webzine-top-img
 

অতিমারীতে স্কুলশিক্ষা বিষয়ে আঠারোটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লেখা নিয়ে ‘এবং আলাপ’ ওয়েবজিনের দ্বিতীয় সংখ্যা ‘ইস্কুলে লকডাউন’।

প্রথম ধাপের লকডাউন পর্বে জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০২০-তে আমরা প্রকাশ করেছি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে স্কুলশিক্ষকদের কলমে ইস্কুল, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকসমাজ এবং সার্বিক শিক্ষা-পরিস্থিতির উপরে লকডাউনের বিভিন্ন প্রভাব নিয়ে পরপর দশটি ব্লগ। শুধুমাত্র অনলাইন শিক্ষার ভালোমন্দ নয়, এই সিরিজে শিক্ষকরা লিখেছিলেন আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষিতের নিরিখে শিক্ষার্থীদের ভিন্ন ধরনের সমস্যা নিয়ে, লিখেছিলেন সিলেবাস আর নম্বরের বাইরে ইস্কুলের মস্ত দুনিয়াটা নিয়ে, স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নাবালিকা বিয়ে আর শিশুশ্রমের বিপজ্জনক বৃদ্ধির হার নিয়ে কিম্বা বাড়ির ভেতরে শিশুর মানসিক পরিস্থিতি ও শারীরিক নির্যাতনের দিকগুলি নিয়েও কলম ধরেছিলেন শিক্ষকরা। আর ছাত্রছাত্রীর পাশাপাশি একজন শিক্ষকের আত্মপরিচয়ের যে বিপন্নতা তৈরি করছে এই লকডাউন, যে বিপন্নতা তৈরি হয়েছে ইস্কুলের প্রশাসনিক কর্মী বা ইস্কুলের বাইরে কিন্তু ইস্কুল-নির্ভর জীবিকার বহু মানুষের জীবনে, বারবার উঠে এসেছে সেই কথাও।

কিন্তু আজ ইস্কুল বন্ধ থাকার প্রায় দেড় বছর পর সামগ্রিক পরিস্থিতি কীরকম? এতদিন পরেও সরকারি উদ্যোগে বিকল্প শিক্ষাপদ্ধতির অভাব—কীভাবে মোকাবিলা করছেন শিক্ষকসমাজ? পড়া শেষ হয়নি, নিয়মমাফিক পরীক্ষা হয়নি, বন্ধুদের সাথে দেখা হয়নি, বছরভর স্কুলের জমজমাট খেলাধুলো, নাচ-গান, স্কুলের নানা অনুষ্ঠান কিছুই হয়নি—কেমন আছে ছাত্রছাত্রীরা? ইস্কুলে লকডাউন প্রসঙ্গে এমন অনেকগুলো প্রশ্ন নতুন করে উঠে আসছে, আর এই জরুরি প্রশ্নগুলো নিয়ে আমাদের অনুরোধে আবারও কলম ধরেছেন মূলত নানা জেলার সরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সেই সঙ্গে শহরের দুটি বেসরকারি স্কুলের, গ্রামের একটি মাদ্রাসার ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের একটি আবাসিক স্কুলের লকডাউন মানচিত্রও খানিক ধরা পড়েছে কয়েকটি লেখায়।

শিক্ষাবিদ ও অধ্যাপক সুকান্ত চৌধুরির লেখায় আলোচনা রয়েছে অতিমারীর প্রেক্ষিতে শিশুশিক্ষার বিপর্যয় ও সম্ভাব্য সমাধানসূত্রগুলো নিয়ে। কিছু লেখায় এসেছে প্রথাগত প্রতিষ্ঠানের বাইরে দরদী শিক্ষক বা উদ্যমী স্বেচ্ছাশিক্ষকদের নানা উদ্যোগ, গৃহশিক্ষকতার পরিসরে কীভাবে ছায়া ফেলেছে লকডাউন, সেইসব কথা। শুধু লকডাউন নয়, গত বছর আমফান থেকে এবছরের ইয়াস-এর মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ কীভাবে সরাসরি শিক্ষাক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে, সেই প্রসঙ্গ নিয়ে লিখেছেন নদী-সংলগ্ন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ভুক্তভোগী শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অতিমারীর সময়ে এই রাজ্যে মুখ থুবড়ে পড়া শিক্ষাব্যবস্থার একটা সামগ্রিক অবয়ব তৈরি হতে পারে নানা প্রেক্ষিত থেকে শিক্ষকদের সরাসরি অভিজ্ঞতায় গ্রন্থিত এই লেখাগুলোর ওপরে নির্ভর করে। আর সেই কাঠামোটা ধরে আমরা হয়ত সবাই মিলে চেষ্টা করতে পারি পরিস্থিতির অনুকূলে শিক্ষার একটা সার্বিক পরিকাঠামো নির্মাণের। এই ওয়েবজিনের প্রতিটা লেখাই সেই সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।

674 visits