল লাবণ্য দাশের অসংবেদনশীল প্রতিমা। প্রতিভা বসু , রাজেশ্বরী দত্ত , প্রণতি দে-র মতো রমণীর পাশে বেআক্কেলে ধরনের খাপছাড়া। পঞ্চাশের দশকের কলকাতায় প্রায়ই রাত নটার পর সিনেমা দেখে ফেরেন। বুদ্ধদেব-অচিন্ত্যকুমার জীবনানন্দের বাড়ি বেড়াতে এসে তাঁকে দেখে ফেলেন ঝাঁটা-বালতি হাতে। এই লাবণ্য দাশের চোখের যৎসামান্য স্পর্শ পাবার জন্য আকুল হবেন না কোনো অরুণকুমার সরকার।

    জীবনানন্দ যেমন গাঢ় অনুভবের কবি, জীবন যেমন তাঁকে প্রশ্রয় দেয়নি এতটুকু, তাতে স্ত্রীর কাছে যদি তিনি পেতেন কিছুটা লালন তবে তা আদর্শ হত। কিন্তু একথা কে না জানে জীবনের ঘন্‌চক্করে এমন কমই হয়। জীবনানন্দের মৃত্যুর পর যত স্মৃতি লেখা হয়েছে তাতে লাবণ্য হয় অনুপস্থিত, নয়তো তাঁর সম্পর্কে মন্তব্য যথেষ্ট তর্জনীপূর্ণ। যেমন ধরা যাক জীবনানন্দ গবেষক ভূমেন্দ্র গুহের কথা। জীবনানন্দচর্চায় অবদানের জন্য তাঁর কথা প্রায় সবথেকে বেশি মান্যতা পায়। ভূমেন্দ্র তাঁর ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি সারা আকাশ জুড়ে’ নিবন্ধে হাসপাতালে জীবনানন্দের শেষ কয়েক ঘণ্টার বিবরণ দিতে গিয়ে দাশগুপ্ত পরিবারের লোকেদের মধ্যে যাঁরা আসতেন তাঁদের কথা  লিখে মন্তব্য করেছেন:“ ...কিন্তু তাঁরা কেউই যা পারেননি, তা হল জীবনানন্দের স্ত্রী লাবণ্য দাশকে বেশিক্ষণের জন্য হাসপাতালে ধরে রাখতে; বস্তুত জীবনানন্দ যেদিন মারা যান, তার কয়েকদিন আগে থেকে তিনি হাসপাতালে আসা পুরো বন্ধ করে দেন। এবং মৃত্যুর সময় তিনি হাসপাতালে ছিলেন না।” এই মন্তব্য নিছক তথ্য নয় , নির্দিষ্ট দিকে আঙুলও তোলে। কিংবা ভূমেন্দ্রেরই ‘মুখ নাকি তেমন ফোটোজিনিক ছিল না’ রচনায় শিরোনামের কথাগুলি সুচরিতা দাশ বললেও লেখাটির মূল লক্ষ্য সেই লাবণ্য দাশ। শঙ্খ ঘোষকে লাবণ্য দাশ জীবনানন্দ সম্পাদনা করতে অনুমতি দিলেও শেষে বলেছিলেন মাল্যবান ছাপতে দিতে বা দেখাতে তাঁর আপত্তি আছে। প্রসঙ্গত মাল্যবান উপন্যাসটি বাংলা ভাষায় কতদূর এগিয়ে থাকা তা বোঝার ক্ষমতা হয়তো লাবণ্য দাশের ছিল না কিন্তু এমনও নয় সে উপন্যাস তিনি ধ্বংস করে দিয়েছেন। তাঁর দ্বিধা ছিল , আমাদের ধারণা পরিপ্রেক্ষিত তাঁর এই দ্বিধা তৈরি করতে যথেষ্ট জ্বালানি সরবরাহ করেছিল।

