আলেয়া
0 86বারবার এই সন্দেহ মনে জেগেছে যে, আততায়ী সঙ্গেই আছে৷ শোবার ঘরের জানলার তাকে অফহোয়াইট সিমেন্টের মধ্যে ছোট ছোট কমলা, হলুদ আর সবুজ পাথরের মোজাইক৷ রাতে শোবার আগে পর্দা টানতে গিয়ে একটা ধাক্কা লেগেছিল৷ ....দক্ষিণের দুটোর মধ্যে একটা জানলার তাকের ওপর নিশ্চিতভাবে লেগে আছে হালকা রক্তের দাগ৷ সেই রক্তের আভাস দিয়ে টেনে টেনে কেউ যেন কিছু আঁকতে চেয়েছিল৷ অনির্দিষ্ট কিছু৷ কিন্তু নিশ্চয়ই আসল ব্যাপারটা তা নয়৷ নিশ্চয়ই এটা একটা প্রাকৃতিক ঘটনা! কাকতালীয়ভাবে মনে হচ্ছে যেন ছবি আঁকার প্রয়াস৷ আরও আশ্চর্য যে, একটা ছোট্ট ধূসর পালক আংশিকভাবে সেঁটে আছে সেই শুকনো রক্তে৷ আর পালকটার খোলা অংশ তিরতির করে কাঁপছে ফুরফুরে বাতাসে৷ তাহলে? কালকেও তো এই দাগ, পালকের এই ইনস্টলেশন ছিল না! আজকে কী করে এলো? তার মানে রাতের মধ্যেই সংঘটিত হয়েছে কোনো হত্যালীলা৷ আক্রমণ, হনন ও ভক্ষণ৷ নিঃশব্দে খুন হয়ে গেছে কেউ একজন৷ আর তারই শেষ পালকটা অন্যজনের হিংস্র বীরত্বের প্রতীক হয়ে জয় পতাকা ওড়াচ্ছে রক্তলিপ্ত বধ্যভূমিতে৷
রক্ত মুছতে হবে৷ ভদ্রস্থ, শান্ত, পরিচ্ছন্ন করে তুলতে হবে ঘরের পরিবেশ৷ হাপিস করে দিতে হবে হত্যার সামান্যতম প্রমাণটুকুও৷ তবেই সহজ হবে জীবন৷ স্বর্গীয় আনন্দে পূর্ণ হয়ে উঠবে সবকিছু৷ কিন্তু কিছুতেই পরিষ্কার করা হয়ে উঠছে না৷ এর জন্য দায়ী দুটি বিপরীতমুখী শক্তি .... ভয়, অনিশ্চয়তা, বিতৃষ্ণা জায়গাটাকে ছুঁতেই দিচ্ছেনা৷ অথচ মুছতে গেলে তো ছুঁতেই হবে৷ আবার অন্যদিকে আছে, সুবিন্যস্ত-সুগঠন কোনও কিছু থেকে চোখ ফেরাতে না পারার অপারগতা৷ সৌন্দর্য্য চেতনার পীড়ন৷ ইঞ্চি ছয়েকের সাদাটে পটভূমি৷ তার উপর রক্তের পেঁচিয়ে থাকা টান৷ তাতে সেঁটে থাকা কম্পিত শেষ পালক৷ ....অদ্ভুত এক সম্পূর্ণতা৷ একে মুছে পরিষ্কার করে ফেলতে খুবই বাধছে৷ আবার যে মুহূর্তে ওটা বধ্যভূমি, সেই মুহূর্তে হত্যাচিহ্ন মোছার জন্য স্পর্শাতঙ্ক ও অনীহা বাধা দিচ্ছে৷ পরিস্থিতির বিচলন না ঘটানোই ভালো৷ ইনস্টলেশনটি অপরিবর্তনীয় ফসিলেও পরিণত হতে পারে, আবার রোদ-বৃষ্টি-বাতাসে প্রাকৃতিকভাবে মুছেও যেতে পারে৷
