27-02-2024 18:47:09 pm
Link: https://ebongalap.org/purushmanush-mr-india
এই বছরেরই ২৯ জুনের ‘দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এ অনলাইন রিমঝিম জৈনের একটা লেখা পড়েছিলাম। গতকাল আবার অনেক দিন পরে সেই লেখাটার দিকে চোখ পড়ে গেল। রিমঝিম বলছেন, রঙ দে বসন্তী ছবিটা রিলিজ করার পরে, পুণেতে এক দল কলেজ-পড়ুয়া ছেলেকে ধরে এনে একটা আলোচনায় বসানো হয়েছিল। বিষয়টা ছিল, পুরুষদের ঝুঁকি নেওয়ার স্বভাব। যাদের বাছা হয়েছিল তাদেরও ক্যাম্পাসে ‘দুরন্ত’ বলে খ্যাতি ছিল। ৫২টি ‘ডেয়ার’ বা কেয়ার করি না’র লিস্টি থেকে তারা এক নম্বর হিসেবে বেছে নিয়েছিল ওই ছবিটিতে সেই অনেক উঁচুতে একেবারে কিনারায় দাঁড়িয়ে আমির ও তার বন্ধুদের চোঁ চোঁ করে বিয়ার খাওয়ার সিনটা। ওই যে ঝুঁকি নেওয়া সেটাই একটা দারুণ বাহাদুরি! এটা পড়লে বোঝা যায় মোটর বাইক যারা বিক্রি করেন, তাঁরা বিজ্ঞাপনে কেন ওইরকম ঝুঁকি নিয়ে বাইক চালানোর দৃশ্য রাখেন, আমার ওদের ইডিয়ট মনে হতে পারে, কিন্তু অনেক ছেলের কাছে ওরা হিরো। এ কথাও ঠিক যে রোড রেজ-এ মারামারি করা, প্লেনে বোমা আছে বলে ভুয়ো ফোন করে মজা পাওয়া, অচেনা মেয়েকে বাহাদুরি দেখাতে প্রেম নিবেদন করা, এসব আমাদের নওজওয়ানরাই বেশি করে। যখন দুর্বার মহিলা কমিটির আন্দোলন আর এইড্স রোগ ঘিরে যৌনপল্লীর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তখন দেখতাম ছেলেরা সাবধানতাকে পৌরুষের অভাব মনে করে বলে কন্ডোম পরতে চায় না। পৌরুষের এমনই মহিমা যে মহিলা যৌনকর্মীরাও প্রথম দিকে ‘অসাবধানী’ পুরুষদেরই পছন্দ করতেন। পরে সচেতনতা তৈরি হয়।
রিমঝিম বর্ণিত এই আলোচনা থেকে এবং ছেলে হয়ে বড় হয়ে ওঠার আমাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকেও আমরা জানি ছেলেদের সাহসি হতে হয়, ভীরু ছেলে ছেলেই নয়, কারণ তার ‘হাতে নাই ভুবনের ভার, ওরে ভীরু।’ ছোটবেলা থেকেই ছেলেরা জানে তাদের কী রকম হওয়া দরকার, যারা পারে না, লজ্জায় মরে।
এই অবধি খুব একটা নতুন কথা নেই, এগুলো আমরা মোটামুটি জানি। আমরা এও জানি যে ‘সত্যিকারের পুরুষ’ হওয়ার আরেকটা জরুরি চিহ্ন হল মারকাটারি রাগ। আমাদের দেশের সমাজ দর্পণ হিসেবে অনেক সময়ই ধরে নেওয়া হয় বাণিজ্যিক হিন্দি ছবিকে। যেমন রিমঝিমের ওই আলোচনার ক্ষেত্রে পৌরুষের রূপায়নের আলোচনার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল, রঙ দে বসন্তী! তেমনিভাবে আমরা অনেক আলোচনা শুনি যে কীভাবে সত্তর থেকে আশির দশকে হিন্দি ছবিতে রোম্যান্সের জায়গায় আস্তে আস্তে ‘রাগ’ হিরোর প্রধান চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছিল—আর এই রাগের জাতীয় ধারক ও বাহক হিসেবে বহু বছর রাজত্ব করলেন দীওয়ার-এর অমিতাভ বচ্চন। এখন সরকার জাতীয় কিছু ছবিতে তিনি এক ধরণের শীতল হিংস্রতার কুটিল ও সফল রূপ দেন, যেটা আবার আমাদের জাতীয় স্তরের অনেক রাজনীতিবিদদের জীবনে খুন আর ক্ষমতার ঘনিষ্ঠ সর্ম্পকের উত্তরণের আয়নাও বটে। সময় বদলেছে, সিস্টেমের বিরুদ্ধে লড়া যুবকের হিংস্রতা আর সিস্টেমের পরিচালকের ঠান্ডা হিংস্রতা তো এক হতে পারে না। তবে হিংস্রতা ‘কমন’ থেকে যায়।
