20-02-2024 21:12:06 pm
Link: https://ebongalap.org/trans-inclusive-workplace-guideline-and-queer-lit-fest
জেন্ডার সহায়িকা । জানুয়ারি ২০১৯ ।
স্পটলাইটে ওরিনাম এবং ডাইভার্সিটি ডায়লগস এর উদ্যোগে ভারতীয় কর্মক্ষেত্রে ট্রান্সজেন্ডার+ মানুষের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে গাইডলাইন এবং কলকাতা ক্যুইয়ার সাহিত্য উৎসব
ভারতে কর্মক্ষেত্রে রূপান্তরকামী+ মানুষের অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে গাইডলাইন ও সার্ভে
ভারতে রূপান্তরকামী ও অন্যান্য বিকল্প লিঙ্গ পরিচয়ের মানুষদের জন্য কর্মক্ষেত্রে যথার্থ সুযোগসুবিধা ও অধিকার নিশ্চিত করতে চেন্নাইয়ের ওরিনাম এবং বেঙ্গালুরুর ডাইভার্সিটি ডায়লগস এর উদ্যোগে একটি নির্দেশিকা প্রকাশিত হয়েছে। ভারতীয় কর্মক্ষেত্রে প্রায় প্রতি পদক্ষেপে লিঙ্গ ও যৌন পরিচয়ের ভিত্তিতে বৈষম্য ও বিরূপ ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশিকা প্রথম প্রকাশিত হয় ২০ নভেম্বর, ২০১৮-য় ট্রান্সজেন্ডার ডে অফ রিমেমব্রেন্স উপলক্ষ্যে। এরপর ডিসেম্বর ১৭ তারিখে ট্রান্সজেন্ডার বিল প্রকাশের পর ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে Supporting Gender Affirmation : Towards Transgender+ Inclusive Workplaces in India নামে গাইডলাইনটি দ্বিতীয়বার প্রকাশ করা হয়।
কর্মক্ষেত্রে সবরকমের সুযোগসুবিধায় রূপান্তকামী মানুষদের অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে এই গাইডলাইনে বিভিন্ন সংস্থার হিউম্যান রিসোর্স বিভাগে কী ধরনের নীতি ও কর্মসূচি নেওয়া দরকার সেগুলি নির্দিষ্ট করেই তৈরি হয়েছে এই গাইডলাইন। মূল যে বিষয়গুলির উপরে জোর দেওয়া হয়েছে সেগুলি হল, কর্মচারীদের সুরক্ষা, লিঙ্গ-নিরপেক্ষ নীতি ও সংযোগ ব্যবস্থা, রূপান্তরকামী ও অন্যান্য বিকল্প যৌন পরিচয়ের মানুষদের অন্তর্ভুক্ত করে এমন কর্মী নিয়োগ ব্যবস্থা চালু করা, সাজপোশাক ও বাথরুম ব্যবহারের নিয়ম সংক্রান্ত বদল, সংবেদনশীলতা ও সচেতনতা মূলক প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্য বীমা ও চিকিৎসার ব্যয় বহন সংক্রান্ত নীতির ক্ষেত্রে এই ধরনের কর্মীদের কথা মাথায় রাখা এবং রূপান্তরনের প্রক্রিয়ায় রয়েছেন এমন কর্মীর জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা। এছাড়াও, রূপান্তরনের প্রক্রিয়ায় রয়েছেন এমন কর্মীদের জন্য বিশেষ নির্দেশাবলী এবং কর্মীদের নির্দিষ্ট সুবিধা পাওয়ার জন্য কিছু বিশেষ কৌশলও গাইডলাইনে বলা রয়েছে।
নির্দেশাবলীর পাশাপাশি, এই গাইডলাইনে বিশেষ সংযোজন হিসেবে রয়েছে আরো দুটি গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক। ভারতে এরকম কী কী সংস্থা রয়েছে যারা রূপান্তরকামী ও অন্যান্য বিকল্প লিঙ্গ পরিচয়ের কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করে কাজ ও কাজের নীতি তৈরি করতে উৎসুক, তাদের একটি তালিকা তৈরি করেছে ওরিনাম। এই তালিকা থেকে যেকোনো ব্যবহারকারী এইধরনের সংস্থাগুলির নাম পেতে পারেন। নিচে ওরিনামের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকার লিঙ্কটি দেওয়া হল।
সংস্থার তালিকা দেখতে ক্লিক করুন