দুরু-দুরু আতঙ্ক আর অস্বস্তির কাঁপুনি অনুভব করতে করতেই শুতে যেতে হচ্ছে৷ .... যে বাড়িতে আততায়ী ঘুরে বেড়ায় সেখানে শোওয়া এবং ঘুমানো একটা বিরাট জিজ্ঞাসাচিহ্ন৷ শুতে গিয়ে যে বালিশটায় মাথা রাখতে হচ্ছে তার পাশের বালিশে মাথা রেখে ঘুমোচ্ছে যে রোমশ শরীর তার হাত-পা ইত্যাদি ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেক জায়গা নিয়ে নিয়েছে৷ ঘুমন্ত অস্তিত্বটাকে কিছু বোঝানোও যাবে না৷
ঘুমন্ত অচেতনা শুধু নিজেকেই চেনে৷ জানে স্বার্থপর আরাম-মগ্নতা, যা তার নিজস্ব জীবনের কাছে একান্ত, অকাট্য দাবী৷ তাই যতই ঠেলাঠেলি করা হোক না কেন, জ্যান্ত প্রস্তরীভূতটি নড়বে না৷ কী আর করা! অতি সংগোপনে, অতি সন্তর্পণে, অতি সূক্ষ্ম দেহধারণ করে সামান্যতম বিছানা অংশকে অবলম্বন করা, আর কি৷ এবং আশা করা যে, সর্বঅশান্তিহর ঘুম আসবে হড়পা বানের মতো৷ ভাসিয়ে নেবে, ডুবিয়ে দেবে৷ ভুলিয়ে দেবে আততায়ীর আনাগোনার প্রতি সতর্কতা, কিংবা ঘাতকের নিশ্চিত অস্তিত্ব সম্পর্কে সন্দেহের জ্বালা এবং অনিশ্চয়তার নিপীড়ন৷ কখনো বা মনে হতে পারে, জেগে থাকলে খারাপ কিছু ঘটবে না৷ পুলিশ কিংবা গার্ডকে জেগে থেকেই নাইট ডিউটি করতে হয়৷ নিজেকে রক্ষা করতে গেলে কি তেমনই করা উচিত? এই সিদ্ধান্তটা নিজেকেই নিতে হবে৷ জাগবে, নাকি ঘুমোবে? কখনও কখনও ঘুমের একটা ঢুল আসে৷ কিন্তু বাতাসের পায়ে কে যেন হেঁটে যেতেই ঘোর কেটে যায়৷
সকাল বেলা রোমশ শরীর পাশ থেকে ওঠে৷ অবলীলায় পার্শ্ববর্তী সূক্ষ্ম দেহধারীকে ডিঙিয়ে চান ঘরে ঢুকে যায়৷ ফ্রিজ হাতড়ে খাবার খেয়ে অশ্রাব্য অলেখ্য কতগুলো মন্তব্য করতে করতে চলে যায় অফিসে৷ বড় বড় পর্দা ঢাকা ছায়াচ্ছন্ন ঘরগুলোতে ফিসফিসে কথা কিংবা খুস খাস পদশব্দ মেলে৷
উল্টোদিকের ফ্ল্যাট থেকে সেনবৌদির ফোন -
-- আলেয়া ঘুম ভাঙল? তোমার দরজার কাছে বাজার দিয়ে গেছে৷ দুধ আর নিউজ পেপারটাও নিয়ে নিও৷
-- হুঁ৷
-- একা আছো?
-- হ্যাঁ, মানে.... না৷
-- ওহো! কেউ আছে বুঝি? তোমার কর্তা তো দেখলাম অফিস চলে গেল৷
-- হ্যাঁ, ...হ্যাঁ৷
-- আচ্ছা ঠিক আছে৷ তুমি ব্যস্ত আছ৷ ফোন রাখলাম৷ পরে কথা হবে৷
বেলা গড়ায়৷ কাজের মহিলা এসে চা করে, খাবার বানায়৷ হঠাৎ জানতে চায় -
-- বৌদি, তোমার টিয়াটা গেল কোথায়?
-- উড়িয়ে দিলাম৷
-- কেন?
-- যদি কেউ ওকে মেরে ফেলে?
-- সেকি! খাঁচার দরজা ভালো করে আঁটা থাকলে....