গত তিরিশ-চল্লিশ বছরে আমাদের সমাজ জীবনে রাগের গল্পটা মনে হয় অনেকটা বদলে গিয়েছে। সত্তর-আশির দশকে রাগের লক্ষ্য যদি ছিল রাষ্ট্র, এখন যতদূর দেখি সেটা আর ততটা নেই। সামাজিক অবিচার, পিছিয়ে পড়া, বেকারি ইত্যাদি বিভিন্ন দায় থেকে রাষ্ট্র বেশ সফলভাবে বেরিয়ে গিয়ে সরকারি স্তরে ফাঁকা বুলি, সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিশ্বাসে সাম্প্রদায়িক সুড়সুড়ি ইত্যাদি দিয়ে ভালই চালাচ্ছে। সবচেয়ে বড় বদল যেটা ঘটে গিয়েছে সেটা হল, এখন ক্রোধের লক্ষ্য হল আমাদের দেশের মানুষদেরই একাংশ। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, এবং নারী।
এই কারণেই, ভারতীয় পুংত্বের গঠনকে বোঝবার চেষ্টা আরও বেশি করে জরুরি হয়ে উঠেছে। ছেলেদের মধ্যে লিঙ্গভিত্তিক হিংসা বন্ধ করার চেতনা তৈরি করতে হলে প্রশ্নটার আরও গোড়ায় পুরুষ হওয়া মানে কী এবং কীভাবে সেটা নানা রকমের হিংস্রতার ওপরে আধারিত, সেটা বুঝতে হবে। পারিবারিক পরিসরে হিংস্রতা, সাম্প্রদায়িক মতামতে ও ব্যবহারে হিংস্রতা, চাকরি ও ব্যবসার ক্ষেত্রে হিংস্র প্রতিযোগিতা যা বারবার শারীরিক হিংস্রতার স্তরে নেমে আসে, এসবের মধ্যে দিয়ে লালিত পৌরুষ-ধারণা হিংস্রতাকে আত্মরক্ষার একমাত্র উপায় বলে বিশ্বাস করে। আজ যদি ঘরে বাইরে আপনি অনেকের সঙ্গে কথা বলেন দেখবেন সংখ্যালঘুদের প্রতি হিংস্র মনোভাব কীরকম ভাবে সংখ্যাগুরুর আত্মরক্ষার জন্যে জরুরি বলে অনেকটাই সফল ভাবে ছড়িয়ে গিয়েছে। যেন আমাদের যত সমস্যা তার সব কিছুর জন্য সংখ্যালঘুরাই দায়ী। সম্প্রতি বাজারে খেলতে নামা সদগুরু বলে একজন সেদিন টেলিভিশনে বললেন, যে মুসলমানদের সংখ্যাবৃদ্ধি, এবং তার ফলে ডেমোগ্রাফিক বদলই দেশের মূল সমস্যা। এর চেয়ে বড় মিথ্যা কিছু হতে পারে না, কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখুন পাবলিক এই সব মতামত কী রকম গিলছে। বহু তরুণদের মনে মেয়েদের প্রতি যে বিদ্বেষ যৌন অত্যাচার করে মেয়েদের ‘সবক’ শেখাতে চাইছে, একটু খুঁড়লে দেখবেন তার পেছনেও এক আত্মরক্ষার ধারণা। শিক্ষাক্ষেত্রে, কর্মক্ষেত্রে এই নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী, পরিবারে, সমাজে যুগ যুগ ধরে চলে আসা প্রাধান্যকে চ্যালেঞ্জ করা নতুন কণ্ঠস্বর ‘পৌরুয’কে বিপন্ন করে তুলছে, তাই আক্রমণ বাড়ছে। সবরকম সুবিধাভোগী মিস্টার ইন্ডিয়া লড়ছেন আত্মরক্ষার জন্য!!
