• আদ্দিস আবাবা-র ডায়েরি


    2    155

    April 15, 2019

     

    জোসেফিন ম্‌থুঙ্গালুয়াঙ্কা আমাকে প্রথম খেয়াল করিয়ে দিলেন, আমি এক মহিলা অডিটর। এক ঝাঁক কালোকোটের মধ্যে, কামিজে অথবা স্যুটে, আমার আলাদা একটা পরিচয়। অডিট টিমের নেত্রী। বাহবা দিলেন। বাহবাটা পেয়ে ঠিক কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেব, বুঝতে পারছিলাম না।

    বহুদিন আগে একটি জুলু উপকথা অনুবাদ করেছিলাম, একটা জায়গার নাম ছিল NTUMJAMBILI ­- বাংলায় লিখেছিলাম ন্‌তুনজাম্বিলি। সেই থেকে জানি, এই ধরণের ব্যঞ্জনবর্ণের যুক্তাক্ষর দিয়ে নাম শুরু করার ধারাটি এখানে আছে। বেশ কঠিন উচ্চারণ করা। এম বা এন অক্ষর দিয়ে শুরু হচ্ছে, তার পরে আবার ব্যঞ্জনবর্ণ।  হুম্‌ম্‌ বলার সময়ে যে ম্‌ম্‌ উচ্চারণ, সেইভাবে বলতে হবে ম্‌-থুঙ্গালুয়াঙ্কা, এভাবে উচ্চারণ করা ছাড়া উপায় নেই। তা সেই জোসেফিন ম্‌থুঙ্গালুয়াঙ্কা আমাকে বললেন, আমি গর্বিত যে আপনি মহিলা হয়েও ছ’জনের এই দলের নেত্রী হয়ে আমাদের অডিট করতে এসেছেন।

    বোঝ! এমনটা তো ভেবে দেখিনি কখনো। ভারতের বাইরে অডিট করতে গেলে দেখেছি অকারণে কলার উঁচু করার এমন মওকা আসে। এবারও এল। এসেছি আদ্দিস আবাবায়, ইউনাইটেড নেশনস বা জাতিসংঘের আফ্রিকার আঞ্চলিক কমিশনে অডিট করতে। অত্যন্ত কর্মপটু এই ম্‌থুঙ্গালুয়াঙ্কা, থুড়ি জোসেফিন। এবং পোশাকে সেই রঙের ছটা যা বাদামি ও কালো চামড়ার বৈশিষ্ট্য। উজ্জ্বল ছাপা ড্রেস, সঙ্গে বড় পুঁতির মালা ও কানে বড় বড় টপ। সবটাই কালার কো-অর্ডিনেটেড।

    ইথিওপিয়ায় বেশ বড় দু-তিনটি আন্তর্জাতিক সংস্থা আছে। এক এই ‘ইকনমিক কমিশন ফর আফ্রিকা’। তাছাড়া জাতিসংঘের ছাতার তলায় বেশ কয়েকটি সংস্থা এই একই ক্যাম্পাসে। অন্যটা আফ্রিকান ইউনিয়ন। আফ্রিকার ৫৬টি দেশ ইকনমিক কমিশনের সদস্য। আর সংস্থায় গিসগিস করছেন অর্থনীতিবিদ আর সংখ্যাতাত্ত্বিক। থিংক ট্যাঙ্ক এটা। গোটা আফ্রিকা মহাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক নীতিকে হালকা গুঁতো বা কনুইয়ের ঠেলা দিয়ে পরিবর্তন করতে চেষ্টা করেন। নেগোসিয়েশন আর হ্যান্ড হোল্ডিং ওঁদের প্রিয় শব্দ। অর্থনীতিবিদের অনেকেই আফ্রিকার নানা দেশের থেকে এসেছেন। তার তলায় আছেন প্রচুর পরিমাণে পাকিস্তানি ভারতীয় কর্মীরা, মধ্যবর্তী পদগুলোয়। যাঁরা অফিসের অ্যাডমিনিস্ট্রেশন দেখেন। আর আছেন সাপোর্ট স্টাফ।