এছাড়াও, ওই ওয়েবসাইটেই রয়েছে আরো একটি সার্ভে ফর্ম। এখানে যেকোনো ব্যবহারকারী তাঁর অভিজ্ঞতা অথবা তাঁর আশেপাশের কারো অভিজ্ঞতা থেকে জানা এরকম যেকোনো ভারতীয় সংস্থা, যারা রূপান্তরকামী মানুষদের অন্তর্ভুক্ত করে কাজ করতে উৎসুক, সেগুলির নাম নথিভুক্ত করতে পারেন। যিনি এই সার্ভের ফর্মটি ভর্তি করবেন, তাঁর নাম ও পরিচয় অজ্ঞাত রাখার সুবিধাও দেওয়া আছে এই ফর্মে। এই ফর্মের মাধ্যমে শুধুমাত্র জেন্ডার-এফার্মেটিভ সংস্থাগুলির তালিকা আরো সমৃদ্ধ হবে তাই নয়, ফর্মের বিস্তারিত খুঁটিনাটি থেকে একদিকে যেমন এই সংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যাবে, তেমনই অন্যদিকে কর্মক্ষেত্রে ট্রান্সজেন্ডার মানুষের লাগাতার সমস্যার মুখোমুখি হওয়া এবং কর্মহীন থেকে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে সরাসরি সমাধান পাওয়া যেতে পারে। নিচে ওরিনামের ওয়েবসাইট থেকে ফর্মটির অনলাইন লিঙ্ক দেওয়া হল।
[ উৎস : ভার্তা; অনলাইন পাতাটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে ]
কলকাতা ক্যুইয়ার লিটেরেরি ফেস্টিভ্যাল
ওয়েস্টবেঙ্গল ফোরাম ফর জেন্ডার এন্ড সেক্সুয়াল মাইনরিটি রাইটস এর উদ্যোগে ৫ জানুয়ারি ২০১৯ এ কলকাতার ম্যাক্সমুলার ভবনে অনুষ্ঠিত হল কলকাতা ক্যুইর লিটেরেরি ফেস্টিভ্যাল। সারাদিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে জড়ো হয়েছিলেন লিঙ্গ-যৌন সংখ্যালঘু মানুষদের অধিকার আন্দোলনে সামিল মানুষজন এবং একাধিক সংস্থা। লিঙ্গ বৈষম্যের, প্রান্তিক লিঙ্গ-যৌনতার অবদমন ও নির্যাতনের লম্বা ইতিহাস সাহিত্য ও ভাষার মধ্যে দিয়ে যখন যেভাবে প্রকাশ পেয়েছে, অথচ মূলস্রোতের পরিধিতে ব্রাত্য থেকে গেছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, সেই ইতিহাসকে, সেই স্বরকে সামনে নিয়ে আসার প্রচেষ্টায় লেখক-প্রকাশক-পাঠকের মধ্যে কথোপকথনের পরিসর তৈরি করল এই সাহিত্য উৎসব।
প্রথম পর্বে ক্যুইয়ার সাহিত্য প্রকাশের বাধা এবং সম্ভাবনা নিয়ে কথা বললেন সপ্তর্ষি প্রকাশনের সৌরভ মুখোপাধ্যায়, দে’জ পাবলিশিং এর শুভঙ্কর দে এবং স্ত্রী প্রকাশনা সংস্থার মন্দিরা সেন। এর পরের অংশে ট্রান্সজেন্ডার বিল নিয়ে আলোচনায় নিজেদের অভিজ্ঞতা ও অধিকারের লড়াইয়ের কথা ভাগ করে নিলেন লিঙ্গ সাম্য আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী অপর্ণা ব্যানার্জি এবং প্রভাত মজুমদার। তৃতীয় পর্ব ‘যে যেখানে লড়ে যায়, আমাদেরই লড়া’। এই অংশে বাংলাদেশের অলীক থেকে কলকাতার অভিজিৎ মজুমদার, মহম্মদ রেয়াজ থেকে কবি তিস্তা দাস সাহিত্য ও ভাষার মাধ্যমে প্রান্তিক লিঙ্গ-যৌনতার মানুষের উঠে আসা স্বর, সামাজিক বাধা ও লিঙ্গ রাজনীতির বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই কীভাবে রূপ পেয়েছে সেই নিয়েই কথা বললেন। ক্যুইয়ার সাহিত্য বা তার ভাষা বলে আলাদা করে কোনো নির্দিষ্টকরণ করা যায় কি না, কীভাবে লিঙ্গ সাম্যের এই লড়াই সাহিত্য আর ভাষার মধ্যে দিয়ে নিজেকে প্রকাশ করে এসেছে সেই নিয়ে নানান প্রশ্নোত্তরে দর্শকের আসনে বসা পাঠকেরা এবং মঞ্চের লেখক-বক্তারা মত বিনিময় করলেন। এরপরে ক্যুইয়ার পত্রিকা ও অনলাইন মুখপত্রের মধ্যে দিয়ে ৩৭৭ ধারা পরবর্তী লিঙ্গ-সাম্য আন্দোলনের রুটম্যাপ নিয়ে কথা বললেন স্বকন্ঠে-র আকাঙ্খা, বংকিউ-র অরিজিত, মৈত্রীবার্তা-র সুমি দাস এবং ভার্তা-র পক্ষ থেকে পবন ঢল। তবে সারাদিনব্যাপী আলোচনা ও প্রশ্নোত্তরের নিয়মমাফিক গতি অনেকটাই বাঁধনছাড়া হয়ে মুক্তকন্ঠে সাহিত্য উদযাপিত হল সমাপ্তি পর্ব ‘যেমন খুশি বল’ অংশে। নানা বয়সের, সমাজের নানা পরিধি থেকে আসা বিভিন্ন লিঙ্গ-যৌনতা পরিচয়ের কবি-সাহিত্যিকের কণ্ঠ মিলেমিশে গেল লিঙ্গ-সাম্যের জয়গানে। সাহিত্যের জয়গানে।
[ছবি : ফেসবুক; https://www.facebook.com/events/1291775721004889/]
Link: https://ebongalap.org/trans-inclusive-workplace-guideline-and-queer-lit-fest