আবার চলচ্চিত্রে ফিরে আসা যাক। অনেক বছর আগে আপাতদৃষ্টিতে ধর্ষণ-বিরোধী একটি ছবি ইনসাফ কা তারাজু নিয়ে অনেক বির্তক হয়েছিল। সমালোচকরা বলেছিলেন, এই ছবিটিতে এমনভাবে ধর্ষিতাকে দেখানো হয়েছে যাতে ধর্ষকামকেই প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এইভাবেই, রিমঝিম বলছেন, যে আমাদের মিডিয়াতে যে ভাবে হিংস্রতাকে দেখানো হয়, তাতে আপাতদৃষ্টিতে তার নিন্দা করা হচ্ছে মনে হলেও আসলে সেটাকে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়। যারা রেপ করছে আর যারা রেপিস্টদের আমাদের হাতে দাও বলে চিৎকার করছে, তারা আসলে একই হিংস্রতার পূজারী। যে পরিবার ‘অনার কিলিং’ করছে, তার হিংস্রতা অবশ্যই সামাজিক প্রশ্রয় পাচ্ছে। ‘লাভ জিহাদ’ ইত্যাদি নানানভাবে প্রেমের ওপর গণ্ডী টানা হচ্ছে যাতে সমাজের ‘পবিত্রতা’ বজায় থাকে। এই সব আক্রমণে সংখ্যালঘু আর মেয়েরা সমান লক্ষ্য, তাদের সিদ্ধান্তের কোনও অধিকার নেই। হিংস্রতার ছবি সর্বত্র। এমন কী আমাদের ক্রিকেটে, ফুটবলে প্রায় প্রতিটি প্রচারে বারবার ফিরে আসছে হিংস্র পুরুষের ছবি, যুদ্ধ আর কোতল করার কথা। ভিরাট কোহলি যেন ‘ম্যায় ভুখা হুঁ’ বলে চিৎকার করছেন।
রিমঝিম লিখছেন সমাজকর্মী অভিজিত দাস ও সতীশকুমার সিং পুরুষদের সঙ্গে বহু দিন কাজ করেছেন। তাঁরা বলছেন এই দীর্ঘ সময় ধরে অনেক মহিলার সঙ্গে কথা বলে ওঁরা দেখেছেন যে এমনকী যে সব মহিলাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আছে, যাঁরা সমাজে প্রতিষ্ঠিত, তাঁরাও স্বাধীন ভাবে চলা ফেরা করতে, বা নিজেদের জীবনের সিদ্ধান্ত নিজেরা নিতে পারেন না। তাঁদের ক্ষেত্রেও পণ, কন্যাভ্রূণ হত্যা, সম্পত্তির অসম অধিকার, জন্ম নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা ইত্যাদি ব্যাপারে সিদ্ধান্তের স্বাধীনতা নেই। পাশাপাশি, সাধারণভাবে মেয়েদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা নিয়ে অবহেলা এবং ঘরে বাইরে হিংস্র আক্রমণের শিকার হওয়া চলতেই থাকছে।