    জানা যেটা গেল তা হল, ইউনাইটেড নেশনস বা ইউ এন-এর নীতি আছে জেন্ডার ব্যালান্স রক্ষা করার। ৪০ শতাংশের বেশি নারীকে চাকরি দেবেন খাতায় কলমে এরকমই বিধি। আমরা সে শতাংশের হিসেবও অডিট করে দেখলাম। তাছাড়া আছে নানা দেশ থেকে মানুষদের চাকরি দেবার নীতিও।

    হঠাৎ পেয়ে গেলাম রত্নখনি এক। নিউ ইয়র্কে ইউ এন হেডকোয়ার্টারের করা এক সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের ওপর সার্ভে। যদিও সার্ভে রেজাল্ট গোপনীয় এবং অন্যত্র ব্যবহার করার নিষেধ থাকায় তা আর পাঠকদের কাছে পেশ করতে পারলাম না। কাজের নীতিভঙ্গ করা ঠিক নয় । তবে এটুকু বলাই যায় যে, প্রশংসনীয় উদ্যোগ হল ইউ এন-এ রয়েছে যৌন হেনস্থা সম্পর্কে জিরো টলারেন্স নীতি । অন্তত খাতায় কলমে। তবু গোপনীয়তার চাদরে ঢাকা বলেই, একটি হেনস্থার “কেস” থাকা সত্ত্বেও তা আমরা দেখতে পাইনি। আইনি কড়াকড়ি। যা মন্তব্য টিপ্পনী কেটেছি সবই ওই সার্ভে রিপোর্ট সম্বল করে।

    এসব তো গেল কেজো কথা। আদ্দিস আবাবায় তিন সপ্তাহ থাকার সূত্রে দেখতে পেলাম কত কী। নিজের চোখের দেখা-র যা মাহাত্ম্য তাইতে জানা গেল আরো কিছু। খবরের সূত্রে সর্বত্র আলোচিত - নতুন ইথিওপিয়া জন্ম নিচ্ছে, এ দেশের প্রেসিডেন্ট সালে ওয়ার্ক জেউদি একজন মহিলা, ৫০% মন্ত্রী মহিলা। সদ্য ২০১৮ তে ক্ষমতায় আসা আবি আহমেদ এই আশ্চর্য কর্মটি করেছেন। এক নতুন আকাশ খুলছে মেয়েদের জন্য। কিন্ত পথেঘাটে যে মেয়েদের দেখেছি তাঁরা কর্মী, শ্রমিক, ব্যাঙ্ক বা ছোটখাট বিজনেসের কেরানি। হাতে সস্তা কিন্তু চটকদার ব্যাগ, পায়ে হিলজুতো, পাশ্চাত্যের পোশাকে তাঁরা অফিস যান; তাঁরা ট্যাক্সি বা অটো ধরনের পাবলিক যানবাহনের অপেক্ষায়, প্রচন্ড ভিড় ট্রেনের অপেক্ষায় দাঁড়ান বাসস্টপে ও স্টেশনে; পথের দোকান থেকে কিনে খান বাদামভাজা। মানুষের ঢল নামে সকালে আর বিকেলে, অফিস টাইমের ট্রাফিকে। এই মেয়েদের দেখলে আশা জাগে। মনে হয় কর্মভূমিতে মেয়েদের যোগদানের বিষয়টি এখানে বাস্তব। এখানে মেয়েরা নিজেদের জন্য একটুকরো পৃথিবী খুঁজে নিচ্ছে।