-- শোনো, কোনও খাঁচারই কোনও গ্যারান্টি নেই৷ ওর ডানা আছে৷ উপায় আছে বাঁচার৷ শুধু একটু সহায়তা দরকার ছিল৷ সেটুকুই করেছি৷ ও উড়ে গেছে৷ নিজের ভালোমন্দ ও বুঝে নেবে৷ লোহার বাসর ঘরেও সূঁচের মতো ফুটো থাকে৷ হতে পারে একটা ফুটো, কিন্তু ওই একটাই যথেষ্ট৷ ....সবার তো আর ডানা থাকেনা৷ খাঁচার দরজা খুলে দিলেও তারা বাঁচেনা৷
-- উঃ! বৌদি, কী যে বল না তুমি! বাপরে বাপ! আচ্ছা, আমার তোতাটা এনে দেবো তোমায়? পুষবে? ওর একটা চোখ কিন্তু কানা৷ ঘাড়টাও একটু একপেশে হয়ে গেছে৷ বেড়ালের থাবা খেয়েছিল কিনা৷’
-- না না৷ না গো৷ এত অসহায়কে রক্ষা করা যায় না৷ ওকে বাঁচিয়ে রাখার ক্ষমতা আমার নেই৷ এখানে অনেকের আনাগোনা চলে৷ .... আনাজের ব্যাগটা ঢোকানোর সময় মনে হলো, একটা পায়ের শব্দ যেন সাবধানে সিঁড়ি দিয়ে উঠে আসছে৷ আর সেন্টের তীব্র মিষ্টি একটা গন্ধ পাচ্ছিলাম৷ অচেনা গন্ধ। অচেনা পায়ের আওয়াজ৷ কেন কেউ আসছিল বল তো? এই টপ ফ্লোরে অজানা কারোর আসার দরকারটাই বা কী?
সেন বৌদির দরজাতেও নক করলো না৷ আমার দরজাও ছুঁলো না৷ আসার আগেই নিচে নেমে গেলো৷ অনেকক্ষণ আই-হোলে চোখ লাগিয়ে রেখেছিলাম৷
-- আরে! বৌদি যে কী বলে না৷ হয়তো সে তোমার নিচের তলায় এসেছিল৷ তলা গুলিয়ে ফেলে ভুল ক’রে উঠে এসেছে৷ তারপর নিজেই ভুল বুঝতে পেরে ফিরে গেছে৷ নিচের গার্ডদের ফোন করে জিজ্ঞাসা করো না৷
-- কোনও দরকার নেই৷ তুমি কি ভাবছ, গার্ডরা সকলে বিশ্বাসযোগ্য?
-- তো? আমিও তাহলে বিশ্বাসযোগ্য নাও হতে পারি?
-- উঃ! তুমি না টগর, পারোও বটে! তুমি যাও৷ তোমার দেরি হয়ে যাচ্ছে না? মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দিতে হবে তো?
-- হ্যাঁ, ঠিক বলেছো৷ দেরি হয়ে যাচ্ছে৷ চললাম৷’
টগরমণি ছুটলো এইসব সময়নাশা কর্মনাশা গণ্ডগোল পেছনে ফেলে৷ আর তারপর? দুঃসহ সময়ের ভার আরও ওজনদার হতে থাকে আততায়ীর টেনশনে৷ দেয়াল থেকেও চুপিসারে কেউ বেরিয়ে আসতে পারে৷ কেউ আলেয়ার জন্য কাউকে সুপারিও দিতে পারে৷ ঘরবন্দী কয়েদী সে৷ খুন করতে কী বা অসুবিধা হবে?
কিন্তু অনেক বছর আগে এরকমটা সে ছিল না৷ ....অনেক বছর আগের কথাই আজ হঠাৎ ঘরের বাতাসে ফিসফিসিয়ে উঠছে৷ গাঁটছড়া বাঁধার পরে পরে বেড-পার্টনারের চোখে আলেয়ার একটা উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ছিল৷ সে কাগজের ট্রেনি রিপোর্টার৷ কাজ ছিল ইন্টারভিউ নেওয়া৷ আর বেড-পার্টনারের চাকরি তখনও ছিল দোদুল্যমান৷ আলেয়ার ছন্নছাড়া ভাবটা তাকে রাগিয়ে তুলত৷ কোনও ডিসিপ্লিন না থাকলে জীবনে কখনও দাঁড়ানো যায়!
সেদিন ছিল এক উঠতি অভিনেত্রীর ইন্টারভিউ৷ ভাড়া ঘরের চৌকাঠ পেরিয়ে আলেয়া যখন বেরোচ্ছে তখনই সেই সহবাসীটি চিৎকার করে বলেছিল,
-- স্যান্ডাক পরে যাবে না ইন্টারভিউ নিতে৷ চামড়ার জুতো বা চটি পরে যাও৷
-- এটা ছাড়া এই মুহূর্তে অন্য কোনো জুতো বা চটি তো নেই আমার৷
-- কেন নেই?
-- মানে, টাকা ....