লিঙ্গ আর ক্ষমতার যোগাযোগ নিয়ে পুরুষদের সচেতন করার কিছু প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে মহারাষ্ট্রে ‘মেন এগেইনস্ট ভায়োলেন্স অ্যান্ড অ্যাবিউজ’ আর ‘সমঝদার জোড়িদার’, উত্তর প্রদেশে ‘মেন’স অ্যাকশন ফর স্টপিং ভায়োলেন্স এগেইন্স্ট উইমেন’, উত্তর ভারতে ‘চুপ্পি তোড়ো, হিনসা রোখো’ – ধরণের সংগঠনগুলো অনেক গ্রামে, গোষ্ঠীতে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাব ফেলতে সমর্থ হয়েছে। ‘ফোরাম টু এনগেজ মেন’ নেটওয়র্ক আর জাতীয় স্তরের ক্যামপেন ‘এক সাথ’- এর মধ্যে দিয়ে এই প্রচেষ্টা আরও ছড়িয়েছে। (প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে সুন্দরবন অঞ্চলে বা পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন কলেজে এবং আলাপ যে লিঙ্গ সচেতনতা নিয়ে কাজ করে চলেছে, তাতে সব সময়ে পুরুষদের সঙ্গে আলাপের ওপরে জোর দেওয়া হয়।)
আমাদের দেশে উচ্চবর্ণ যেমন মনে করে না, দলিতদের সমান অধিকারের কোনও প্রশ্ন ওঠে, বড়লোক বা মধ্যবিত্তরা যেমন মনে করে না গরিবদের সমান প্রয়োজন থাকতে পারে, তেমনি পুরুষরাও মনে করে না যে মেয়েরা সমান। পুরুষের যে একটা বিশাল অসম অধিকার বোধ, সেটা আমাদের পুরাণ, ধর্ম, উত্তরাধিকারের সামাজিক এমন কী আইনি ধারণা ইত্যাদি এক বিশাল বিশ্বাস আর ব্যবহারের ইতিহাস জুড়ে তৈরি, একজন ব্যক্তি পুরুষকে লিঙ্গসাম্যে বিশ্বাস করতে হলে এক বিশাল পাথরকে ছুঁড়ে ফেলতে হয়।
এই বোধে পৌঁছনোর প্রথম ধাপ হল সমাজ, পরিবারে, নিজের ভেতরে গেঁথে দেওয়া ধারণাগুলোকে প্রশ্ন করা। নিজেকে এই প্রশ্ন করা: আমি কি অন্যায় সুবিধা ভোগ করছি? আমি কি আমার পুরুষ হয়ে জন্মানোর সুযোগ নিয়ে আমার মেয়ে কলিগ, বউ, মেয়ে, মা, প্রেমিকা এদের নানানভাবে অন্যায় মেনে নিতে বাধ্য করছি, এরা মেয়ে বলে? এইভাবে আস্তে আস্তে বাবা ভাবে, মেয়ে কেন মেয়ে বলে ডাক্তারি পড়তে পারবে না? কেন ওকে অন্য শহরে চাকরি করতে যেতে দেব না? আমার বউ কেন রান্নাঘরে সব কাজ করবে, আমি কেন সাহায্য করব না? এইভাবে একজন পুরুষ একজন মেয়েকে গোটা মানুষ হিসেবে দেখতে শেখে।
ব্যাপারটা সহজ নয়, এই বোধ শুধু ভালোবাসা দিয়ে হয় না। আমরা অনেক সময় আমাদের চেয়ে খাটো মনে করেও কাউকে ভালোবাসতে পারি, যেমনভাবে পোষা প্রাণীকে আমরা ভালোবাসি, যেমনভাবে কিছু সাদা মানুয কালোদের ভালোবাসত, যেমন ভাবে বহু পুরুয বউদের ভালোবাসে। মেয়েটিকে সমান আর সম্পর্কে সাম্য মেনে নিতে নিজের মধ্যে অনেক বদল আনতে