Books published by Ebong Alap.
আমরা এমন এক সময়ে বাস করি যখন চারিদিকে তথ্যের বিস্ফোরণ ঘটে চলেছে কিন্তু দুনিয়া পাল্টে ফেলা এই তথ্য বিস্ফোরণের যুগেও বহু জরুরি বিষয় – যেগুলো আমাদের জানা ও বোঝা দরকার – সেগুলো সাধারণ নাগরিকের সহজ নাগালের মধ্যে আসছে না। ‘এবং আলাপ’ নামে আমাদের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিশ্বাস করে তথ্যের বণ্টন এবং সহজবোধ্য আলোচনা হওয়াটা জরুরি যাতে সাধারণ মানুষ তাঁদের সামাজিক ভূমিকা নিয়ে আরো বেশি করে ভাবতে পারেন এবং এর মধ্যে দিয়ে একটা সক্রিয় জনমত গড়ে ওঠার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
লিঙ্গভিত্তিক হিংসাকে যদি আমরা একটা পিরামিড হিসেবে কল্পনা করি, তবে তার শীর্ষবিন্দুতে রাখতে হবে নারী বা তৃতীয় লিঙ্গের জীবনহানি-কে। ঠিক তার পরের ধাপেই থাকবে তাদের উপর যৌন অত্যাচার। তারপর নামতে নামতে সেই পিরামিডের শেষ ধাপ বা ‘ভূমি’-তে অবশ্যই থাকবে লিঙ্গায়িত ভাষা, যা বিভেদকে মননে, মেধায়, চিন্তনে,সংস্কৃতিতে চিরস্থায়ী করছে। মেয়ে হয়েও কেউ পরিবারের দায়িত্ব নিলে বাবা-মা খুশি হয়ে বলেন- ‘ও তো আমাদের ছেলে-ই।’ যুক্তিবাদী প্রবন্ধ লিখলে শুনতে হয়, ‘বোঝাই যায় না কোনো মেয়ের লেখা!’ পুরুষ গৃহকর্ম করলে ‘তোমার বর রাঁধতেও পারে!’ ধরনের আপাত-নিরীহ বিস্ময় দুর্লভ নয়। ‘মেয়ে হলেও অঙ্কে ভালো’, ‘মেয়ে হলেও ফুটবলার’, ‘মহিলা-ক্রিকেট’, ‘মেয়ে-ডাক্তার’ এসব তো চলতি ভাষার অংশ৷ অন্যদিকে শোনা যায়, ‘Be a man’, ‘Have guts’, ‘ছেলেদের কাঁদতে নেই’। প্রচারের ম্যানিফেস্টোয় ‘ছাপান্ন ইঞ্চির বুক’ উল্লিখিত হয়। তাঁর বিপক্ষ রাহুল গান্ধী বলেন, তিনি নাকি এক মহিলার (প্রতিরক্ষামন্ত্রী) পিছনে লুকিয়ে পড়েছেন। মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডনাল্ড ট্রাম্প যত্রতত্র নারীবিদ্বেষী ভাষা ব্যবহার করেন। ভাষার নিপীড়ন ক্ষমতাকে সন্দেহ করা তাই অবশ্যকর্তব্য হয়ে পড়ে।