-- চোপ ইডিয়ট! ইচ্ছে করে কষিয়ে জুতো পেটা করি৷
সময় দ্রুত বয়ে যাচ্ছিল বলে হতভম্ব আলেয়া পথে নেমে পড়েছিল৷ চিত্র-সাংবাদিক সহকর্মীর সঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ে পথেই দেখা হবে৷ সামনে কাজটা আছে৷ অদ্ভুত ঐ উষ্মা-বিস্ফোরণের আঘাত মন থেকে মুছতে মুছতে দ্রুত এগোতে হচ্ছিল৷ কিন্তু খুব দেরি হয়ে যাচ্ছিল৷ ট্রেনিদের জন্য অফিস গাড়ি দেয়নি৷ বাতাসে ভর করে ছুটছিল ওরা৷ মন্টি ক্যামেরার ব্যাগ নিয়ে, আর আলেয়া নোটবুক, পেন, টেপরেকর্ডার নিয়ে৷ নির্দিষ্ট সময়ের পনেরো মিনিট বাদে ওরা পৌঁছেছিল৷ হাট করে দরজা খোলা মধ্যবিত্ত পুরোনো বাড়িটায় ঢুকতে ঢুকতেই শুনতে পাওয়া যাচ্ছিল পুরুষ গলার হুঙ্কার৷ স্বরটি দাবী করছিল উঠতি অভিনেত্রীর দিক থেকে আজকের ইন্টারভিউ ক্যানসেল করা হোক৷ নতুবা মান থাকে না৷ সাক্ষাৎকার কখনও নির্দিষ্ট সময়ের পর থেকে শুরু হতে পারে না৷ পৃথিবীর কোথাও এটা হয় না৷ কোনো এক নারীকণ্ঠ খুবই বোঝানোর চেষ্টা করছিল পুরুষটিকে যে, তার খুব ইচ্ছা ইন্টারভিউটা দেওয়ার৷ এটা তার প্রথম সাক্ষাৎকার যেটা কাগজে বেরোবে৷ এটার উপর তার অনেক কিছু নির্ভর করছে৷ খুব জরুরি এটা৷ মাত্র পনেরো মিনিট দেরির জন্য ইন্টারভিউ ক্যানসেল করা তার কাছে বিলাসিতা৷
এইরকম ঘনীভূত গোলমালের মধ্যে মন্টি আর আলেয়া হাজির হল৷ উঠতি আর্টিস্ট ক্লিষ্ট মুখ সহাস্য করে ফেলল৷ সাক্ষাৎকার তাকে দিতেই হবে৷ অপরপক্ষেরও সেটা নিতেই হবে৷ মেয়েটি বললো,
-- আমার শ্বশুরমশাই অসুস্থ৷ চলুন আমরা রুফ গার্ডেনে গিয়ে বসি৷ প্লিজ, আপনারা দুজনে দু’টো চেয়ার নেবেন একটু?
-- হ্যাঁ, হ্যাঁ শিওর৷
তিনজন তিনটে সবুজ প্লাস্টিকের চেয়ার নিয়ে হুড়মুড়িয়ে সিঁড়ি দিয়ে উঠছিল৷ অন্ধকার সরু সিঁড়িটা ওদের পৌঁছে দিচ্ছিল খোলা ছাদে৷ যেখানে, ‘রুফ গার্ডেনে’ অতি অবহেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল গুটিকয় নয়নতারা, বেল, গাঁদা আর দোপাটির টব৷ কিন্তু সিঁড়ির মাঝামাঝিতেই ‘ধপাস... দম্!’ ...একটা আওয়াজ এবং কিছু একটা বস্তু অভিনেত্রীর গায়ে এসে পড়ল সপাটে৷
মন্টি ততক্ষণে ছাদে৷ তার পেছনে আলেয়া। আলেয়ার ভয়ার্ত জিজ্ঞাসা
-- কী হল?