    ১৯৫৪-য় জীবনানন্দ যখন মারা যান তখন ভূমেন্দ্র গুহ কুড়ি-একুশের সদ্য যুবক। জীবনের ঢের জটিলতা বোঝার বয়সও হয়নি। তাই কি তাঁর স্মৃতিতে লাবণ্য সম্পর্কে এত নিষ্করুণ তিনি? নইলে পরিণত বয়সে আবার অন্য কথাও বলেছেন। লাবণ্য দাশের সৌন্দর্য সচেতনতার কথা বলে তিনি বলেছেন: “ জীবনানন্দ দাশ সবসময়ই তাঁর স্ত্রীকে উপেক্ষা করতেন। এমনকি তাঁর স্ত্রীও। লাবণ্য দাশ মহিলা হিসেবে অসাধারণ ছিলেন। জীবনানন্দ উৎকৃষ্ট স্বামী ছিলেন না। উৎকৃষ্ট পিতাও ছিলেন না। কাব্য নিয়েই ছিল তাঁর যত সাধনা, ধ্যান। কবিতার জন্যই সাহিত্যের জন্যই তিনি তিক্ত জীবনযাপন করে গেছেন। তিনি তাঁর স্ত্রীকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।” আবার এমন নয় যে লাবণ্য সব মুখ-বুজে সইতেন। কখনো জীবনানন্দকে মুখঝামটা দেননি, বিব্রত করেননি। জীবনানন্দের মৃত্যুর পর বাংলা সাহিত্যের নামজাদা লোকজনকে আসতে দেখে ভূমেন্দ্রকেই তো বলেছিলেন — “ ... তোমার দাদা নিশ্চয় বড়ো মাপের সাহিত্যিক ছিলেন; বাংলা সাহিত্যের জন্য তিনি অনেক-কিছু রেখে গেলেন হয়তো, আমার জন্য কী রেখে গেলেন বলো তো!” স্বামীর স্বারস্বত সাধনার সঙ্গে যাঁর কোনো যোগ ছিল না, তিনি এমন কথা বলবেন না? চল্লিশের আশেপাশে বয়স তখন তাঁর। অন্তর্মুখী জীবনানন্দের স্বভাবের প্রায় বিপরীত তিনি। তাই বলে স্বামীর শেষশয্যায় পাশে না থাকার কথা তুলে দিয়ে আসলে মান্ধাতার পিতৃদেবের আমল থেকে চলে আসা পুরুষের নিবিড় নকশাই ফুটে উঠল নাকি? এ বয়ান সর্বদাই পক্ষপাতী। প্রতিক্ষেত্রে দুটি মানুষের সম্পর্কে নারী-ব্যতীত অপরজনের সাংসারিক পারঙ্গমতার ক্ষেত্রে নীরব সবাই। ভূমেন্দ্রের পক্ষে জীবনানন্দের মতো এত বড়ো মাপের মানুষের পক্ষ নেওয়া অস্বাভাবিক নয়। সত্যিই তো জীবনানন্দের মতো কবি-লেখক আবার পাওয়া সহজ কথা নয়। কিন্তু শৈশবে পিতৃ-মাতৃহীন, অনাথ লাবণ্য গুপ্ত (বিয়ের পরে দাশ/দাশগুপ্ত)-কেও কেউ তাঁর মতো করে বুঝতে চায়নি। লাবণ্য হয়তো চেয়েছিলেন সিনেমার অভিনেত্রী হতে। সেটাও নিশ্চয় দোষের নয়। অমন উদ্বাস্তু-প্রায় পরিবারের রমা তো ওর কাছাকাছি সময়ে মহানায়িকা হয়ে উঠবেন কিংবা সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় , মাধবী মুখোপাধ্যায়রা আসবেন রুপোলি পর্দায়। নিদেন সেকেন্ড লিড বা তত গুরুত্বপূর্ণ নয় এমন রোল পেতেন। শখের দলে নাটক করেছিলেন। জীবনানন্দ সেকথা জানতেন। লাবণ্যের স্মৃতিকথা অনুযায়ী তাতে সংসারে যে আবর্ত তৈরি হয় তা সামলে ছিলেন জীবনানন্দই। হয়তো এমনও হতে পারে দাম্পত্য সম্পর্কে জীবনানন্দের সূক্ষ্মতা লাবণ্য ধরতে পারেননি। তাতেই জীবন টকে যায়নি কবির। কি করে ভুলে যাই ১৯৩০ থেকে কবির মৃত্যুর সাত বছর আগে পর্যন্ত ঘটে চলা দুনিয়াজোড়া ভয়াবহতার কথা। ১৯৪৭-এর দেশভাগে যে-কফিনে শেষতম পেরেকটি পোঁতা হয়।