    ছুটির দিনে রাস্তায় দেখি অন্য রকম মেয়েদের। হয়ত বাকি পাঁচটি দিনের ফ্রক বা স্কার্টের মেয়েরাই খ্রীষ্ট উৎসব টিমকেটের দিনে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রথাগত সাজে। সাদা নরম সুতির উজ্জ্বল রং উজ্জ্বলতর রোদ্দুরে ঝকঝকায়। পথে ঝাঁকে ঝাঁকে মেয়েরা দল বেঁধে, লাল বেগুনি ছাতা নিয়ে, সাদা ট্র্যাডিশনাল পোশাকে মিছিল ক’রে উৎসব পালনে নামে। তাদের ছিমছাম বাদামি সুন্দর চামড়া মনে করিয়ে দেয় ‘উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ’ শব্দযুগলের মানে। পুরুষ নারী নির্বিশেষে ইথিওপিয়ার মানুষ অসম্ভব ছিপছিপে। ভুলি না, ছোটবেলা থেকে জেনেছি এ দেশে, বা পার্শ্ববর্তী সোমালিয়ায়, দুর্ভিক্ষ আর খাদ্য সংকটের গল্প। ভুলি না এও যে আজও প্রায় প্রতি আন্তর্জাতিক খেলার মঞ্চেই, দৌড়বীর হিসেবে সোনা জিতে চলেছে ইথিওপিয়ার ছেলেমেয়েরা। যে শীর্ণতা খাদ্যহীনতার সে শীর্ণতা নয়, যে শীর্ণতা সুস্বাস্থ্য আর সু-অভ্যাসের, তাইতেই মজে যেতে পারি আমি।

    টিমকেট চলাকালে রাস্তায় তাই থিকথিক করে সেই তন্বী কৃষ্ণাঙ্গীরা, যাদের মাথায় সাদা চাদর মোড়া। ঠিক যেন হিজাব। যদিও তারা খ্রীষ্টান, কিন্তু ইথিওপিয়াতে খ্রীষ্টধর্ম বহুপ্রাচীনকাল থেকেই ইসলাম ধর্মের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে দিব্য আছে, আর তাই-ই, ইসলামের নানা প্রচলন খ্রীষ্টিয়দেরও প্রথায় ঢুকে গেছে। একটা হল এই, সাদা কাপড়ের দু’ধারে চমৎকার কারুকার্য করা পাড় বসানো ওড়নায় মাথা ঢেকে উৎসবে শামিল হওয়া। 

     

    খাবার দাবার এরা যা খায় তাতে মোটা হবার স্কোপ রাখেনি ইথিওপিয়া। এদের কোনও প্রথাগত সুইট ডিশ নেই। চিনি বস্তুটিই নাকি এ মহাদেশে ছিল না। খাবার দাবারের মূল আধার ইনজেরা আর সব্জি। মাংস। সব্জির মধ্যে বাঁধাকপি, বিট, নানা ধরনের ডাল জাতীয় বস্তু। ছোট বড় ছোলা, ছোলার ডাল, রাজমা ধরনের রান্না। আর ইনজেরা হল ফাঁপিয়ে তোলা কার্বোহাইড্রেট, কিন্তু অতি স্বাস্থ্যকর। ইনজেরায় তেলের নামগন্ধ নেই। টেফ নামের ছোট্ট পোস্তদানার মত দেখতে শস্য থেকে তৈরি। টেফলো গ্লুটেন - এখন দেশে দেশে বা পাশ্চাত্যে তাই তার এত কদর।

    ইথিওপিয়ার বিখ্যাত কফিতে কোনও চিনি দুধের বন্দোবস্ত নেই। ছোট্ট হাতলহীন কাপে কড়া কালো কফি খেয়ে নেয় ঢক করে। পথের ধারে চায়ের ঠেক যেমন ভারতে, এখানে তেমনই কফির ঠেক। ইথিওপিয়াকে ধরা হয় কফিবিন নামক আশ্চর্য যাদু বীজটির জন্মস্থান। কফির উদ্ভিদ আর কফি পানের সংস্কৃতি দুইই ইথিওপিয়ার মাটিতে জন্মেছে বলে ধরা হয়, যেমন নাকি আদি মানবী লুসি-র হাড়গোড় পাওয়া গেছে বলে এখানকার জীবাশ্ম-বন্ধু মৃত্তিকাস্তরগুলিকে “ক্রেডল অফ সিভিলাইজেশন” বলা হয়।