হয়, মাঝে মাঝে ভাবি আমি যে এত সব লিখছি, আমিও তো সবটা বা অনেকটাই এখনও পারিনি। এ অনেকটা সেই সংকটের মত যখন মানুষ জেনেছিল পৃথিবীকে ঘিরে সূর্য ঘোরে না, আমরা বিশ্বসংসারের কেন্দ্র নই। বা এখন যেমন অনেক বাম মানুষেরা বুঝতে পারছেন, যে লেনিনের ‘কী করিতে হইবে’ বা মাওয়ের ‘রেড বুক’ দিয়ে নতুন দুনিয়া হবে না—কিন্তু একটা লম্বা আর জোরালো শিক্ষা থেকে বেরিয়ে নতুন করে ভাবা বড্ড কঠিন, মনে হয় সব অবলম্বন চলে গেল, হেরে গেলাম, ছোট হয়ে গেলাম। মনে রাখা দরকার মেয়েদের আলাদা কিন্তু সমান বলে মেনে নিতে গিয়ে বহু পুরুষের এই সংকট দেখা দেয়।
তাই এই বদলে সাহস যোগানোর জন্য সমমনস্ক পুরুষদের এক জায়গায় হওয়া দরকার। এটা আমি বুঝতে পারি যখন চারিদিকে মুসলমান বিদ্বেষ শুনে শুনে শরীর খারাপ লাগতে থাকে, কোনো বন্ধুকে ফোন করি, সাম্প্রদায়িকতাকে গালাগালি করি, একটু বাতাসের জন্য। আমার বিশ্বাসে আমি একা নই, এটা জানাটা খুব জরুরি। মহারাষ্ট্রের অনেক গ্রামে পুরুষদের দল যখন একত্রিত হয়েছে, বেশ কিছু ক্ষেত্রে পণ প্রথা কমেছে, সম্পত্তির ওপর স্বামী আর স্ত্রীর যৌথ মালিকানা স্বীকৃত হয়েছে, মেয়েদের গ্রামসভা আবার চালু হয়েছে, মেয়েরা পঞ্চায়েতে প্রার্থী হয়েছে, মন্দিরে ঢোকার অধিকার পেয়েছে, সামাজিক সম্মান বাড়ায়, পরিবারের ভেতরেও অসাম্য কমেছে।
আরেকটা যেটা গুরুত্বপূর্ণ দিক সেটা হল পিতৃতন্ত্র নিয়ে ভাবনা পুরুষদের (এবং মেয়েদেরও) অন্যান্য অসাম্য নিয়েও ভাবতে সাহায্য করে। যেমন পুরুষ ভাবতে শুরু করে উচ্চবর্ণের লোকরা যেমন আমাদের অনেক মন্দিরে ঢুকতে দেয় না, আমিও আমার বউকে দিই না। ওরা যেমন আমাকে অশুচি মনে করে, আমিও তো তেমন মেয়েদের মাসিকের সময় অশুচি মনে করি। ওদের ব্যবহারটা যদি অন্যায় হয়, আমারটাও অন্যায়।
এই বদলে যাওয়া পুরুষদের ওপর আক্রমণও নেমে আসে। মহারাষ্ট্রের শোলাপুর জেলার বোরগাঁও গ্রামের এমন একজন পুরুষ, মানিকচাঁদ ধনশেট্টি বলেছেন কীভাবে উনি ওঁর মা, আর বউয়ের হয়ে কথা বলায় প্রথম দিকে ওঁকে পরিহাস, ভয় দেখানো, একঘরে হওয়া—এইসব সামলাতে হয়েছে। গোটা পরিবার এককাট্টা হয়ে লড়তে হয়েছে।
মানিকচাঁদের মত পুরুযরাই আমাদের নতুন মি: ইন্ডিয়া।
Link: https://ebongalap.org/purushmanush-mr-india