    যে লাবণ্য ছাত্রাবস্থায় বিপ্লববাদী হয়ে উঠছিলেন। যিনি বিএ ক্লাসের ইতিহাসের রেফারেন্স বই হিসেবে আয়ারল্যান্ডের বিপ্লবের ইতিহাস পড়েন বলে পুলিশের এমন কুনজরে পড়ে যান যে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে পুলিশ রেড পর্যন্ত করে। তিনি কিন্তু সাধারণ ওয়াকিবহাল বাংলা-পাঠকের স্মৃতিতে জীবনানন্দের সাংসারিক অসফলতার একমেবাদ্বিতীয়ম কারণ। জীবনানন্দের মৃত্যুর পরও সংসারে খুব মর্যাদা পাননি। জীবনানন্দের চেতনা জগৎ তাঁর সঙ্গে মেলেনি, তিনি অন্য ভুবনের সন্ধানে ছিলেন বলে সমস্ত জীবন অতৃপ্তি নিয়েই কাটিয়ে গেলেন। অশোক মিত্র কবির মৃত্যুর পরের লাবণ্য দাশের কথা লিখেছেন ‘শতবার্ষিকী সমারোহের পর’ রচনায় — “লাবণ্য দাশ কিন্তু আসতেন প্রধানত আমার কাছেই, তাঁর দুঃখের ঝুলি উজাড় করে দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে। ... ত্রিকোণ পার্কে যে আত্মীয়ের বাড়িতে, আশ্রয়ে লাবণ্য দাশ তাঁর ছেলেমেয়েকে নিয়ে থাকতেন, সেখানে, তাঁর বয়ানে, বিচিত্র ঘটনাক্রম সংঘটিত হচ্ছিল। প্রকাশকরা সেখানে আসছেন-যাচ্ছেন , প্রকাশকদের ফড়েরা আসছেন-যাচ্ছেন। জীবনানন্দের অপ্রকাশিত রচনাবলী প্রকাশের মস্ত আয়োজনের কথাও শুনছেন পাশের ঘরে, লাবণ্য দাশের বিলাপ ও অনুযোগ, তাঁর সঙ্গে কেউ একটা কথাও বলছেন না, যেন জীবনানন্দে তাঁর অধিকার নেই।” বস্তুত লাবণ্যকে কেউ সেসময় বিবেচনার মধ্যেই রাখেননি। যেমন জীবনানন্দের তীব্র অর্থকষ্টের দিনে কেউ কার্যত তাঁর জন্য কিছুই করে উঠতে পারেননি। কিন্তু কবির প্রয়াণের পর বাইরের মানুষের পর্যবেক্ষণ যখন সাহিত্যে পাকা আসন পেতে শুরু করল, তখন লাবণ্য সম্পর্কে সকলেই বিগতস্পৃহ। জীবনানন্দের জীবনে লাবণ্য যেন অবাঞ্ছিত। সমীকৃত হতে থাকল মাল্যবান-পলা আর জীবনানন্দ-লাবণ্য সম্পর্ক। সবাই বিস্মৃত হলাম সাহিত্য আত্মজৈবনিক হলেও এক্কেবারে জীবনটাই সাহিত্য নাও হতে পারে। যে অচরিতার্থতার বোধ জীবনানন্দের রচনায় তা অনেক ইয়োরোপীয় লেখকেরও আছে, যদিও তাঁদের সকলের স্ত্রীর নাম লাবণ্য দাশ নয়। লেখক জ্যোতির্ময়ী–আশালতা-আশাপূর্ণাদের জীবনে প্রতিবন্ধকতার আলোচনায় এতটা আক্রমণাত্মক হয় সাধারণ পাঠক? কিন্তু লাবণ্যের জন্য রইল না কোনোই সম্মানজনক জায়গা। লাবণ্য যে জীবনানন্দের বউ!

     
     



    Tags
     



    Comments (12)
    • চমৎকার বিশ্লেষণ। যে ভাবে আলোচক লাবণ্য দেবীর অন্যলোকিত দিকগুলি তুলে ধরেছেন, তা প্রশংসনীয়। আমাদের প্রিয় কবি হলেও জীবনানন্দ যেমন দোষগুণে ভরা ছিলেন, লাবণ্যেরও তা হওয়ার পুরোপুরি অধিকার ছিল। দাম্পত্যের রসায়ন স্বামী-স্ত্রী’র মিথষ্ক্রিয়ার উপর রচিত হয়েছিল। সেখানে একজন স্বক্ষেত্রে মহত্তর হলেই অন্যজনকে হীনতার কালো রঙে এঁকে দেওয়া অনুচিত।

    • দাম্পত্য সম্পর্ক পারস্পরিক। দুজনের যেখানে সমান দায়িত্ব, সেখানে একজনকে দোষ দেওয়া যায় না।

    • bochor sholo aage ek adday bhumenda orbachin amake tiroskar korechilen jibonananda o arek kobir potnider somporke birup montobbo koray. onek ghatanar ullekh kore ja bolechilen ta onektai Srikumar-bornito onar Labany somporke poribortito mulyaoner moto. aaj bhumenda beche thakle boro khushi hoten jibonanonder bou pore. chamatkar lekha !