    ভাবা হয়, নবম শতাব্দী নাগাদ ইথিওপিয়াতে কফির বাদামগুলো থেকে কালো ওই তরল পানীয়টি আবিষ্কৃত হয়। আজ দেড় কোটি ইথিওপিয়াবাসী কফি চাষ, কফি তোলায় ব্যাপৃত। রাশি রাশি লোক গোল হয়ে টুলে বসে কফি খাচ্ছে, রাস্তাঘাটে এইটে দেখার পর মনে হয় কত চেনা এই দেশ, এই সংস্কৃতি। ‘কফি কালচার’ এতটাই মূলে সম্পৃক্ত ইথিওপিয়ায় যে ভাষা ব্যবহারে, প্রবাদে, বাগধারায়, বার বার এসে পড়ে কফি। সংস্কৃতির ভেতরে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা এই কফি কালচার। জীবনযাপন এমনকী প্রেম ভালবাসার কথাতেও কফি এসে যায় বার বার। যেমন, “বুনা দাবো নাও” শব্দবন্ধের মানে “কফি আমাদের রুটি”। আরেকটা এমন বাগধারা, “বুনা তেতু”। এই আমহারিক বাক্যাংশের মানে ‘কফিপান’ হলেও, এর অর্থ সামাজিক মেলামেশা, কফিপানের সূত্রে দেখাসাক্ষাৎ। উত্তর ভারতীয়দের ‘চায়পানি’, বা বাঙালির ‘চা খাবেন তো’, বা আরো বেশি করে ‘চায়ের আড্ডা’ মনে পড়ছে, তাই না? “আমার কফি পানের সঙ্গী নেই” - আমহারিক ভাষায় এটা বলা মানে আমি নিঃসঙ্গ।

    কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় যেমন হঠাৎ গজানো কাল্টুদার চায়ের ঠেক বা বৌদির চা অথবা গজাদার লেবু চা-এর বেঞ্চিপাতা ছোট্ট দোকান চোখে পড়ে,  গাঁয়ে-গেরামে যেমন লক্ষ্য করা যায় বাঁশের নড়বড়ে বেঞ্চি অথবা কাঠের পাটাতনে বসা গপ্পুড়ে একদল চা-খোর, হাতে ধূমায়িত কাচের গেলাস বা মাটির ভাঁড়, আদ্দিসে এসেই চোখে পড়েছিল সেরকম সব ঠেক। বুঝিনি ওগুলো কফির ঠেক। শেষমেশ লাঞ্চের পর সরকারি ছাপ্পামারা গাইড নিয়ে গেল কফি খেতে, ওরকমই এক ঠেকে। প্লাস্টিকের টুল পেতে বসতে দিল মিষ্টিমতো মেয়েরা। সামনে ধূপ-ধুনো জ্বেলে, গোল থালায় কফি বিন রেখে, কালো সরুগলা কফি-পাত্রটি ঈষৎ হেলিয়ে উনুনের ওপর রাখা - সে এক মহাযজ্ঞ।

    কফি এল হাতলহীন ছোট বাটিতে। কুচকুচে কালো কফি। চিনি চলবে কিন্তু দুধ মেশানো চলবে না। তিক্ততায় মার্কিন কফিকে পুরো চার গোলে হারিয়ে দেবে। ভীষণ মিষ্টি দেখতে সবুজ পাতা দেবে সঙ্গে - হার্বটির নাম “রু”, সেটায় আশ্চর্য সুন্দর গন্ধ। কফিতে ফেলে দিলে কফিও সুগন্ধিত, আমোদিত।

     

    শেষ করি মিউজিয়ামের গল্প করে। যেখানে লুসিকে দেখেছিলাম। আদিমাতা লুসি। ক্রেডল অফ সিভিলাইজেশন। তাই এখানেই পাওয়া গেছে এই নারীর হাড়গোড়।

    লুসি হল তিন মিলিয়ন বছর আগের নারী। পূর্ণবয়স্কা নারী। কেননা আক্কেল দাঁত অব্দি উঠে যাওয়া চোয়াল পাওয়া গেছে। দাঁত ও পেলভিক বোনের স্ট্রাকচার দেখলে বোঝা যায় যে এই প্রাণী বাঁদরের চেয়ে বেশি মানুষ। তাই এ ছিল ১৯৭৫ নাগাদ আবিষ্কৃত প্রাচীনতম মানুষ। ওর স্থানীয় নাম দেম্লেস্ক বা অনন্যা।