একই সঙ্গে সে পেছন ফিরে দেখলো, অভিনেত্রী টাল সামলাচ্ছে৷ আর তার হাতের চেয়ারের ওপর একটি ধেড়ে-ধ্বস্ত কাবলি জুতো৷ হি হি হি হি করে শুকনো হাসিতে ফেটে পড়ে মেয়েটি জানাল, তার বেটার হাফটি তার সঙ্গে মস্করা করছে৷
-- ও ভীষণ কিউট, জানেন৷ কী যে করে না! আসুন আসুন৷ শ্বশুরমশাইকে নিয়ে শাশুড়ি মা ব্যস্ত৷ তাই দেখুন না, গাছগুলোর কী দশা হয়েছে! এখানেই আমরা বসি, হ্যাঁ? চিলেঘরের ওপাশে পাঁচ-ছ’টা ডালিয়া ফুটেছে৷ ছবি তুললে ওখানে তুলবেন, প্লিজ৷’
কত ঘটনা....। কত ছবি.... ৷ সব সিনেমার মত ভেসে যায় কিংবা বন বন করে ঘোরে চারপাশে৷ বসে বসে নিজের আঙুলের কর গুনতে গুনতে, হাতের রেখা দেখতে দেখতে চোখ ঝাপসা হয়ে আসে৷ শেষবারের মত দুই হাতের তালুর ভাগ্যরেখা দুটি বিদ্যুতের মত চমকায় এবং অবশেষে মনে হয়, হাতের তালু দুটি গ্লাভসে ঢাকা৷ কোনো রেখার কোনো চিহ্নই নেই৷ কখনও ছুরি-কাচি ধরা ডাক্তারের মত, কখনও বা গ্লাভস পরা ঠাণ্ডা মাথার ঘাতকের মতো রেখাহীন তালু ও আঙুলগুলো তাকে তাড়া করে ফেরে৷ বড় একজিকিউটিভের স্ত্রীরা কোনও ছোট কাজে যুক্ত থাকতে পারে না৷ তাহলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায়৷ তারা অবশ্যই কোনো সৃষ্টিশীল গোছের কাজ করতে পারে৷ তাছাড়া তথাকথিত সমাজসেবা গোছের কিছু চালাতে পারে৷ এগুলোর একটা জাঁক আছে৷ আর এই দু’টোর একটাও যারা পারে না, তারা বাতিল৷ বাঁচারও যোগ্য না৷ অতএব ....৷
ওপেন-কিচেন বোঝাই হয়ে আছে অস্ত্রশস্ত্রে৷ সেসব ছিটকে ছিটকে আসে এবং অনির্দিষ্ট কক্ষপথে সাঁ-সাঁ করে ঘোরে। ঘোরে আর ঘুরেই চলে৷ স্যাট স্যাট করে কোনও কোনওটা হাতে চলে আসে৷ এইভাবেই এক্ষুনি হাতে এসেছে একটা জবরদস্ত কিচেন নাইফ৷ যে কোনো চামড়া ঢাকা নরম মাংসের মধ্যে ঢুকে গেঁথে যাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট৷ দুটো আততায়ী-হাত ধরে আছে সেটা৷
এমন সময় কলিংবেল৷ মোক্ষম মাহেন্দ্রক্ষণে৷ এক বার, দু’ বার, তিন বার। অর্ধেক বেল বাজে৷ তারপর ওদিক থেকে চাবি ঘুরিয়ে দরজা খুলে ফেলা হয়৷ দড়াম ক’রে৷ .... মালিক ফিরেছে৷
-- কী হচ্ছিল এখানে? হাতে ওটা কী? কী হলো কী, জবাব পাচ্ছিনা কেন?
-- কিচেন গোছাচ্ছি৷
-- চোপ৷ সাতটা’য় পার্টি আছে না? এখনও কেন ড্রেস হয়নি?
ছুরিটা যথাস্থানে রেখে দিতে হয়৷ যে ঘাতক সারাদিন সারারাত ঘরের মধ্যে ঘুরে বেড়ায় সে এখন দেওয়ালে সেঁধিয়ে গেছে হয়ত৷ গোপন চোখে রক্তের প্যাঁচের মধ্যে পালকের ইনস্টলেশন আস্বাদিত হয়৷ গা শিরশির করে৷
গাড়িতে উন্নত-থুতনি রোমশ ব্যক্তি একটাও বাক্যব্যয় করে না৷ মাঠ-ঘাট-অন্ধকার পেরিয়ে গাড়ি চলতে থাকে৷
-- পার্টিটা কোথায়? এত অন্ধকার চারদিকে!
-- স্টপ কোশ্চেনিং৷ ইডিয়ট৷
বেপথে অপথে, হালকা থেকে গাঢ় অন্ধকারে গাড়ি ঢুকে চলে৷ কতক্ষণ আর জেগে থাকা যায়? ঢুলুনি লাগে৷ ঢুলুনি থেকে হঠাৎই হড়পা বান ডাকে ঘুমের৷ সর্বঅশান্তিহর নিদ্রা ....৷
Tagsadolescence age of consent age of marriage caa child marriage corona and nursing covid19 Covid impacts on education domestic violence early marriage education during lockdown foremothers gender discrimination gender identity gender in school honour killing human rights intercommunity marriage interfaith marriage lockdown lockdown and economy lockdown and school education lockdown in india lockdown in school lockdown in schools love jihad marriage and legitimacy memoir of a nurse misogyny nrc nurse in bengal nursing nursing and gender discrimination nursing in bengal nursing in india online class online classes during lockdown online education right to choose partner school education during lockdown social taboo toxic masculinity transgender Women womens rights
Leave a Reply