    • ‘এবং আলাপ’এর এই ব্লগ ভাবনা-পরিকল্পনা ও বিন্যাস কৃতিত্বের দাবী রাখে। জীবনানন্দের কাব্য ভাবনা আর সাহিত্য কীর্তির চর্চিত আলোচনার (অনেকটা একঘেয়েমি!) মাঝে এই ধরনের রচনা সত্যি ভাবায় আমাদের। নতুন ভাবানায় জারিত হোক আলাপের পাতা।

    • Stri purush nirbishese Kobider dampotya jIbon sobosomoy adorsha sukher hoy na eta jyamitir swotosiddha proman. jug jug dhore e samosya jemon ache temoni thakbe. Jibanananda somporke jantam.abar poRlam. Onuvob korlam.

    • লেখাটি ভালো লাগল । তবে কী একটা আরও যেন বাকি রয়ে গেল… এরকম মনে হচ্ছে । সে আপনার ত্রুটি নয় ।

    • লেখাটি নতুন দিশার সন্ধান দিলো। জীবননান্দ দাশ সম্পর্কিত লেখা একাধিক পড়লেও এই ধরণের লেখা পড়ার সুযোগ হয় নি।

    • নিজের আসনে বসে অন্যকে বিচার করাটাও কিছুটা আত্মজৈবনিকই হয়। দুটি মানুষই কষ্ট পেয়েছেন – দোষ কার তা সাব্যস্ত করার কি দরকার — সেটা একেবারে ঠিক মতন শুধু করতে পারতেন কবি ও কবিজায়া – বাকিরা শুধু অন্ধের হস্তী দর্শন করবেন!

    • স্বামীর শেষশয্যায় পাশে না থাকার কথা তুলে দিয়ে আসলে মান্ধাতার পিতৃদেবের আমল থেকে চলে আসা পুরুষের নিবিড় নকশাই ফুটে উঠল নাকি?

      ব্যতিক্রমী ও তথ্যসমৃদ্ধ লেখাটির জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু স্বামীর শেষ শয্যায় স্ত্রী পাশে থাকবেন, এই প্রত্যাশাও পুরুষের নিবিড় নকশা? হয়তো ‘স্বামী’ শব্দটির ঐতিহাসিক এবং ব‍্যুৎপত্তিগত ভার এখানে স্বচ্ছ চিন্তায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। হয়তো ইংরেজি spouse বা partner জাতীয় কোনো লিঙ্গভেদহীন শব্দ ব্যবহার করতে পারলে ভাল হত। জীবনসঙ্গীকে​ মরণের সময় কাছে পেতে চাইবেন না কোন নারী বা পুরুষ? একে শুধু পুরুষতান্ত্রিক দাবি বললে বোধহয় জীবনবোধের ন্যূনতাই প্রকট হয়। লাবণ্য দাশ যদি থাকতেন মৃত‍্যুশয‍্যায়, আর জীবনানন্দ শেষ দু’দিন তাঁকে দেখতে যাওয়া বন্ধ করে গড়ের মাঠে বসে কবিতা লিখতেন, তাহলে কি আপনি এক‌ই উদারতা দেখিয়ে কবিকে দায়িত্ব​ থেকে মুক্তি​ দিতেন? পিতৃতন্ত্রের বিরোধিতা অবশ্যই করতে হবে, কিন্তু তা করতে গিয়ে অতি উৎসাহে উল্টো বিপত্তি ঘটালে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করার দিকে এগোনো যায় না, বরং নারীবাদ সম্পর্কে মানুষের মনে বিরূপ ধারণা ও ত্রাসের সঞ্চার ঘটে।

      • একদম নয়। স্বামী ও স্ত্রী পারস্পরিক সম্পর্ক। ঘটনাটি ​যদি উল্টোটা হয়, তাহলেও​ কি কবির জন্য শানিত শব্দবাণ প্রয়োগ হয়না? হয় এবং আমরাই ​তা করতাম।

    • অসামান্য আলোকপাত। বহু ভাবনার দিগন্ত উন্মোচক। আমরা মেয়েরাও এই বয়ানে বিশ্বাস করে এসেছি বলে আরো অপরাধী মনে হয় নিজেকে। একপেশে পুরুষপক্ষপাতী দৃষ্টির এমনই সর্বময়তা!

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>

     



    তথ্য নীতি | Privacy policy

 
Website © and ® by Ebong Alap / এবং আলাপ, 2013-24 | PRIVACY POLICY
Web design & development: Pixel Poetics