    আদ্দিসে এলে লুসিকে দেখা যেমন জরুরি, তেমন জরুরি হাইলে সেলেসির প্রাসাদ দেখা। এই  সম্রাট ইথিওপিয়ার নবজন্মদাতা। তাঁর দান করে যাওয়া বিশাল প্রাসাদ আজ বিশ্ববিদ্যালয়। আদ্দিস বিশ্ববিদ্যালয়ের বাড়িটির একাংশ এখন যাদুঘর। মিউজিয়ামে এথনোগ্রাফির নানা বিষয় রক্ষিত। অসাধারণ কালেকশন। সেলেসি সম্রাটের প্রাসাদের বাগানে প্রচুর পোষা সিংহ ঘুরে টুরে বেড়াত। ইতালিয়রা ১৯৩৫ সালে ইথিওপিয়ায় ঔপনিবেশিক আক্রমণ চালায়। ১৯৩৭ অব্দি চলে সেই যুদ্ধ। ইতালিয়রা সেলেসির প্রাসাদের বাগানের সিংহদের  গুলি করে মারে, একটি সিংহের স্টাফ করা দেহ দেখিয়ে সেই রোমাঞ্চকর ভয়াল ইতিহাস বলেন গাইড। প্রতি সংগ্রহালয়ে, প্রতি ক্যাথিড্রালে চিহ্ন আছে, হাতে আঁকা লোকরীতির বড় বড় প্যানেলে পটচিত্রের স্টাইলে আঁকা আছে পরবর্তী বিশাল এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে ইতালিয়দের দূরে হটিয়ে আবার ইথিওপিয়ার স্বাধীনতা অর্জনের সে ইতিহাস। যার হিরো সেলেসিই, আর কেউ নয়।

    আমরা দেখি সম্রাটের শোবার ঘর, তাঁর ডাকটিকিটের সংগ্রহ, ভারত থেকে আসা বড় বড় মানুষের সই যেমন রাধাকৃষ্ণনের, কত ছবি, উপহার… । সেলেসি ১৯৬১ অব্দি সম্রাট ছিলেন, ওই প্রাসাদও ছিল তাঁর।  ১৯৬৩ তে এখানে বিশ্ববিদ্যালয় শুরু হয়ে যায়।

    খোলা আকাশ, পাহাড়, ক্যাথিড্রালের সামনে বিশাল ঢাক বাদ্যি বাজিয়ে টিমকেট। অসামান্য স্যালাড আর ইনজেরা খাওয়া। আর অনেক অনেক দূর থেকে ভেসে আসা কার যেন বাঁশির সুর। অনেক রাত অব্দি পাশের হোটেলে শনিবার রাতে পার্টি করা ইউরোপিয় যুবক-যুবতীদের হুল্লোড়। সকালে দুপুরে পথে দেখা বেকার স্থানীয় যুবক, বৃদ্ধ ভিখিরি। ভিখিরি বৃদ্ধের চেহারা সারা পৃথিবীর যে কোনও গরিব মানুষের মত। চোখে শত শত বছরের ইতিহাস ছলকে ওঠে।

    আমি একা মহিলা, কালো ট্রাউজার আর সাদা ব্লাউজে, গলায় ইউনাইটেড নেশনস এর ব্যাজ ঝুলিয়ে আপিস যেতে যেতে ভাবি, এই পৃথিবীকে সাদাকালোয় দেখা আমার আর হল না।

     
     



    Tags
     



    Comments (2)
    • বা:! অসাধারণ ভালো লেখা। অজানা দেশ। অথচ চিরন্তন পরিচিতি র শিকড় জড়িয়ে আছে। যশোধারার লেখা এত ঝকঝকে যে অদেখা দেশ ত্রিমাত্রিক হয়ে চোখের সামনে ফুটে ওঠে। নতুন বছরের অসামান্য উপহার।

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>

     



    তথ্য নীতি | Privacy policy

 
Website © and ® by Ebong Alap / এবং আলাপ, 2013-24 | PRIVACY POLICY
Web design & development: Pixel Poetics